নিউজ ডেস্কঃ
বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হয়রানি বন্ধসহ ৫ দফা দাবীতে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের ‘জীবন-জীবিকা বাঁচাও’ কমিটির ডাকা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে রোববার সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে পেট্রাপোল-বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। সমাধান না হওয়ায় প্রবেশের অপেক্ষায় দুই পারের বন্দরে আটকা পড়েছে সহস্রাধিক পণ্যবাহী ট্রাক।
বেনাপোল বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, ভারতীয় সংগঠনটির ধর্মঘটে দাবির বিষয়টি নিয়ে কোন সমাধান না হওয়ায় কেউ কাজে যোগ দিচ্ছে না। ফলে রোববার (৩১ জানুয়ারি) সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম। এতে নানান ভাবে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। দ্রুত সন্তোষজনক সমাধানের মাধ্যমে বাণিজ্য সচল হওয়া জরুরি বলে জানান তিনি।
ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রায় ৫ শতাধিক ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি ও দেড় শতাধিক ট্রাকে বিভিন্ন পণ্য ভারতে রফতানি হয়ে থাকে। বাণিজ্যিক কার্যক্রম সম্পাদনে ভারতীয় সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ সদস্যরা বেনাপোল বন্দরে আসা-যাওয়া করতেন। বন্দর শ্রমিকেরা কাজ করতেন পাসপোর্ট যাত্রীদের ব্যাগ বহন কাজে। কিন্তু সীমান্তরক্ষী বিএসএফ সম্প্রতি নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে তাদের চেকপোস্ট ও বন্দর এলাকায় যাতায়াত বন্ধ করে দেয়।
এছাড়া বিএসএফের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া ট্রাক তল্লাশিতে দীর্ঘ সময়ক্ষেপণ হয়। এসব সমস্যা সমাধানে আন্তরিক হতে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে সংগঠনটি। কিন্তু কোন সমাধান না আসায় বাধ্য হয়ে বন্দর জীবন-জীবিকা বাঁচাও সংগঠনটি কর্মবিরতি পালন করে আমদানি-রফতানি বন্ধ করে দেয়। এর সাথে একাত্বতা ঘোষণা করে আমদানি-রফতানি সমিতি, ট্রাক চালক, বন্দর শ্রমিক ও বাণিজ্যের সাথে জড়িত ব্যবসায়ীরা।
বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, ভারতীয় সংগঠন যৌক্তিক দাবি নিয়ে তারা কর্মবিরতি পালন করেছে। তবে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা যেমন লোকসানের মুখে পড়েছেন। সন্তোষজনক সমাধানের মাধ্যমে দ্রুত পণ্য পরিবহন শুরু হবে এমনটি আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, চলমান সমস্যা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে এতে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে। চলমান সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে যাতে দ্রুত বাণিজ্য সচল হয় তার জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এদিকে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ থাকায় দুই পাশের বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় সহস্রাধিক পণ্য বোঝায় ট্রাক আটকা পড়েছে। এ পর্যন্ত কোন সমাধান না আসায় বাণিজ্য সচল অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের লোকসানের কবলে পড়েছেন। আটকে পড়া পণ্যের মধ্যে রয়েছে পাট ও পাট জাত পণ্য, মাছ, শিল্প কলকারখানার কাঁচামাল, তৈরি পোশাক, মেশিনারিজসহ বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব।
Leave a Reply