আবুল খায়ের স্বপন কসবা, (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকে
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ ধর্মের নামে সহিংসতা চাই না, তাদের চরিত্রেও এটি নেই। যারা পাকিস্তান আমলে ছিলেন তাদের চরিত্রে এটি ছিল। যারা ধর্মের নামে সহিংসতা করে তারা বাংলাদেশের নাগরিক নয়, তারা পাকিস্তানের নাগরিক। আজ শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা মানুষে-মানুষে জোরালো বন্ধন, ধর্মীয় সম্প্রীতির গভীর সম্পর্ক সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন। জননেত্রীর সেই প্রচেষ্টাকে ব্যহৃত করার জন্য ব্যর্থ চেষ্টা করা হচ্ছে। সেই ব্যর্থ চেষ্টাকে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিহত ও পরাজিত করবে।
আইন মন্ত্রী বলেন, আমরা কাউকে কোন ধর্মের ভিত্তিতে হিসাব করি না, হিসাব করি আমরা প্রত্যেকে মানুষ। যতক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ এবং বাংলাদেশ জীবিত থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিও জীবিত থাকবে। যে কুচক্রী মহল তাদের নিজস্ব এবং ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য সহিংসতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল্। কিন্তু সেটি জনগণ সফল করতে দেয়নি। এ বছর দূগার্ পূজায় কসবা-আখাউড়ায় ৬৭টি মন্ডপে শান্তিপূর্ণ ভাবে পূজাঁ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু কোনো অঘটন ঘটেনি।
আইনমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কখনোই সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেবেনা। বঙ্গবন্ধু যে সংবিধান আমাদেরকে উপহার দিয়েছিলেন, সেই সংবিধানের কথাগুলো আমরা অক্ষরে অক্ষরে পালন করব
মন্ত্রী বলেন, ভারত বাংলাদেশ বন্ধু প্রতীম রাস্ট্র। ১৯৭১ সনের স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি সরণাথর্ী ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল এর মধ্যে কসবা-আখাউড়া সীমান্ত দিয়েই ভারতে গিয়ে ছিল ৩৫ লক্ষ শরণার্থী। ভারত তাদেরকে খাদ্য-আশ্রয় দিয়ে ৯ মাস লালন পালন করেছে। মন্ত্রী বলেন, ভারতের সৈন্যরা নিজের প্রাণ দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনে সহযোগিতা করেছেন।
কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য ভারত সরকারের দেওয়া উপহারের একটি লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর উপলক্ষে কসবা উপজেলা প্রশাসন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় ভারতের প্রয়োজনে বাংলাদেশও পাশে দাঁড়িয়েছিল। বাংলাদেশের বন্ধু হিসেবে জনগণের কল্যাণের জন্য ভারত সামথর্য অনুযায়ী বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা ঘনিষ্ঠ আত্মীয় এবং আজীবন বন্ধু। ভারত সরকারের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মহোদয়ের প্রতিশ্রুতির অংশ হিসাবে এ অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মাসুদ বিন মোমেন, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন মুহাম্মদ একরাম উল্লাহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান, কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রাশেদুল কাউছার ভূইয়া, কসবা পৌরসভার মেয়র মো. এমরান উদ্দিন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ উল আলম।
অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগের দলীয় নেতা-কর্মী, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সরকারি কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমেরা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।