বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:২৪ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
বাংলাদেশের জনগণ কারও দাদাগিরি একদম পছন্দ করে না: গোলাম পরওয়ার ভারতের গণমাধ্যমগুলো যে ভূমিকা নিয়েছে তা দুদেশের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় সহায়ক নয় -পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কসবা প্রেসক্লাব কার্যালয়ের জানালার গ্রীল ভেঙে দিয়েছে দুবৃত্তরা, প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের দাবি সাংবাদিকদের ইমাম প্রি-ক্যাডেট স্কুলের ১৪০ শিক্ষার্থীর পবিত্র কুরআন সবক গ্রহণ কসবায় জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে স্মরণসভা খালেদা জিয়াকে আনতে পেরে আমরা গর্বিত-ড. ইউনূস আজ আল্লামা গোলাম সারোয়ার সাঈদী (র) এর ৫ম ওফাত দিবস কসবায় ১০ হাজার ৬শ ৫০জন প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ শিশু মুনতাহার মরদেহ মিলল পুকুরে কসবায় রাতের আঁধারে চলছিল পাহাড় কাটা
:সুরক্ষা বিধিতেই কাটুক দীপাবলি ও কালী পূজা

:সুরক্ষা বিধিতেই কাটুক দীপাবলি ও কালী পূজা

পাভেল আমান।।
উৎসব মুখর বাঙালি জাতির কাছে আজ পুজো যেন এক চিরায়ত আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে। সারাবছরের দুঃখ জ্বালা বেদনা অনুতাপ বিরহ ব্যথা জীর্ণতা মলিনতা সব যেন পুজোর আগমনে এক নিমেষে বিলীন হয়ে যায়। দুর্গাপূজোর পরে আবারো হাজির কালীপুজো ও আলোর উৎসব দীপাবলি।বাঙালির শারদ উৎসব দূর্গা ও লক্ষ্মী পূজা শেষে সনাতন হিন্দু ধর্ম বিশ্বাসী সকলের দুয়ারে আজ হাজির শ্যামা পূজা বা কালী পূজা। আজ উৎসাহ উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মাধ্যমে শ্যামা পূজা পালণ করবেন সনাতন ধর্ম বিশ্বাসীরা। দ্বিতীয় বৃহত্তম এই ধর্মীয় উৎসবটি তাদের কাছে কালী পূজা নামেও পরিচিত। একইসঙ্গে আজ ঘরে ঘরে উদযাপিত হবে দীপাবলী উৎসব।কার্তিক মাসের অমাবশ্যা তিথিতে সাধারণত শ্যামা পূজা বা কালী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। পূরাণ
মতে, কালী দেবী দুর্গারই আরেকটি শক্তি। সংস্কৃত ভাষার ‘কাল’ শব্দ থেকে কালী নামের উৎপত্তি। কালীপূজা হচ্ছে শক্তির পূজা। জগতের সকল অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভশক্তির বিজয়। কালী দেবী তার ভক্তদের কাছে ‘শ্যামা’, ‘আদ্য মা’, ‘তারা মা’, চামুন্ডি’, ‘ভদ্রকালী’, ‘দেবী মহামায়া’সহ বিভিন্ন নামে পরিচিত।
কালীপূজার দিন সনাতন ধর্মের অনুসারীরা সন্ধ্যায় তাদের বাড়িতে ও শ্মশানে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে স্বর্গীয় পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের স্মরণ করেন। একে বলা হয় দীপাবলী।দুর্গাপূজার মতো কালীপূজাতেও গৃহে বা মণ্ডপে মৃন্ময়ী প্রতিমা নির্মাণ করে পূজা করা হয়। মন্দিরে বা গৃহে প্রতিষ্ঠিত প্রস্তরময়ী বা ধাতুপ্রতিমাতেও কালীপূজা করা হয়। মধ্যরাত্রে তান্ত্রিক পদ্ধতিতে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। তবে গৃহস্থ বাড়িতে সাধারণত অতান্ত্রিক ব্রাহ্মণ্যমতে আদ্যাশক্তি কালীর রূপে কালীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়।কালীর আরেক নাম শ্যামা। শ্যামা বা কালীপূজার সঙ্গে দীপাবলির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। কালীপূজার দিনই দীপাবলি উৎসব পালন করা হয়। দীপাবলি বা দেওয়ালি সনাতনধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় মহোৎসব। এটি দেওয়ালি, দীপান্বিতা, দীপালিকা, সুখরাত্রি, সুখসুপ্তিকা এবং যক্ষরাত্রি নামেও অভিহিত হয়। এই দিন আলোকসজ্জা ও বাজি পোড়ানো হয়। কেউ কেউ রাত্রিতে নিজগৃহে দরজা-জানালায় মোমবাতি জ্বালায়।দীপাবলি মানে আলোর উৎসব। আনন্দের উৎসব মন্দের বিরুদ্ধে ভালোর জয়কে উদযাপন করা। আলোকসজ্জার এই দিবস অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলো জ্বালার দিন। নিজের ভেতরের বাহিরের সকল অজ্ঞতা ও তমকে দীপশিখায় বিদূরিত করার দিন। প্রেম-প্রীতি-ভালোবাসার চিরন্তন শিখা প্রজ্বলিত করার দিন। দেশ থেকে দেশে, অঞ্চল থেকে অঞ্চলে- এই দিনের মাহাত্ম্য ভিন্ন ভিন্ন; তবু মূল কথা এক। আর আধ্যাত্মিকতার গভীর দর্শনে এই দিন- আত্মাকে প্রজ্বলিত করে পরিশুদ্ধ করে সেই পরমব্রহ্মে লীন হওয়ার দিন।কালীপূজাই বলি, দ্বীপাবলিই বলি কিংবা অন্য যে পূজাই বলি না কেন, এসব পূজা ও দেবদেবীর আখ্যানের মূলে রয়েছে, অশুভের বিরুদ্ধে শুভশক্তির লড়াই বা বিকাশ। সেই দিক থেকে ধর্ম পালন বা সবাইকে নিয়ে অশুভের বিরুদ্ধে লড়াই- তা কিন্তু নিরন্তর চলছেই। এই লড়াই যেন শেষ হবার নয়। প্রতিটা পুজোয় আমাদের মনুষ্যত্ব বিবেক কে জাগ্রত করে। সেখানে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে দুর্বার সংগ্রামের কাহিনী। আমরা পূজার্চনা টাকে শুধুমাত্র বাহ্যিক ভাবে না দেখে তার অন্তর্নিহিত তাৎপর্য গুরুত্ব তাকে উপলব্ধি করি। সমস্ত ধর্মের মূল কথাই মানুষকে ভালোবাসা। কোন ধর্মই অন্য ধর্মকে ঘৃণা, বিদ্বেষ করতে শেখায় না। সব ধর্মের মূল কথাই মানবতা। আজকে যখন চারিদিকে ধর্মীয় উন্মাদনা, অস্থিরতা, হিংসা, হানাহানি তখন আমরা ভেবে অবাক হই আমরা কি প্রকৃত ধর্মের অন্তর্নিহিত অর্থ তাকে মনে লালন করতে পেরেছি আমরা শুধুমাত্র ধর্মটাকে বাহ্যিকভাবে পালন করে এসেছি। আমরা যেদিন ধর্মকে মনেপ্রাণে আঁকড়ে ধরে মানুষকে ভালবাসতে শিখবো, অপর ধর্মকে শ্রদ্ধা ভক্তি করব,সর্বোপরি মানবসেবাই নিজেদের নিয়ে যেতে করবো সেদিনই আমাদের পূজার্চনা ধর্মীয় বিশ্বাস সার্থক হয়ে উঠবে।পরিশেষে সংক্রমনের দিকে নজর দিয়ে আমরা আসন্ন কালীপূজা দীপাবলি ভাইফোঁটা ও ছট পুজোতে নিজেদের সংযত, সতর্ক, সাবধানী ও সচেতন করে তুলি ও প্রাত্যহিক জীবনে সুরক্ষা বিধির সুষ্ঠুভাবে মেনে চলি। পরিশেষে প্রশাসনকে আবারো তার দায়িত্ব পালন করতে হবে সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা বিধি প্রতিপদে মানার জন্য। প্রশাসনের সক্রিয়তা, তৎপরতা, কার্যকরী পদক্ষেপ ও নিরবচ্ছিন্ন তদারকিতেই জনতার বিধি নিষেধ মেনে চলার আবশ্যিকতা এবং সর্বোপরি কোভিডের সংক্রমণের লাগাম রাস টানা। আমরা প্রত্যেকেই কালীপুজো দীপাবলি ছট পুজোর আনন্দ উচ্ছ্বাস টাকে সম্পূর্ণ কোভিড বিধির মধ্যেই মননে উপলব্ধ পালন করি।

পাভেল আমান- হরিহর পাড়া- মুর্শিদাবাদ -পশ্চিমবঙ্গ

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




raytahost-demo
© All rights reserved © 2019
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD