রোকেয়া ইসলাম
রুপন্তি ভাতঘুমের আগে দাদির কাছে গল্প শুনে
ঠাকুরমার ঝুলি থেকে নয়
আরব্য রজনীর ঝলমলে ঝাড়বাতি থেকে নয়
প্রাসাদ বন্দিনি রাজকন্যা আর রাখাল যুবকের বাঁশির সুর কাঁদে না গল্পে
শুধু প্রবহমান একটা নদীর ঢেউ ছলকে
ওঠে
টাংগাইল শহরের পশ্চিম সীমায় বয়ে চলা নদীটি
দুরন্ত যৌবনবতী নদীটির নাম লৌহজং
দুধারের বৃক্ষ বুকে নিয়ে জল হয় সবুজ
উপচে পড়া জলে কত নৌকা কত নামের
কত পাল তারও কত নাম
হাসতে হাসতে ভেসাল উড়িয়ে দেয় বাতাসে মাঝি
বৈঠা বেয়ে চলে রোদে পোড়া সবল বাহু
বিরহ ভাটিয়ালি আর মাছের পিঠে সূর্য সখ্য
কলসী ভরে জল তুলে নেয় রাঙা গৃহ বধূ
গাছের ছায়ায় কে লুকায় কোন সে কানাই
সওদাগর কেন ফিরে ফিরে চোখ দিয়ে রুপ করে চুরি
পাশের শহরে ঢেলে দেয় বানিজ্য বেসাতি
দাদিরা নাওইর যেতো পাল তোলা নৌকায়।
দাদির হাত ধরে রুপন্তিও লৌহজং পাড়ে দাঁড়ায়।
ইট কাঠের খাঁচা থেকে নেমে আসে দানব দৃষ্টি আর রাক্ষুসে নিশ্বাস দখলের মহোৎসব
ভূমি অফিসের সি এস পরচা রবার স্ট্যাম্প
কালো হাতের নদী চুরির কারসাজি
তির তির করে বইছে বাসাবাড়ি থেকে নামছে
গলিত নোংরা।
শুষ্ক মুখে নিঃস্ব দাদি বসে পড়ে নর্দমার পাশে
এই তার ভালবাসার প্রথম নাম লৌহজং
পৌঢ় বুকে বইছে এখন যৌবনবতী নদীর জলছবি
Leave a Reply