আবুল খায়ের স্বপন।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউউনিয়ন পরিষদের(ইউপি) চেয়ারম্যান এস.এম.মান্নান জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে পাঁচ ব্যক্তির কাছ থেকে বিদেশে লোক পাঠানোর নামে ১৮ লাখ টাকা আত্নসাত করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কসবা পৌর শহরের নতুন বাজার এলাকার স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে ভূক্তভোগী
ব্যক্তিরা এ অভিযোগ করেছেন। ভূক্তভোগীরা টাকা ফেরতসহ জান মালের নিরাপত্তা চেয়ে স্থানীয় সাংসদ আইন মন্ত্রী আনিসুল হকের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য পাঠ করেন কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের চাপিয়া গ্রামের মৃত চান মিয়ার ছেলে মো. আবদুল হক। সংবাদ সম্মেলনের তিনি বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান এস.এম. মান্নান জাাহাঙ্গীর পেশাগত ভাবে লাইসেন্সধারী একজন আদম ব্যবসায়ী। তাঁর সাথে এক আত্নীয়ের মাধ্যমে পরিচয় হয়। ২০০৫ সালে মান্নান জাহাঙ্গীর জানিয়েছেন তাঁর কাছে ইরাকের ভিসা আছে। তিনি তঁার মাধ্যমে লোক পাঠাতে পারবেন। প্রত্যেককে তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা করে দিতে হবে। ওই হিসাবে তাঁর মাধ্যমে চকচন্দ্রপুর গ্রামের বাসু মিয়া, দারু মিয়া, টিঘরিয়া গ্রামের শিশু মিয়া, গুরুরিয়ারুপ গ্রামের হাসেম মিয়া ও চাপিয়া গ্রামের আলমগীরকে ইরাক পাঠানোর জন্য ২০০৫ সালে ৫ অক্টোবর পঁাচজনের ১৭ লাখ টাকা মান্নান জাহাঙ্গীরকে দিয়েছেন। এ সময় তাদের কাছে পাসপোট নিয়েছেন। ওই বছরের ২০ ডিসেম্বর আরো আরো এক লাখ টাকা দিয়েছেন। কিন্তু ওই লোকজনকে ইরাক পাঠায়নি।
এমনকি টাকাও ফেরত দেয়নি। পরে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য বার বার তাগাদা দিলেও তিনি টাকা ফেরত দেয়নি।
আবদুল হক আরো বলেন, টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য বললেও তাকে বিভিন্ন সময় হুমকি দুমকি দিয়ে আসছে। এমনকি তাকে মেরে ফেলারও হুমকি দিয়ে আসছে। দীর্ঘদিন পরে মামলা কেন করলেন সাংবদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর ইরাক চলে গিয়েছিলেন। এ সময় তিনিও দুঘর্টনায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন। পরে বার বার তাগাদা দিলেও তিনি টাকা ফেরত দেয়। তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্যাট আদালতে প্রতারণামুলক অর্থ আত্নসাতের অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেছি। মামলা নং সিআর ০৫/২০২১। তিনি বলেন, মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, গুরুয়িারুপ গ্রামের সিরাজ মিয়া ও চকচন্দ্রপুর গ্রামের দারু মিয়ার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। মনোয়ারা বেগম বলেন, সহায় সম্ভল বলতে কিছুই নেই। ভিটা বাড়ি বিক্রি করে স্বামীকে বিদেশ পাঠানোর জন্য আবদুল হকের মাধ্যমে এস.এম মান্নান জাহাঙ্গীর কাছে টাকা দিয়েছি। বিদেশও পাঠায়নি, টাকাও ফেরত দেয়নি। এ কথা বলেই কাদঁতে শুরু করেন। সিরাজ মিয়া বলেন, ভাগিনাকে বিদেশ পাঠানোর জন্য টাকা দিয়েছিলাম। বিদেশও পাঠায়নি, টাকাও ফেরত পায়নি। গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস.এম মান্নান জাহাঙ্গীর মুঠোফোনে বলেন, ২০০৪ থেকে ২০০৫ সালে আবদুল হক এর সাথে আমার এক বছর সাথে কিছু ব্যবসা ছিল। ১৬ বছর ধরে তাঁর সাথে আমার কোন লেন-দেন নাই।
আবদুল হক দেনার দায়ে তঁার নামে ১৫/১৬টি মামলা রয়েছে। জেল খেটেছে। ১৫-১৬ বছর ধরে আমার বিরুদ্ধে কোন মামলা মোকদ্দমা, জিডি বা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে কোন অভিযোগ করে নাই। বর্তমানে আমার কাছে কোন টাকা পয়সাও পাবে না। হঠাৎ করে আমার নামে মিথ্যা মামলা করেছে। একটি মহল রাজনীতি ফায়দা লোটের জন্য আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
Leave a Reply