মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০১:০১ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
জিআই স্বীকৃতি পেল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখি

জিআই স্বীকৃতি পেল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখি

নিউজ ডেস্ক।।

২৪ সেপ্টেম্বর ডিপিডিটি ছানামুখী জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ার বিষয়টি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনকে নিশ্চিত করেছে।

চতুর্ভুজ আকারের ছোট ছোট টুকরা মিষ্টি। ওপরের শুকনা অংশে জমাটবাঁধা চিনির আবরণ। ভেতরের পুরোটাই দুধের নরম ছানা। দেশি গরুর দুধ থেকে ছানা করে তা দিয়ে তৈরি এই মিষ্টান্নের নাম ছানামুখী। এটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শত বছরের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন। এর সুনাম সারা দেশে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাড়া দেশের আর কোথাও ছানামুখী তৈরি হয় না। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য যে আবেদন করা হয়েছে, সেখানেই রয়েছে এ মিষ্টান্নের এমন জিবে জল আনা বর্ণনা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই মিষ্টান্ন জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ডিপিডিটি কোনো পণ্যের জিআই স্বীকৃতি দেয়। কোনো একটি দেশের নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মাটি, পানি, আবহাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সেখানকার জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাহলে সেটিকে সেই দেশের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। কোনো একটি পণ্য চেনার জন্য জিআই স্বীকৃতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করতে দেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের জিআই স্বীকৃতি যত দ্রুত করা যায়, তত ভালো।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২৪ সেপ্টেম্বর ডিপিডিটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ার বিষয়টি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনকে নিশ্চিত করেছে। ডিপিডিটিতে ছানামুখীর জিআই নম্বর ৪১।

ছানামুখী জিআই স্বীকৃতি পাওয়ায় খুশি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মিষ্টি ব্যবসায়ীরা ‘ছানামুখী জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া মানেই জেলার জন্য সম্মানজনক সংবাদ। আমরা খুশি। অনেক দিন ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম, কিন্তু দায়িত্ব না নেওয়ার কেউ না থাকায় বিলম্ব হয়েছে। দেশের বাইরে নিয়মিত ছানামুখী যাচ্ছে।’

ছানামুখীর ইতিহাস

ছানামুখী মিষ্টির রয়েছে পুরোনো ইতিহাস। মানুষের মুখে মুখে প্রচারিত যে ইতিহাস, তাতে এই মিষ্টি যিনি প্রথম তৈরি করেছিলেন, তাঁর নাম মহাদেব পাঁড়ে। বাড়ি তাঁর ভারতের কাশীধামে। বড় ভাই দুর্গাপ্রসাদের হাত ধরে প্রায় শতবর্ষ আগে তিনি কলকাতায় চলে আসেন। বড় ভাইয়ের মিষ্টির দোকানে কাজ শুরু করেন মহাদেব। দুর্গাপ্রসাদের মৃত্যুর পর আশ্রয়হীন হয়ে মহাদেব নিরুদ্দেশে বেরিয়ে পড়েন। ঘুরতে ঘুরতে একসময় চলে আসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে। বর্তমান জেলা শহরের মেড্ডায় তখন শিবরাম মোদকের একটি মিষ্টির দোকান ছিল। তিনি নিজের দোকানে মহাদেবকে আশ্রয় দেন। মহাদেব আসার পর শিবরামের মিষ্টির সুনাম ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। মৃত্যুর সময় শিবরাম মিষ্টির দোকানটি মহাদেবকে দিয়ে যান। মহাদেব দুটি মিষ্টি বানাতেন। একটি লেডি ক্যানিং বা লেডি ক্যানি, অন্যটি ছানামুখী।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




raytahost-demo
© All rights reserved © 2019
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD