বাকের সরকার বাবর।।
গত শনিবার (০২ নভেম্বর) লেবাননের বৈরুতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত বাংলাদেশী রেমিট্যান্স যোদ্ধা নিজাম উদ্দিন এর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার খাড়েরা গ্রামে চলছে শোকের মাতম। তাঁর মৃত্যুর খবর শুনে এলাকাবাসী ও আত্মীয়স্বজন বাড়িতে ভিড় জমান। পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য পরিবার ও এলাকাবাসী জোর দাবি জানান।
রোববার সরেজমিনে তাঁর বাড়িতে গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার খাড়েরা গ্রামের মৃত আব্দুল কুদ্দুস ও মৃত আনোয়ারা বেগম দম্পতির ২ ছেলে ৩ মেয়ের মধ্যে সবার ছোট ছিল মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন (৩২)। বাবার মৃত্যুর পর অভাব অনটনের সংসারে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা আনতে ৭ লাখ টাকা দেনা করে গত ১২ বছর আগে লেবাননে পাড়ি জমান নিজাম। সেখানে যাওয়ার পর ভাল কাজ না পাওয়ায় তিনি আশানুরূপ উপার্জন করতে পারেননি। তবে ১২ বছরের প্রবাস জীবনে পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা আনতে না পারলেও মায়ের থাকার জন্য একটি টিনের ঘর বানিয়েছিলেন। ঘর বানানোর ৬ মাস পরেই মারা যান মা আনোয়ারা বেগম।
নিজামের বড় বোন সায়েরা বেগম জানান, বিদেশে গিয়ে তার ভাই ভাল অবস্থান তৈরী করতে পারেনি। দেশে আসার কথা বললে আসা-যাওয়ার খরচের কথা চিন্তা করে গত ১২ বছরে একবারও দেশে আসেনি। এবার দেশে আসার চিন্তা ভাবনা ছিল একথা বলেই তিনি হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন। তিনি বলেন, রাতে তার বন্ধুর মাধ্যমে ভাইয়ের মৃত্যুর খবর জানতে পেরে আমাদের সব স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যায়। এখন আমরা শেষ বারের মত তার মুখটি একবার দেখতে চাই। তিনি তার ভাইয়ের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার জোর দাবি জানান।
কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার জানন, ইতোমধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। বৈরুতের পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেই নিজামের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
উল্লেখ্য গতকাল শনিবার (০২ নভেম্বর) বিকেল ৩ টা ২৩ মিনিটে লেবাননের বৈরুতের হাজমিয়ে এলাকায় কর্মস্থলে যাওয়ার পথে (একটি কফি শপে অবস্থানকালে) ব্রাহ্মনবাড়িয়ার কসবা উপজেলার খাড়েরা গ্রামের মৃত আব্দুল কুদ্দুস এর ছেলে মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন ইসরায়েলি বিমান হামলায় ঘটনাস্থলেই মারা যান।
Leave a Reply