মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ০৩:১৯ পূর্বাহ্ন

অকালে বিদায় ডাক্তার সানিরার

অকালে বিদায় ডাক্তার সানিরার

বাহাদুর আলম,ব্রাহ্মণবাড়িয়া:
অকালেই চলে গেলেন ডাক্তার সানিরা হক। জীবন নিয়ে নানা স্বপ্ন পূরনের আগেই বিয়ের ৫ বছরের মাথায় মরনব্যাধি কেড়ে নিলো সম্ভাবনাময় এই চিকিৎসকের জীবন। প্রায় ৫ মাস ক্যান্সারের সাথে লড়াই করে হার মানলেন। ৩রা ডিসেম্বর বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে ঢাকায় বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন সানিরা। এই হাসপাতালেরই চিকিৎসক ছিলেন তিনি। বিএডিসির অবসরপ্রাপ্ত আঞ্চলিক হিসেব নিয়ন্ত্রক ফজলুল হক খান দুলাল ও তাহমীনা বেগম লাভলীর দুই কন্যা সন্তানের মধ্যে বড় সানিরা। সানিরার একমাত্র মামা জাবেদ রহিম বিজন দৈনিক মানবজমিনের ষ্টাফ রিপোর্টার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক।
সানিরার জন্ম ১৯৮৮ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে। ঢাকার ভিকারুন নূন নিসা স্কুল এন্ড কলেজ থেকে স্কুল ও কলেজ জীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমুদিনী উইম্যান্স মেডিকেল কলেজে। ২০১৫ সালে ডাক্তারী পাশ করেন। এরপরই বিয়ে হয় তার। স্বামী ডাক্তার নাসিম মোশারফ হোসেন রাজিব । বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে কর্মরত। তাদের সুখের সংসারের বয়স হয়েছিলো মাত্র ৫ বছর। শুনা হয়নি মা ডাকও।
পারিবার সুত্র জানায়- জুন মাসের শেষে সানিরার ওভারীতে প্রথম টিউমারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। যেখানে ক্যান্সারের জীবানু মিলে। সেখান থেকে লিবারে ক্যান্সারের বিস্তার ঘটে। ক্রমেই জটিল হয়ে উঠে পরিস্তিতি। করোনার কারনে চিকিৎসাও ছিলো কষ্টসাধ্য। শুরুতে ভারতের মুম্বাইয়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা বাদ দিতে হয় ভিসা ও ফ্লাইট বন্ধ থাকায়। ঢাকাতে শুরু হয় চিকিৎসা। এরমধ্যে করোনার সাথেও যুদ্ধ করতে হয় তাকে। সানিরাকে বাচিয়ে রাখার এক প্রানান্ত লড়াইয়ে অবতীর্ন হন তার ডাক্তার স্বামী,পরিবারের সদস্যরা। গত ৯ ই নভেম্বর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মুম্বাই। সেখান থেকে ২১ শে নবেম্বর ঢাকায় ফিরে স্বামীগৃহে ২ দিন থেকে চলে আসেন পিতামাতার কাছে। পরিবারের সাথে জীবনের শেষ ৪/৫ দিন অতিবাহিত করেন। ১ লা ডিসেম্বর শরীরের অবস্থায় তারতম্য হলে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। পরদিন দুপুরের পর থেকে দ্রুতই অবনতি ঘটতে থাকে তার অবস্থার। সিসিইউ থেকে লাইফ সাপোর্টে। কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে হাসিমাখা মুখে চেপে বসে ভীষন যন্ত্রনা আর কষ্ট। বেচে থাকার সে কি প্রানান্ত চেষ্টা। অন্তিম এ লড়াইয়ে হেরে যান সানিরা। সবাইকে কঁাদিয়ে ঢলে পড়েন মৃতৃ্যর কোলে। ৩২ বছর বয়সী সানিরার মৃত্যু কাদিয়েছে হাজারো মানুষকে। আত্বীয় পরিজন সবাই ভেংগে পড়েছেন শোকে। শোকে পাথর এখন পরিবারের সদস্যরা।
৩রা ডিসেম্বর বাদ এশা ঢাকার মিরপুরের মনিপুর বায়তুল আমান মসজিদে তার প্রথম জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। পরদিন শুক্রবার চঁাদপুর সদরের পাথালিয়ায় দ্বিতীয় দফা নামাজে জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। সানিরার অকাল মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




raytahost-demo
© All rights reserved © 2019
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD