স্বপ কুমার রায় খুলনা ব্যুরো প্রধান
স্বাধীনতার ৪৯ বছরে নির্মিত হয়েছে খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলার বাজুয়া বধ্যভূমির স্মৃতিসৌধ। যাদের রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে দেশ শত্রুমুক্ত হল, , বাজুয়াতে যারা দেশের জন্য প্রাণ দিল তাদের স্মরনে স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর সরকারী পৃষ্টোপোষকতায় একটা স্মৃতিসৌধ নির্মাণ হয়েছে । আগামী প্রজন্ম তাদের কথা স্মরণে রাখবে? ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হলে বাগেরহাট জেলার ভাগা, পিপুল বুনিয়া, নদীরহুলা, গোনাবেলাই থেকে শত শত সাধারণ মানুষ রাজাকারদের অত্যাচারে পশুর নদী পার হয়ে ভারতে যাওয়ার উদ্দেশে বাজুয়া স্কুলে আশ্রয় নেন। তাদের সঙ্গে প্রচুর সোনা-গহনা এবং নগদ অর্থ ছিল। খবর পেয়ে পাকসেনাদের দালাল যার নামের অদ্যাক্ষর ‘ল’ আশ্রয় নেয়া শরণার্থীদের সঙ্গে এক জরুরি সভা করে বলে, তোমাদের কোনো ভয় নেই তোমরা এখানে থাক আমি তোমাদের সহায়তা করব। এ কথা বিশ্বাস করে শরণার্থীরা স্কুলে অবস্থান করতে থাকে। অতঃপর লাল মিঞা পাকসেনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের হত্যা করতে সহায়তা করে। ১৯৭১ সালের ১১ মে বাংলা ২৭ বৈশাখ বুধবার। দুপুর আনুমানিক ২টা সবাই স্নান সেরে দুপুরের খাওয়া কেবল শুরু করেছে হঠাৎ গানবোর্ড থামিয়ে পাকসেনারা গুলিবর্ষণ করে অসহায় নিরীহ শরণার্থীদের ওপর। শরণার্থী এবং স্থানীয় বাজুয়া বাজারের ৩ জনসহ শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয় সেদিন। সঙ্গে সঙ্গে লুট করা হয় তাদের কাছে থাকা সব সম্পদ। আর তখন থেকেই বধ্যভূমিটি অরক্ষিত অবস্থায় পড়েছিল। স্থানীয় কিছু যুবক উদ্যোগ নিয়ে বধ্যভূমিটিতে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ এবং দেশের অন্য শহীদদের সঙ্গে বাজুয়ার শহীদদের স্মরণ করার জন্য বধ্যভূমিটি রক্ষার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে কথা হয় স্মৃতিসৌধ নির্মাণ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক অসিত সরকারের সঙ্গে। তিনি বলেন, স্থানীয় যতীন্দ্র নাথ গাইন, কালিপদ শীল, বিষ্ণুপদ রায়, সুভাষ গাইন এবং ভাগার প্রত্যক্ষদর্শী প্রয়াত অমল মজুমদারের কাছ থেকে এ বধ্যভূমির ইতিহাস সংগ্রহ করেছেন। তিনি বলেন, সরকারি সহায়তায় স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে। তিনি জানান, সাবেক সংসদ সদস্য ননীগোপাল মণ্ডল ২০১৩ সালের ১১ মে স্মৃতিসৌধের উদ্বোধন এবং ৩৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করেন। তিনি আরও জানান, তিনি নিজে ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন এবং তার বন্ধুদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ চলছে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য।
অতপর নির্মিত স্মৃতিসৌধে আজ ২৫ মার্চ
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ১ মিনিটে জাতীয় গনহত্যা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা স্মৃতিসৌধ এর আহবাহক অধ্যাপক অসিত সরকারে সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্হিত ছিলেন খুলনা -১আসনের সাবেক সংসদ সদস্য খুলনা জেলা কমিটির সদস্য ননীগোপাল মন্ডল,অ্যাডঃজিএম কামরুজামান,লাউডোব ইউনিয়ন পরিষদের বিনা পতিদদ্বিতায় নির্বাচিত চেয়ারম্যান শেখযুবরাজ,বাজুয় ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ মনোনিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মানষ রায়,সাবেক চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ গাইন,শহীদ পরিবারের সন্তান মলয় সামহা, লাউডোব ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি তপন রায়,অধ্যাপক ধুব্রশংকর রায়, অচিন্ত সাহা,অশোক দাস সাংবাদিক তুষার দাস। এসময় শহীদদের উদ্যেশে মোমবাতী প্রজোলন করা হয় এবং প্রোজাক্টটারের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধর চিত্র প্রদাশন করা হয়।
Leave a Reply