সরকার মাহবুব
কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন এর মৃত্যুতে বৃহষ্পতির ৩ জানুয়ারী ২০২১ এর সান্ধ্য আড্ডায় এ কালজয়ী কথাসাহিত্যিক কে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়।
ঈবিক্রমপুরে তার মাতুলালয়ে জন্ম গ্রহন করেন। তিনি ১৯৫০ সালে ঢাকার আনন্দময়ী গার্লস হাই স্কুল থেকে ম্যট্রিকুলেন পাশ করেন। একটি ইসলামিক পরিবারে জন্ম গ্রহন করে শত ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সামাজিক সীমাবদ্ধতার কারনে
তার পক্ষে আর লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে নি। গল্প শোনা, গল্প বলার প্রতি তার আগ্রহ গল্প লেখায় তাকে উদ্বুদ্ধ করে তোলে। লিখে ফেলেন বেশ কিছু গল্প। যুগেরদাবী পত্রিকায় ১৯৫৯ সালে “প্রশ্ন” শিরোনামের একটি গল্প প্রকাশের মধ্য দিয়ে তার লেখা জনসম্মুখে প্রথম প্রকাশিত হয়।
রাবেয়া খাতুনের প্রায় অর্ধ শতাধিক প্রকাশিত গ্রন্থের তালিকায় রয়েছে অনেক কালজয়ী গল্পগ্রন্থ , উপন্যাস, স্মৃতি চারন, ভ্রমন কাহিনী, শিশুতোষ গ্রন্থ। “মধুমতি” ১৯৬৩ সালে প্রকাশিত তার প্রথম উপন্যাস।
উপন্যাস মধুমতির পর তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস হলো মন এক স্বেত কপোতি ; রাজারবাগ ; সালিমারবাগ ; সাহেব বাজার ; বায়ান্ন গলির এক গলি ; মোহর আলী ; বাগানের নাম মালনীছড়া ইত্যাদি। গল্পগ্রন্থগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মধ্যরাতে সাত মাইল ; মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ; মুক্তিযুদ্ধের গল্প ; লাল চিঠি।
রাবেয়া খাতুন স্বাধীনতার অব্যাবহিত পর ১৯৭৩ সালে বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ১৯৯৩ সালে “রাষ্ট্রীয় একুশে পদক” এবং ২০১৭ সালে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মণনা “স্বাধীনতা পদক” এ ভূষিত হন। এ ছাড়াও অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায় তিনি ভূষিত হয়েছেন। বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান তার জীবদ্দশায় যতটি না সমাদ্রিত হয়েছে। আশা করা যায়, মৃত্যু পরবর্তী রাবেয়া খাতুন আরো অনেক বেশি মূল্যায়িত হবেন তার রেখে যাওয়া এই সব মূল্যবান সৃষ্টির মধ্য দিয়ে।
রাবেয়া খাতুনের মৃত্যুতে বৃহষ্পতির ৩ জানুয়ারীর সান্ধ্য আড্ডায় উপস্থিত থেকে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান কবি নাসির আহমেদ, কবি ফরিদ আহমদ দুলাল, কবি সরকার মাহবুব, কবি রোকেয়া ইসলাম, কবি নূর কামরুন নাহার, কবি রেখা রায়, কবি বাবুল আনোয়ার।
আলোচনায় অংশ নিয়ে সকলে তার জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এবং তার বিদেহী আত্মার প্রশান্তি ও মঙ্গল কামনা করেন।
অনুষ্ঠান পরিচালনা ও সঞ্চালনায় ছিলেন কবি রোকেয়া ইসলাম।
Leave a Reply