জার্মানির বার্লিনে একটি স্কুলে হিজাব পরার অনুমতি পেলেন সেখানকার মুসলিম শিক্ষিকারা। এক নারীর আবেদনের ভিত্তিতে গত কয়েক বছর ধরে হিজাব পরার অনুমতির জন্য একটি মামলা চলছিল।
অবশেষে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) জার্মানির একটি আদালতে এই ঐতিহাসিক এই রায় দেওয়া হয়।
জার্মানিতে নিরপেক্ষতার আইন রয়েছে যার অর্থ স্কুলে বা কোন সরকারী প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় চিহ্ন ব্যবহারকারী কোন পোশাক পরিধান করে যাওয়া যাবে না। আর সে কারণেই স্কুলে হিজাব বা স্কার্ফ পরে যেতে পারতেন না সেখানকার মুসলিম শিক্ষিকারা।
বার্লিনে বসবাসকারী একজন মুসলিম নারী এই নিয়মের বিরুদ্ধে বার্লিন আদালতে একটি মামলা করেন। দীর্ঘদিন শুনানির পর ২০১৮ সালে বার্লিনের নিম্ন আদালত ওই নারীর পক্ষে রায় ঘোষণা করেন।
সেই রায়ে বলা হয়েছিল, এখন থেকে হিজাব পরে স্কুলে যেতে পারবেন মুসলিম নারীরা। একই সঙ্গে ওই নারীকে ৫ হাজার ১৫৯ ইউরো ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরকার পক্ষের উকিল পরে উচ্চ আদালতে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) উচ্চ আদালত তার রায় জানিয়েছেন। নিম্ন আদালতের রায়ের সঙ্গে কোনও অংশেই দ্বিমত পোষণ করেননি উচ্চ আদালত।
রায়ে বলা হয়, হিজাব পরে যদি কোন মুসলিম নারী স্কুলে যান এবং তাতে যদি শান্তিভঙ্গ না হয়, তাহলে এতে কোন অন্যায় নেই। হিজাব পরা এক ধরনের অধিকার। তা থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যায় না। ফলে মুসলিম শিক্ষিকারা চাইলে স্কুলে হিজাব পরে যেতে পারেন।
বার্লিনে বসবাসকারী ওই মুসলিম নারীরা বলছেন, এটা তাদের একটা বড় বিজয়।
স্কুলে হিজাব পরা নিয়ে কিছু দিন আগে জার্মানির বেশ কয়েকটি রাজ্যে অশান্তি দেখা গিয়েছিল। বেশ কিছু রাজ্য স্কুলে হিজাব, বোরখা পরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। তখনও ধর্মীয় অধিকার এবং স্বাধীনতার প্রশ্ন উঠেছিল।
বার্লিনের আদালতের রায় এবার দেশের অন্য আদালতগুলিকেও প্রভাবিত করবে বলে অনেকে মনে করছেন।
তবে জার্মান বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, জার্মানির নিউট্রালিটি বা নিরপেক্ষতার আইন খুব শক্তিশালী। বার্লিন আদালতের রায় এবং নিরপেক্ষতার আইনের মধ্যে কীভাবে সামঞ্জস্য রক্ষা করা হবে, তা নিয়ে অনেকেই চিন্তিত।
(সূত্র: ডয়েচে ভেলে)। #
Leave a Reply