বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
কসবায় সবুজ সংঘের শিক্ষাবৃত্তি ও মানবিক সহায়তা প্রদান বাংলাদেশের জনগণ কারও দাদাগিরি একদম পছন্দ করে না: গোলাম পরওয়ার ভারতের গণমাধ্যমগুলো যে ভূমিকা নিয়েছে তা দুদেশের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় সহায়ক নয় -পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কসবা প্রেসক্লাব কার্যালয়ের জানালার গ্রীল ভেঙে দিয়েছে দুবৃত্তরা, প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের দাবি সাংবাদিকদের ইমাম প্রি-ক্যাডেট স্কুলের ১৪০ শিক্ষার্থীর পবিত্র কুরআন সবক গ্রহণ কসবায় জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে স্মরণসভা খালেদা জিয়াকে আনতে পেরে আমরা গর্বিত-ড. ইউনূস আজ আল্লামা গোলাম সারোয়ার সাঈদী (র) এর ৫ম ওফাত দিবস কসবায় ১০ হাজার ৬শ ৫০জন প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ শিশু মুনতাহার মরদেহ মিলল পুকুরে
কসবায় সীমানা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে টাকসল দিয়ে রাবেয়া দু’হাত কেটে দিয়েছে ভাসুরপুত্ররা

কসবায় সীমানা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে টাকসল দিয়ে রাবেয়া দু’হাত কেটে দিয়েছে ভাসুরপুত্ররা

কমবা প্রতিনিধ।।
কসবার জয়পুর গ্রামে বাড়ির সীমানা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে রাবেয়া বেগম নামক পঞ্চাশোর্ধ এক মহিলার দু’হাত মাংস কাটার টাসকল দিয়ে কেটে ফেলেছে তাঁরই ভাসুর পুত্র। এই লোমহর্ষক ঘটনা নিয়ে রাবেয়ার পরিবার এখন আতংকে দিন কাটাচ্ছে। অপরদিকে রাবেয়া বেগম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
সরেজমিন খেঁাজ নিয়ে জানা যায়, রাবেয়া বেগমের স্বামী সার্জেন্ট গোলাম মওলা পৈত্রিক সুত্রে বাড়ির অংশ পাওয়ার পরও বড় ভাই গোলাম মোস্তফা (৬৫) থেকে বাড়ি পাশেই সাড়ে ছয়শতক নাল ভূমি ক্রয় করে প্রায় ১৫/১৬ বছর পূর্বে। ওই ভূমির সীমানা ও তার মূল বাড়ির সীমানাকে কেন্দ্র করেই বিরোধের সুত্রপাত। গোষ্ঠীর মুরব্বীরা একাধিকবার এই বিরোধ মেটাতে চেষ্টা করে কিন্তু গোলাম মোস্তাফার ৭ ছেলে নানা সময় মুরব্বীদের উপর চড়াও হয় ফলে কেউ আর সুরাহা করতে পারে না। গ্রামের সরদার-মাতাব্বরদের নিকট বিচার দিলেও গোলাম মোস্তফা ও তার সাত পুত্র মোস্তফার ঘরে ঢুকে তাকে মারধোর করে এবং সালিশ বন্ধ করতে বাধ্য করে। ফলে গ্রামের সাহেব সর্দ্দারও তার বাড়ির সীমানা বিরোধ মেটাতে পারেনি। গোলাম মোস্তফার ৭ ছেলে যথাক্রমে বাদল, ইলিয়াছ, ইসহাক, বায়েজিদ, সায়জিদ, আউয়াল, সুবেসাদেক। এরা প্রত্যেকেই দুর্ধর্ষ প্রকৃতির বলে গ্রামের লোকজন জানায়। কথার আগে তাদের হাত চলে। চুন থেকে পান খসলে দাঁড়ালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করতে বের হয়ে যায়। মোস্তফার বড় ছেলে বাদল সম্পর্কে গ্রামের মানুষের রয়েছে নানা প্রশ্ন।
গোষ্ঠীর মুরব্বী সর্দার হাফিজ মিয়া (৮০) জানালেন, মোস্তফা ও মওলা তার চাচাত ভাই। গোলাম মোস্তফা তার কাছে বার বার নালিশ করেছে তার ক্রয়কৃত সাড়ে ছয়শতক জমির দখল বুঝিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে দিতে। কিন্তু বহুবার গোলাম মোস্তফার কাছে গেলেও তাকে গালমন্দ করেছে এমনকি মারধোর করেছে মোস্তফা ও তার ছেলেরা।
১০আগস্ট দুপুর তখন ১টা। রাবেয়া বেগম বাড়ির রান্না ঘরে রানা্ন করছিলো। এমন সময় ঠান্ডা মাথায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবেই মোস্তফার স্ত্রী জরিণা (৪৫) ও কন্যা সাজেদা (৩০) রাবেয়া বেগমের চুলে ধরে হেচড়িয়ে মাটিতে ফেলে সারা শরীর ও মাথায় আঘাত করে। এমন সময় মোস্তফার পুত্র বাদল ও ইলিয়াছ তাদের হাতে থাকা ধারালো মাংস কাটার টাসকল দিয়ে রাবেয়ার দু’হাতে কুপ দেয়। তার পেটে পায়ের উরুতে কপদিলে তিনি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এমতাবস্থায় মোস্তফার অন্যান্য ছেলেরা ঘরে ঢুকে টাকা সোনাগয়না লুট করে নিয়ে যায়। প্রচুর রক্ত ক্ষরণ হয় রাবেয়ার। এই ঘটনা ঘটিয়ে লম্বা দাড়ি গোঁফ বেস্টিত বাদল মসজিদে গিয়ে অতি স্বাভাবিকভাবে নামাজ পড়ে।
এদিকে এম্বুলেন্স এনে রাবেয়াকে প্রথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
জানা যায়, তার অবস্থা শোচনীয়। প্রচুর রক্ষক্ষরণ হলে তাকে রক্ত দেয়া হয়। তবে তার দু’হাত চিরতরে অকেজো হয়ে যাবে বলে চিকিৎসকগণ ধারণা করছেন। কারণ হাতের হাড়, শিরা উপশিরা কেটে শুধুমাত্র নীচের চামড়াটাই লেগেছিলো।
রাবেয়া খাতুনের ভাই আবদুর রউফ (৪৫) জানান বাড়ির সীমানা নিয়ে সালিশ ডাকলেই গোলাম মোস্তফা ও তার ছেলেরা তার ভগ্নিপতি গোলাম মওলাকে ঘরে ঢুকে মারধোর করতো এবং সালিশ বন্ধ করতে বাধ্য করতো।
এ প্রসংগে মূলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মইনুল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। তিনি ন্যায়সংগত বিচার দাবী করেন।
শেরপুর জয়পুর ওয়ার্ডের মিন্টু মেম্বার বলেন, উভয় পক্ষই মামলা করেছে আমরা চেষ্টা করছি তাদের পারিবারিক ঝামেলাটি শেষ করে দিতে।
এমন সময় এ প্রতিবেদক তাৎক্ষনিক কসবা থানা অফিসার ইনচার্জের সাথে কথা বলে জানেন এ ব্যাপারে কোনো কাউন্টার মামলা হয়নি। তবে এলাকায় একটি চিহ্নিত মহল বাদলদের পক্ষে কাউন্টার মিথ্যা মামলা দিতে থানায় গিয়েছিলেন তিনি তাদের শাসিয়ে দিয়েছেন।
বাদল সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায় বাদল ঢাকায় একটি বিস্কুট বেকারীতে চাকুরী করতো। ওই বিস্কুট বেকারীটি এখন বন্ধ হয়ে গেছে। ওই বেকারীর মালিকের সকল অর্থ বাদল আত্মসাৎকরে বাড়িতে এসে একটি দালান তৈরি করেছে। যার এখনো কাজ শেষ হয়নি। বাদল সম্পর্কে স্থানীয় জনগণের ধারণা ভিন্নরকমের। তারা মনে করছেন সে কোনো নিষ্দ্ধি সংগঠনের সাথে জড়িত। হঠাৎ করে এতো টাকা কোথায় পেল এ নিয়ে নানা মানুষের নানান কথা।
কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ লোকমান হোসেন জনান, আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




raytahost-demo
© All rights reserved © 2019
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD