বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৫২ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
কসবা ইমাম প্রি-ক্যাডেট স্কুলের নতুন ভর্তির মূল্যায়ন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত আল্লামা মরহুম গোলাম সারোয়ার সাঈদী (র) এর দোয়া মাহফিল সম্পন্ন কসবায় সবুজ সংঘের শিক্ষাবৃত্তি ও মানবিক সহায়তা প্রদান বাংলাদেশের জনগণ কারও দাদাগিরি একদম পছন্দ করে না: গোলাম পরওয়ার ভারতের গণমাধ্যমগুলো যে ভূমিকা নিয়েছে তা দুদেশের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় সহায়ক নয় -পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কসবা প্রেসক্লাব কার্যালয়ের জানালার গ্রীল ভেঙে দিয়েছে দুবৃত্তরা, প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের দাবি সাংবাদিকদের ইমাম প্রি-ক্যাডেট স্কুলের ১৪০ শিক্ষার্থীর পবিত্র কুরআন সবক গ্রহণ কসবায় জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে স্মরণসভা খালেদা জিয়াকে আনতে পেরে আমরা গর্বিত-ড. ইউনূস আজ আল্লামা গোলাম সারোয়ার সাঈদী (র) এর ৫ম ওফাত দিবস

দক্ষিনেশ্বর

সুমিতা সরকার ঘোষ

স্নান যাত্রার পুন্যলগ্নে রানী রাসমনি এক অদম্য ইচ্ছে আর অপরিসীম প্রানশক্তিতে নির্মান করেছিলেন দক্ষিনেশ্বরের মন্দির মহাপীঠ।

অক্লান্ত পরিশ্রম ও ভালবাসার অমোঘ টানে আনতে চেয়েছিলেন মাকে,
কালের গর্ভগৃহে আজও দন্ডায়মান,
সেই ভক্তির আবেশে গাঁথা ইঁট।

হাজার অনুশাসনের বাধা পেরিয়ে,
১৮৫৫ সালে সাজিয়েছিলেন মন্দির।
পাশে সুদৃশ্য গাছের সারি আর অতলান্ত
প্রসারিনী শান্ত গঙ্গা তীর।

হাজার হাজার দর্শনার্থী আসে
নিয়ে প্রনামের উদ্দেশ্য,
কাছেই পঞ্চবটী যেখানে নিয়মিত সাধনায় বসতেন আরও এক
যুগাবতার শ্রীরামকৃষ্ণ।

মন্দির চত্বরে বিরাজমান রাসমনি মন্দির
গঙ্গার অপরূপ সৌন্দর্য্যে
নিমেষে চক্ষু স্থির।

মন্দিরের গর্ভগৃহের ছাদে আছে নয়টি বেলনাকার অংশ সেগুলোকে বলে রত্ন।
সংরক্ষিত, সুসজ্জিত রাখার
আর এক নাম যত্ন।

গর্ভগৃহের সামনে নাটমন্দির, পিছনে রাধাকৃষ্ণ আর পশ্চিম সীমা বরাবর
দ্বাদশ শিবমন্দির।

ওপাশে মা গঙ্গা, চত্বরের উত্তর পশ্চিম কোনে রামকৃষ্ণ দেবের ঘর, ঠাকুরের খাট, অন্যান্য দ্রব্য আজও সযত্নে সেখানে রাখা স্থবীর।

উত্তর পশ্চিম কোনে নহবতখানার একতলার ঘরে থাকতেন মা সারদা।
পিছনে পঞ্চবটীর জঙ্গল ছিল
ঠাকুরের সাধনাস্থল।

পুরোনো বটগাছ আর নেই
পূর্বদিকের রামকৃষ্ণদেবের স্নানের পুকুর
আজও বর্তমান সেই জল।

মন্দির পাশে ছিল এক মাজার।
সেখানে ঠাকুর পড়তেন নামাজ, মুসলিম ধর্মের প্রতিও তার ছিল,
ভক্তির অধিষ্ঠান, রীতি,রেওয়াজ।

গর্ভগৃহের সহস্রদল পাপড়িতে সজ্জিত
রৌপ্যপদ্মের ওপরে শায়িত শিবের বুকে
দাঁড়িয়ে মা ভবতারিনী।

একই পাথরে অবস্থানরত সতী মায়ের,
স্বামীসহ যুগল মূর্তিরূপ ভুবনমোহিনী।

দুপুরে সাদা ও ঘি ভাত, শুক্তো,পাঁচরকম ভাজা, মাছের পঞ্চপদ, চাটনি, পায়েস, মিষ্টি সহকারে হয় ভোগ।

রাতে পুজোপর্ব মেটার পর মাকে বিশেষ
ভোগ নিবেদনের নিয়ম যোগ।

জাতের দোহাই দিয়ে যে মন্দির ধ্বংস করার হয়েছিল চেষ্টা।
পরে সেই মন্দির থেকেই ধ্বনিত হয়
” যত মত তত পথ “শব্দের রেশটা।

কালের সীমা অতিক্রম করে চলেছে,
এখনো সেই অনুরনন।
একেই বোধ হয় বলে দর্শন।

দীর্ঘকাল ব্যাপী এক সুকঠিন আধ্যাত্মিক সাধনার পর গদাই রূপান্তরিত হন পরমহংস
শ্রীরামকৃষ্ণ রূপে।

দক্ষিনেশ্বরের কালীমন্দির
হয় শিক্ষা ক্ষেত্র,
মানুষকে বোঝালেন মানুষের মধ্যেই ঈশ্বরের বাস, আলাদা করে কিছু নেই, জাতি কূল,গোত্র।

অভিজাত, বুদ্ধিজীবী, যুব সম্প্রদায়, ধনী, মধ্যবিত্ত, ব্রাত্যজন, ডাকাত,গনিকা
সবাই ছিলেন সেখানে সমাদরে নিমন্ত্রিত

এক পতিতা রমনীকে ঠাকুর ডেকেছিলন “মা” বলে,
সারদাদেবীও তাকে দেখতেন শাশুড়িরূপে, বিভিন্ন কাজের উদ্বোধনে,
তিনিও আসতেন চলে।

আজও গঙ্গার বুকে মন্দিরে মা ভবতারিনী দাঁড়িয়ে আছেন অতৃপ্ত আকাঙ্খা নিয়ে প্রতীক্ষায়,

যদি কোন ভক্ত মালা, মন্ত্র, ভক্তি, দান, গ্রহন, বিশ্বাসে, নিশ্বাসে, পাথরের চিন্ময়ীকে করতে পারেন রূপান্তরিত প্রান প্রতিষ্ঠায়?

কলিযুগে মৌন মূর্তির প্রান যোগের অপর উপাদান বিশ্বাস।
হয়তো তখন পাথরেও জাগবে প্রান, পড়বে দ্রুত মায়ের অমূল্য নিশ্বাস।

কারন প্রবাদ আছে ভক্তিতে পাথরেও হয় প্রান প্রতিষ্ঠা,
থাকলে সঠিক বিশ্বাস আর নিষ্ঠা।

১৮৫৫ সালের ৩১ শে স্নানযাত্রার দিন স্থাপিত হয় এই মন্দির। দেবী মাতা এখানে ভবতারিনী নামে প্রতিষ্ঠিত।

অন্নপূর্না পুজোর উদ্দেশ্যে কাশীতে তীর্থযাত্রার আয়োজন করেন রানী। ২৪ টি নৌকো, আত্মীয়স্বজন, দাসদাসী সব প্রস্তুত যাওয়ার জন্যে। যাত্রার ঠিক আগের দিন রাতে রানী স্বপ্নাদেশ পান কাশী যাওয়ার প্রয়োজন নেই। গঙ্গা তীরেই একটি মন্দিরে মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে
দেবী সেই মূর্তিতেই আবির্ভূত হবেন।

২০ একরের প্লট ইংরেজদের কাছ থেকে
৪২ হাজার ৫০০ টাকায় কিনেছিলেন রানী। তখন এই জমির নাম ছিল “সাহেবান বাগিচা”। এর একটি অংশে ছিল মুসলিমদের কারখানা।

১৮৪৭ সালে নির্মান শুরু হয়। খরচ হয়েছিল ৯ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। ১০০ ফুটেরও বেশী উঁচু নবরত্ন মন্দিরের গর্ভগৃহে সহস্র পাপড়ির রৌপ্য পদ্মের ওপরে শায়িত শিবের বুকে দেবী কালিকা দাঁড়িয়ে আছেন। একটি পাথরের থেকেই তৈরী হয়েছে শিব সমেত কালী মূর্তি।

রামকুমার চট্টোপাধ্যায় মন্দির প্রতিষ্ঠার এক দিন আগে তার ভাইকে নিয়ে দক্ষিনেশ্বরে উপস্থিত হয়েছিলেন। ১ লক্ষেরও বেশী ব্রাহ্মন নিমন্ত্রিত ছিলেন।
প্রতিষ্ঠার দিন রামকুমার মন্দিরের প্রসাদ গ্রহন করেছিলেন। কিন্তু রামকৃষ্ণ ১ পয়সার মুড়ি – মুড়কি কিনে খান। পরে দাদার নির্দেশে পঞ্চবটিতে নিজের হাতে রান্না করে খেতেন। রাতে প্রসাদী লুচি খেতেন আর মাকে বলতেন “মা আমাকে কৈবর্ত্যের অন্ন খাওয়ালি”। দাদা কিন্তু মন্দিরের প্রসাদই গ্রহন করতেন।

সেই সময় গরীব কাঙালরাও দক্ষিনেশ্বরে খেতে আগ্রহী ছিল না। রানী জাতিতে কৈবর্ত্য হয়ে মন্দির প্রতিষ্ঠা করায় তাদের যথেষ্ট আপত্তি ছিল। খাওয়ার লোক না জোটায় প্রসাদী অন্ন গরুকে খাওয়ানো হতো,
বা গঙ্গায় ফেলে দেওয়া হোত।

মথুরবাবু শাশুড়ী রাসমনিকে বলেছিলেন অদ্ভুত পুজক পাওয়া গিয়েছে, দেবী বোধ হয় শীঘ্রই জাগ্রত হয়ে উঠবেন।

রামকৃষ্ণের মাস মাইনে ছিল ৫ টাকা, বরাদ্দ ছিল ৩ জোড়া কাপড়, যার মূল্য ছিল সাড়ে ৪ টাকা। প্রতিদিনের খোরাকি বাবদ সেদ্ধ চাল, ডাল, তামাক, আর কাঠ।

১৮৮৪ সালে নরেন্দ্রনাথ দত্তকে আর্থিক উন্নতির জন্য রামকৃষ্ণ পাঠিয়েছিলেন মায়ের কাছে। মায়ের কাছে দাঁড়িয়ে নরেন বলেছিলেন ” মা জ্ঞান, ভক্তি ছাড়া আর কিছু চাই না”। তিনবার উচ্চারন করেছিলেন এই কথাটা। এই ঘটনা নরেন্দ্রনাথের ভক্তি ও জ্ঞানে এক নতুন মাত্রা যোগ করে। এর আগে পর্যন্ত তিনি মূর্তি পুজোর বিরোধী ছিলেন। দিব্যজননীকে গ্রহনে তার অসম্মতি ছিল। ঐ ঘটনার পর থেকে মায়ের একনিষ্ঠ ভক্ততে রূপান্তরিত হয়েছিলেন
তিনি।

দক্ষিনমুখী মন্দিরের ৯ টি চূড়া। উত্তোলিত দালানের ওপরে গর্ভগৃহ ৪৬ বর্গফুট প্রসারিত, আর ১০০ ফুট উঁচু।

মূল মন্দিরের কাছে ১২টা একই প্রকার
পূর্বমুখী শিবমন্দির রয়েছে। প্রতিটি আটচালা স্থাপত্য রীতিতে নির্মিত।গঙ্গার একটি ঘাটে দুই ধারে মন্দির দন্ডায়মান। উত্তর পূর্বে বিষ্ণুমন্দির।

পঞ্চবটি নামকরন এই কারনে হয়েছিল যে ঐ স

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




raytahost-demo
© All rights reserved © 2019
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD