রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা প্রতিনিধি।।
পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হল সদ্য প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের। বেলা আড়াইটে নাগাদ দিল্লির লোধী রোড মহাশ্মশানে বিলীন হল তাঁর নশ্বর দেহ। মুখে মাস্ক পরে, প্রয়োজনীয় করোনা-সতর্কতা অবলম্বন করে, ৬ ফিট দূরত্বে দাঁড়িয়ে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে শেষ বিদায় জানালেন সবাই।
শ্মশানে যাওয়ার আগে রাজাজি মার্গের বাড়িতে প্রণববাবুর দেহ শায়িত রাখা হয়। সেখানে গিয়ে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। তার আগে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করে ২ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার তরফে।
দুপুর পৌনে দুটো নাগাদ শ্মশানে পৌঁছয় প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মরদেহ। তারপর শুরু হয় গান স্যালুট প্রক্রিয়া অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া করেন প্রণববাবুর ছেলে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। কোভিড প্রোটোকল মেনে, পিপিই কিট পরে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির শেষ যাত্রায় অংশ নেন তাঁর পরিবারের লোকজন।
এদিন প্রণববাবুর দেহ শ্মশানে চলে যাওয়ার পরেও রাজাজি মার্গের বাড়িতে প্রয়াত প্রণব মুখোপাধ্যায়ের একটি প্রতিকৃতি রাখা হয়। তাতেই ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী-সহ বিশিষ্টরা। এদিন প্রণববাবুকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন উপ রাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা, চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী, কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল-সহ একাধিক বিশিষ্ট জন।
তাঁর প্রয়াণে ইতিমধ্যেই ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সাত দিন দেশের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। আজ, মঙ্গলবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করবে প্রতিবেশী বাংলাদেশও।
সোমবার বিকেলে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ছেলে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় টুইট করে তাঁর বাবার মৃত্যুর খবর জানান। গত ৯ অগস্ট রাজাজি মার্গের বাড়ির বাথরুমে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান প্রণববাবু। তার পরদিন অর্থাৎ ১০ অগস্ট সকালে তাঁকে ভর্তি করা হয় দিল্লির সেনা হাসপাতালে। তাঁর শরীরে করোনাও ধরা পড়ে। এর পর গভীর কোমায় চলে গিয়েছিলেন প্রণববাবু। মাঝে ২২দিন আশা-আশঙ্কার দোলাচলের মধ্যেই চিকিৎসা চলছিল তাঁর। কয়েকদিন আগে ফুসফুসের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল বর্ষীয়ান রাষ্ট্রনেতার। গতকাল সব যুদ্ধ থেমে যায়।
Leave a Reply