ডেস্ক রিপোর্ট
ছবিঃ সংগৃহীত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সড়ক দুর্ঘটনার জন্য বেপরোয়া গতিতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে মোটরযান চলাচল দায়ী। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত-নিহতের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন ও আধুনিকায়নসহ নানা কার্যক্রম গ্রহণ করেছে সরকার।
শুক্রবার (২২ অক্টোবর) ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস-২০২১’ উপলক্ষে এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস-২০২১’ পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘গতিসীমা মেনে চলি, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করি’ যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।
স্বাধীনতার পূর্বে এ দেশে উল্লেখযোগ্য কোনো সড়ক নেটওয়ার্ক ছিল না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে একটি আধুনিক সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তার সরকার পরিকল্পনা কমিশন গঠন এবং প্রথম পঞ্চমবার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। জাতির পিতার নির্দেশিত পথ পরিক্রমার ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগ সরকার একটি আধুনিক ও যুগোপযোগী সড়ক ও মহাসড়ক অবকাঠামো নির্মাণ ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্নমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সড়ককে নিরাপদ করতে এবং সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আমাদের সরকার সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন ও আধুনিকায়নসহ নানাবিধ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। আমাদের সরকারের সময় মহাসড়ক ২২ হাজার ৪২৮ কিলোমিটারে উন্নীত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৩২ কিলোমিটার মহাসড়ক ৪-লেন ও তদূর্ধ্ব লেনে উন্নীতকরণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৬৪৭ কিলোমিটার মহাসড়ক ৬-লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলমান রয়েছে। সমীক্ষা প্রকল্পের মাধ্যমে ১ হাজার ৭৫৩ কিলোমিটার মহাসড়ক ৬-লেনে উন্নীতকরণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা এবং পূর্ণাঙ্গ সমীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং ৫৯০ কিলোমিটারের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দেশে প্রথমবারের মতো নির্মিত হয়েছে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে। যানজটবিহীন যাতায়াত ব্যবস্থা ও দ্রুত যোগাযোগের সুবিধার্থে মেট্রোরেল, বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লাইন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ফ্লাইওভার, ওভারপাস-আন্ডারপাস, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ, পুনর্নির্মাণ এবং বিভিন্ন মহাসড়কের বাঁক সরলীকরণ, মজবুতীকরণ ও প্রশস্তকরণের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে এবং বেশকিছু কাজ চলমান রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে প্রথম বারের মতো জাতীয় মহাসড়কের ৪টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ট্রাক চালকদের জন্য বিশ্রামাগার নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২টি বিশ্রামাগারের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পথে এবং অবশিষ্ট ২টির নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
দক্ষ গাড়িচালক সৃষ্টির লক্ষ্যে ২৭ হাজার ৬৫৫ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিআরটিসি তাদের রুটিন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রতিবছর দুই হাজার গাড়িচালককে প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নকালে বিআরটিএ পেশাদার গাড়িচালকদের জন্য আবশ্যিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আওতায় নিয়মিত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
২০২০-২১ অর্থবছরে এই কর্মসূচির আওতায় ৭৬ হাজার ৮৮ জন পেশাজীবী গাড়িচালককে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
Leave a Reply