বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৪১ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
কসবায় সবুজ সংঘের শিক্ষাবৃত্তি ও মানবিক সহায়তা প্রদান বাংলাদেশের জনগণ কারও দাদাগিরি একদম পছন্দ করে না: গোলাম পরওয়ার ভারতের গণমাধ্যমগুলো যে ভূমিকা নিয়েছে তা দুদেশের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় সহায়ক নয় -পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কসবা প্রেসক্লাব কার্যালয়ের জানালার গ্রীল ভেঙে দিয়েছে দুবৃত্তরা, প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের দাবি সাংবাদিকদের ইমাম প্রি-ক্যাডেট স্কুলের ১৪০ শিক্ষার্থীর পবিত্র কুরআন সবক গ্রহণ কসবায় জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে স্মরণসভা খালেদা জিয়াকে আনতে পেরে আমরা গর্বিত-ড. ইউনূস আজ আল্লামা গোলাম সারোয়ার সাঈদী (র) এর ৫ম ওফাত দিবস কসবায় ১০ হাজার ৬শ ৫০জন প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ শিশু মুনতাহার মরদেহ মিলল পুকুরে
আম্রপালী আমের ইতিহাস ১

আম্রপালী আমের ইতিহাস ১

আম্রপালী ছিল এক কন্যা ২৫০০ বছর আগে রাষ্ট্র
যাকে বানিয়েছিল নগরবধু বা পতিতা ।
স্বাদের দিক থেকে অনেকের কাছেই আম্রপালী আম খুবই প্রিয় । ছোট কিন্তু মিষ্টির দিক থেকে যেন সকল আমকে পিছনে ফেলে দিয়েছে আম্রপালী । কিন্তু এই আমটার নামকরন কোথা থেকে হলো ?
আম্রপালী জন্মেছিলো আজ থেকে ২৫০০ বছর আগে ভারতে। সে ছিলো সে সময়ের শ্রেষ্ঠ সুন্দরী এবং নর্তকী । যার রুপে পাগল ছিলো পুরো দুনিয়া। আর এই রুপই তার জন্য কাল হয়ে ওঠে। যার কারণে সে ছিলো ইতিহাসের এমন একজন নারী যাকে রাষ্ট্রীয় আদেশে পতিতা বানানো হয়েছিলো !
আম্রপালী বাস করতেন বৈশালী শহরে । বৈশালী ছিল প্রাচীন ভারতের গণতান্ত্রিক একটি শহর যেটি বর্তমানে ভারতের বিহার রাজ্যের অর্ন্তগত ।
মাহানামন নামে এক ব্যক্তি শিশুকালে আম্রপালীকে আম গাছের নীচে খুজে পায়। তার আসল বাবা মা কে ইতিহাস ঘেটেও তা জানা যায়নি । যেহেতু তাকে আম গাছের নীচে পায় তাই তার নাম রাখে আম্রপালী । সংস্কৃতে আম্র মানে আম, এবং পল্লব হল পাতা। অর্থাৎ, আমগাছের নবীন পাতা ।
কিন্তু শৈশব পেরিয়ে কৈশরে পা দিতেই আম্রপালীকে নিয়ে হইচই পড়ে যায়। তার রুপে চারপাশের সব মানুষ পাগল হয়ে যায়। দেশ বিদেশের রাজপুত্র রাজা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ তার জন্য পাগলপ্রায়। নানা জায়গায় এ নিয়ে দ্বন্দ, ঝগড়া বিবাদের খবরও আসতে থাকে। সবাই তাকে একনজর দেখতে চায়, বিয়ে করতে চায় । এ নিয়ে আম্রপালীর মা বাবা খুব চিন্তিত হয়ে পড়েন ।
তারা তখন বৈশালীতে সকল গণমান্য ব্যক্তিকে এর একটি সমাধান করার জন্য বলেন। কারণ সবাই আম্রপালীকে বিয়ে করতে চায় । তখন বৈশালীর সকল ক্ষমতাবান ধনবান ব্যক্তি মিলে বৈঠকে বসে নানা আলোচনার পর যে সিদ্ধান্ত নেয় তা হল, আম্রপালীকে কেউ বিয়ে করতে পারবেনা। কারণ তার রুপ। সে একা কারো হতে পারেনা। আম্রপালী হবে সবার সে হবে একজন নগরবধু মানে সোজা বাংলায় পতিতা ।।
এটা ছিলো একটা ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। ইতিহাসে এভাবে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে কাউকে পতিতা বানানো হয়েছে এমন সিদ্ধান্ত খুবই বিরল !!
আম্রপালী সে সভায় ৫টি শর্ত রাখেন
আম্রপালীর শর্তগুলি ছিল নিম্নরূপঃ
(১) নগরের সবচেয়ে সুন্দর জায়গায় তার ঘর হবে
(২) তাঁর মুল্য হবে প্রতি রাত্রির জন্য পাঁচশত স্বর্ণমুদ্রা
(৩) একবারে মাত্র একজন তাঁর গৃহে প্রবেশ করতে পারবে
(৪ ) শক্র বা কোনো অপরাধীর সন্ধানে প্রয়োজনে সপ্তাহে সর্বোচ্চ একবার তার গৃহে প্রবেশ করা যাবে
(৫)তার গৃহে কে আসলো গেলো এ নিয়ে কোন অনুসন্ধান করা যাবেনা
সবাই তার এসব শর্ত মেনে নেয় ।
এভাবে দিনে দিনে আম্রপালী বিপুল ধন সম্পদের মালিক হয়ে ওঠেন । আম্রপালীর রুপের কথাও দেশ বিদেশে আরও বেশি করে ছড়াতে থাকে ।
প্রাচীন ভারতের মগধ রাজ্যের রাজা ছিলেন বিম্বিসার । শোনা যায়, তার স্ত্রীর সংখ্যা নাকি ৫০০ ছিলো ! নর্তকীদের নাচের এক অনুষ্ঠানে বিম্বিসার এক নর্তকীর নাচ দেখে বলেছিলেন, এ নর্তকী বিশ্বসেরা। তখন তার এক সভাসদ বলেন, “মহারাজ,এই নর্তকী আম্রপালীর নখের যোগ্য নয়” !!
বিম্বিসারের এক কথাটি নজর এড়ায়নি। সে তার সভাসদ থেকে আম্রপালী সম্পর্কে বিস্তারিত শুনে তাকে কাছে পাবার বাসনা করে, কিন্তু তার সভাসদ বলেন সেটা সম্ভব নয়। কারণ তাহলে আমাদের যুদ্ধ করে বৈশালী রাজ্য জয় করতে হবে। আর আম্রপালীর দেখা পাওয়াও এত সহজ নয়। দেশ বিদেশের বহু রাজা রাজপুত্র আম্রপালীর প্রাসাদের সামনে তার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে। কিন্তু মন না চাইলে সে কাউকে দেখা দেয়না ।
এত কথা শুনে তার আগ্রহ আরও বেড়ে গেলো। সে সিদ্ধান্ত নিলো ছদ্মবেশে বৈশালী রাজ্যে গিয়ে আম্রপালীকে দেখে আসবে।কি এমন আছে সেই নারীর মাঝে, যার জন্য পুরো জাহান পাগল হয়ে আছে !
তারপর বহু চড়াই উৎরাই শেষে, রাজার আম্রপালীর সাথে দেখা করার সুযোগ আসে আম্রপালীর প্রাসাদ আম্রকুন্জে, কিন্তু দেখা করতে গিয়ে রাজা চমকে উঠেন এতো কোন নারী নয়, যেন সাক্ষাৎ পরী!এ কোনভাবেই মানুষ হতে পারেনা। এত রুপ মানুষের কিভাবে হতে পারে !!!!
কিন্তু অবাক রাজার জন্য আরও অবাক কিছু অপেক্ষা করছিলো কারণ আম্রপালী প্রথম দেখাতেই তাকে সে যে মগধ রাজ্যের রাজা বিম্বিসার কে চিনে ফেলে। এবং আম্রপালী জানায় সে তার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে বহু আগে থেকেই। এ কথা শুনে রাজার বিস্ময়ের সীমা থাকে না।
রাজা সাথে সাথে তাকে তার রাজ্যের রাজরাণী বানানোর প্রস্তাব দেয়।কিন্তু আম্রপালী জানে, তার রাজ্যের মানুষ এটা কখনোই মেনে নিবেনা। উল্টো বহু মানুষের জীবন যাবে। রক্তপাত হবে। তাই তাকে দ্রত এখান থেকে চলে যেতে বলে। রাজা বিম্বিসার বৈশালী আক্রমন করে আম্রপালীকে পেতে চান, কিন্তু আম্রপালী তার নিজের রাজ্যের কোন ক্ষতি চাননা। তাই তিনি রাজাকে তার নিজ রাজ্যে ফেরত পাঠান এবং বৈশালীতে কোন আক্রমণ হলে তিনি তা মেনে নেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন ।
এদিকে বিম্বিসার এর সন্তান অজাতশত্রুও আম্রপালীর প্রেমে মগ্ন ছিলেন।
(চলমান)

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




raytahost-demo
© All rights reserved © 2019
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD