বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০৭ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
বাংলাদেশের জনগণ কারও দাদাগিরি একদম পছন্দ করে না: গোলাম পরওয়ার ভারতের গণমাধ্যমগুলো যে ভূমিকা নিয়েছে তা দুদেশের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় সহায়ক নয় -পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কসবা প্রেসক্লাব কার্যালয়ের জানালার গ্রীল ভেঙে দিয়েছে দুবৃত্তরা, প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের দাবি সাংবাদিকদের ইমাম প্রি-ক্যাডেট স্কুলের ১৪০ শিক্ষার্থীর পবিত্র কুরআন সবক গ্রহণ কসবায় জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে স্মরণসভা খালেদা জিয়াকে আনতে পেরে আমরা গর্বিত-ড. ইউনূস আজ আল্লামা গোলাম সারোয়ার সাঈদী (র) এর ৫ম ওফাত দিবস কসবায় ১০ হাজার ৬শ ৫০জন প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ শিশু মুনতাহার মরদেহ মিলল পুকুরে কসবায় রাতের আঁধারে চলছিল পাহাড় কাটা
আমাদের কোনো ধর্ম ছিলো না

আমাদের কোনো ধর্ম ছিলো না

নুর কামরুন নাহার।।

প্রাইমারী স্কুলে স্মুতিরেখা ছিলো
আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু।
ক্লাশে পাশাপাশি বসতাম
চুপিচুপি কথা বলায় দুজনে কানমলা
খেয়েছি বহুবার।
প্রাইমারীর বন্ধুরা হারিয়ে গেছে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ।
কিন্তু স্মৃতিরেখা রয়ে গেছে উজ্জ্বল
যতবার শৈশবে যাই স্মৃতিরেখার কাছে যাই।

সুব্রত বড়ুয়া আমাকে বোন ডাকতো
নিয়ে আসতো আমার জন্য মিছরি,
আখরোট,বাদাম আর টফি।
একবার আনলো টুকটুকে একটা লাল কার্ডিগান।
তখন ভীষণ শীত পড়তো আমাদের এ শহরে।
নিমোনিয়া সেরে ওঠা আমার জন্য
ওটা তখন ছিলো মৌলিক চাহিদা
স্নেহের বর্মে, কার্ডিগানের ওমে
কেটেছে আমার পুরো শৈশবের শীতকাল
আম্মা বলতেন- কি সুন্দর, কি নরম, কি ওম!
এত দামী জিনিস আমরা কি কিনতে পারতাম!

হাই স্কুলে আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলো মারিয়া ।
আমাদের সংসার তখন গ্রহণের কাল।
আম্মা বিছানায়, দেয়ালে মাকড়সার জাল
জানালার শিক ধুলোমাখা,চোখে বিষণ্ণ বিকেল আঁকা।
আমার এক মাথা কালো চুল রুক্ষ, তেলহীন ।
কতদিন মারিয়া বিলি কেটেছে আমার চুলে
সার্টিন ফিতায় বেঁধেছে দুই বেনী।
বড়দিনের উপহার করেছে ভাগাভাগি।
গভীর কালো চোখের মারিয়া
দাঁড়িয়েছিলো অমাবস্যার দিনে মা মেরি হয়ে
ওর চোখে বন্ধুত্বের চেয়ে বেশি ছিলো মাতৃস্নেহ।

অংকে আজীবন কাচা আমি
পরীক্ষায় অংক দেখতাম শিবানীর খাতায়
মিনা বসাক আমাকে গান শুনাতো
খালি গলার কীর্তন ! ওর কাছেই শিখেছিলাম
গানের মধ্যে অসীমের নিবেদন।
কলেজে রীতা হালদার আমাকে লিখে দিত
পুজোয় ছাড়া মান্নাদের নতুন গান ।
কলেজের করিডোরে নিবিষ্ট মনে
দুজনে হাত ধরে পাইচারি,
আত্মস্থ করে নেয়া গানের গভীর বাণী ।

এসএসসি পরীক্ষার আগে
অংক শেখাতে আসলেন অসীম দা
মাত্র দুইমাস অংক শেখানো।
অথচ কি গভীরভাবে শিখিয়েছিলেন জীবন।
তার চোখের দীপ্তি জানিয়েছিলো
স্বপ্ন দেখার অধিকার আমারও আছে ।
দাদা গেছেন মাত্র দুইমাসের বন্ধনে
কিন্তু থেকে গেছেন আমাদের সংসারে।
আমাদের বড়ভেইয়ের ছেলের নাম ‘অসীম’

চাকরিতে যখন আমি নতুন
তখন অড্রি কুইয়ার প্রায় যাবার সময়।
বিয়ে করার সময় হয়নি তার।
ভাইবোন, বিধবা মা ইত্যকার নানা কিছু
যৌথহাড়ি,অথৈ সমূদ্রের কূল ছিলো একসময়
এখন বোনপুতের কাছে আশ্রয়
কে আর দেখে তাকে ভালো চোখে
সব স্বতস্ত্র সংসার! আশ্রয়ে নিরাশ্রয়!
প্রতিদিন অড্রি কুইয়া বসে থাকে আমার কাছে
এখানেই নাকি শান্ত জলাশয়!

আমি জানি স্মৃতিরেখা আজও আমাকে খোঁজে।
সুব্রতদা এখনও আমার উষ্ণতার জন্য প্রার্থনা করে
অসীমদা এখনও আমাকে হাঁটিয়ে নিয়ে যায় শুদ্ধতার পথে।
রীতা হালদার জীবন করিডোরে হাটে, গানের বাণী নিয়ে
শিবানী এখনও অংক কষে আমাকে দেখাবে বলে
আমাকে শোনাবে বলে কীর্তন গায় মীনা বসাক।
অড্রি কুইয়া এখনও আমাকেই শান্ত জলাশয় ভাবে।
মারিয়া আমাকে বেঁধে রাখে শাটিনের ফিতায়

আমাদের কোনো ধর্ম নেই, জাত নেই, শ্রেণি নেই
আমরা মানুষ,
আমরা ভালোবেসেছি মানুষের অভিধায়।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




raytahost-demo
© All rights reserved © 2019
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD