শেষ_পর্ব
—————
সোনিয়া তাসনিম খান
আজ আমাদের থিম্পুতে শেষ দিন। বর্ণিল ভূটানের রাজসিক রাজধানী থিম্পুকে বিদায় জানানোর ক্ষণ অবশেষে এসেই গেল। সকাল সকাল তৈরী হয়ে প্রস্থান করার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে নিলাম সবাই। নাস্তা সেরে চেক আউট ফর্মালিটিস সম্পন্ন করতে করতে আমাদের গাড়ি হাজির হয়ে গেল। হোটেলের স্টাফ একজন আমাদের লাগেজগুলি গাড়িতে তুলে দিতে যখন ব্যস্ত তখন প্রিয় বন্ধু সিন গে জ্যাম আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। কি অদ্ভুতুরে এক বিষাদে মন ছেয়ে গেল আমার! ভিন্ন সংস্কৃতি, ভিন্ন জায়গা কিন্তু আমাদের দুজনকে কেমন এক বন্ধুত্বের শক্ত বাঁধনে বেঁধে নিয়েছে। এর মাঝে দুজনে ফেসবুকের ওয়েবের জগতের বায়োনারি ডিজিটের কল্যাণে সংযুক্ত হয়ে গেছি। বলার যেন কিছু খুঁজে পাচ্ছিলাম না। ভালবাসার উষ্ণ আলিঙ্গনে জড়িয়ে ধরি দুজন দুজনকে। পরস্পরকে বিদায় জানিয়ে গাড়িতে এসে বসি। হাত নাড়ি প্রিয় বন্ধুর উদ্দেশ্যে বাতাসের গানে ভর করে অপর প্রান্ত থেকে বিদায় সম্ভাষণ ভেসে আসে। ছুটে চলা এবার পারো-র পথে। চলুন একটু জেনে নেই পারো সম্পর্কে।
থিম্পু থেকে পারোর এই ৬৫ কিমি রাস্তা অতিক্রম করতে আমাদের সময় প্রায় লেগে গেল দু ঘন্টা।
পারো শহরটি পারো উপত্যকায় অবস্থিত। ভুটানিজদের কাছে এটি পবিত্র শহর হিসেবে পরিগণিত যেখানে বিভিন্ন পবিত্র স্থান এবং ঐতিহাসিক স্থাপনা ছড়িয়ে রয়েছে। থিম্পু শহরের পশ্চিমাংশে এর অবস্থান। পারো নদী তার কলকল মায়াবী ছন্দে জাদুকরী নুপুর ছন্দ যেন বাজিয়ে তুলে। দেখলেই মনে হয় স্বচ্ছ পানির ধারায় অবগাহন করে নেই কিছুক্ষণ। শহরতলীর মাঝেই এই নদী বহমান।পারোর উত্তর পশ্চিমাংশে সংরক্ষিত বনভূমি Drukgyel DZong রয়েছে। যেটি ১৭শ শতকে তৈরী।
আয়রণ ব্রিজ/ রিভার টেম্পল:
এর আগে আমরা আয়রন ব্রিজ দেখতে পাই নি বিধায় এবার থিম্পু থেকে পারোর পথে সেই আয়রন ব্রিজে আমরা আমাদের যাত্রা অল্প কিছুক্ষনের জন্য থামিয়ে নেই। গাড়ি থেকে নেমে পাহাড়ি রাস্তার কোলের অমসৃণ পথ বেয়ে নামতে বেশ বেগ পেতে হলেও এক সময় লক্ষ্য স্থলে পৌঁছে গেলাম।
এই ব্রিজটির তৈরী করেছিল Thangthong Cyalop। তিনি ১৭শ শতকে এর ভিত্তি দিলেও এটি ১৯৬০ এর বন্যার তোড়ে ভেসে যায়। রয়েল গভর্নমেন্ট কতৃক নতুন ব্রিজটি আবারও পুণ:নির্মাণ করা হয়। যা তৈরী করা হয় পুরোনো এক লোহার চেয়ারের মাধ্যমে এটিও যথারীতি Thangthong Cyalop এর সেই ১৭ শ শতকেরই সৃষ্টি। এটি তারের তৈরী সেতু। নদীর এপার ওপার শক্ত তারে বাঁধা। তার সাথে একটি চেয়ার ঝুলানো। চেয়ারে বসে টেনে টেনে নদী পার হতে হয়। নীচে সবুজাভ পারো নদী প্রবাহিত। সঠিক কিনা জানি না, শুনেছি এই ব্রীজের ওপারে মোট চারটি পরিবারের বাস। দাঁড়িয়ে কতক ছবি নিয়ে নেই। বাতাস ছিল খুব সেখানে। বাতাসে নদীর মৃদু কুল কুল ধ্বনি মিশে কেমন এক মনোহর সংগীতের আবহ তৈরী হচ্ছিল একটা।
অপরপাড়ে দৃষ্টি ফেললেই রিভার সাইড টেম্পল। এটা পশ্চিম ভুটানের ধর্মীয় দর্শন স্থান। কিছুক্ষণ পর বেশ কষ্ট করেই মেইন রাস্তায় উঠে এসে গাড়িতে বসি। নামার থেকে উঠে আসার সময় বেশ কষ্টই হয়েছিল।
চেলে-লা পাস:
গাড়ি এবার ছুটে চলল সোজা চেলেলা পাস অভিমুখে। থিম্পু থেকে আমরা থিম্পু ফুন্টশোলিং হাইওয়ে ধরে এগুচ্ছিলাম। প্রায় ৪০ কিমি পথ অতিক্রম করার পর পৌছে যাই চুজুম এলাকায়।এই জায়গাটির রাস্তায় মিলে গেছে একই সঙ্গে চার টি রাস্তা। যাকে বলে চৌরাস্তা। এই চার রাস্তার একটি ছুটে চলে গেছে রাজধানী থিম্পুর উদ্দেশ্যে। একটি ফুন্টশোলিং এর দিকে, একটি হা- ভ্যালি আর আরেকটি পারো- র দিকে এগিয়ে গেছে।
এখানে রয়েছে প্রমত্তা ওয়াং চু নদী। নদীর ওপর রয়েছে একটি ব্রীজ। চৌরাস্তার মত দুই নদীও এখানে মিলিত হয়েছে। সুন্দর প্রকৃতি তার অপার সৌন্দর্য রূপ এখানেও মেলে ধরেছে কোন রকম কার্পণ্য ছাড়া। আমি মুগ্ধ! বিস্ময়ের ঘোর যেন আমার কাটছেই না এখানে। আকাশ আর পানির সুবিশাল নীল সম্রাজ্যের মিলন খেলা আমাদের যেন অন্য এক পৃথিবীতে ভাসিয়ে নিয়ে গেল।
চলতে চলতে পাহাড়ি রাস্তা যখন অতিক্রম করছি তো একসময় নজরে এল পারো এয়ারপোর্ট। এখান থেকে রানওয়ে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। দর্জি গাড়ি একপাশে থামিয়ে নিলে সবাই নেমে পড়ি। ড্রুকের একটি বিমান অবতরণ করতে দেখলাম দাঁড়িয়ে।
এই এয়ারপোর্টের একটু আগে বাম পাশ ধরে বাঁক নিলেই ৩৭ কিমি দূরেই চেলেলার রাস্তা। খাড়া রাস্তা এক পাশে তো আরেকদিকে গভীর খাদ। ভুটানের সর্বোচ্চ আর সবচেয়ে ভয়ংকর বিপদজনক রাস্তা এটা। গাড়ি যত ওপরে উঠছিল ঠান্ডা বাড়ছিল ক্রমশ। ক্রিস্টালের মত বরফ কণা দিয়ে সাদা চাদরে আবৃত রাস্তা আর পাহাড় তাতে দাঁড়িয়ে থাকা গাছ পালা গুলোও সাদা বর্ণে ছেয়ে গেছে একদম।দৃষ্টি যতদূর যায় কেবলই শুভ্রতা আর স্বচ্ছতা। কল্পনার চোখে যেন ইয়েতি মানব দেখতে শুরু করেছিলাম একদম!এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল মেইন পয়েন্ট পর্যন্ত আদৌ যেতে পারব কিনা! সরকারী লোকজন বিশেষ গাড়ি দিয়ে কখনও হাতে ব্যবহৃত মেশিন দিয়ে রাস্তার বরফ সরিয়ে ট্যুরিস্ট গাড়ি গুলিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করছিল। দর্জি খুব সাবধানে এগুচ্ছিল। ধীরে আমরা গাড়ি নিয়ে ওপরের দিকে এগুচ্ছি। দুপাশের বরফ স্তুপকে হীরকরাজির রাজ্য বলে মনে করলে বুঝি কোন ভুল হবে না। মন ভরে সাদা বরফের সৌন্দর্য দেখতে থাকি।মনে হল যেন রূপকথায় পড়া সেই “তুষার কন্যা” সফেদ বরফরাজ্যের এই শুভ্র কল্পকথার মাঝে আচমকাই বাস্তবে এই বুঝি আমাদের সামনে এসে দাঁড়াবে।আমার কল্পনা আর বাস্তব যেন মিলেমিশে এক হয়ে যাচ্ছিল। ইয়াকের দেখা পাই আচমকা!
রাস্তায় নানারকম মজার মজার কোটেশন সহ মাইল ফলক নজরে আসছিল যেমন – get married, no hurry no worry,after whisky driving risky! এসব দেখতে দেখতে যতই ওপরে উঠছি তাপমাত্রা ততই নামছে। একসময় নেমে যায় হিমাংকের নিচে!
জানলাম,ভুটানিজ স্থানীয় জোংখা ভাষায় “লা”শব্দের অর্থ হলো গিরিপথ। এসব গিরিপথ বা পাস ই এখানকার এক ভ্যালি থেকে আরেক ভ্যালি পৃথক করেছে।তেমনি ভাবে এই চেলে লা পৃথক করে নিয়েছে পারো আর হা ভ্যালি কে। ভুটানের যত গিরিপথ আছে তাতে অন্যতম প্রধাণ আকর্ষণ হল এই চেলে লা পাস।এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৩,৫০০ মিটার উঁচু। যাওয়ার পথে দেখা পেলাম সুউচ্চ জলমহুরি আর ড্রাতে পর্বতের।জলমহুরির কিন্তু আরেকটি বিশেষ পরিচয় আছে।সে নাকি পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম সুদর্শন পর্বত কান্চনজংঘার বধূ। এখানে নাকি প্রচুর শ্বেত শুভ্র তুষার জমে।
এবং এবার অবশেষে সেই চেলে লা দর্শন!এখানে কোন পত্র পল্লব নেই, নেই কোন লোকজনের তেমন আনাগোণা। চারপাশে কেমন পিনপতন নিস্তব্ধতা।আমাদের মত আরো ট্যুরিস্টদের আশে পাশে ঘুরতে দেখলাম। দূরে দেখা মিলল ভুটান চায়না সীমান্তের! দু দেশের মাঝে তুলে দেওয়া সীমাবদ্ধতার রেখা। সীমান্ত প্রাচীরের ওপর সুনীল আকাশের বুকে সব ব্যস্ত মেঘ বালিকাদের আদিগন্ত ছোঁয়াছুয়ি খেলা। নিচে নিরবতা আর নি:স্তবদ্ধতা।এর এক পাশে দেখতে পাই হা ভ্যালির কিছু অংশকে। পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে চোখে পড়ল কেমন যেন বিচিত্র ধরণের খড়ের গাঁদার মত কেমন যেন একধরণের স্তুপ। স্থানীয় ভাষায় যাকে এরা “সা সা”বলে।এগুলো নাকি পূণ্য পাবার আশায় স্থাপন করা হয়। আরও দেখলাম চারপাশ সজ্জিত অসংখ্য বর্ণিল প্রেয়ার ফ্ল্যাগে।দূরে দেখলাম বেঢপ, বৃদ্ধ, অলস এক মোবাইল টাওয়ার।সে যেন বিশাল অস্তিত্ব সহ এখানকার স্নিগ্ধ নীরবতার স্বাক্ষী।অনেকক্ষণ সময় কাটালাম সেখানে।
দর্জি এবার আমাদের ফটোগ্রাফারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়।একটা সময় কেমন শরীরটা হঠাৎ খারাপ লাগতে শুরু করল আমার।আর ওপরে যাই না।সাহস হচ্ছিল না। কারণ সবার শ্বাস নিতে ভাল সমস্যা হচ্ছিল।
হঠাৎ কিছু লোককে দেখি বিচিত্র সব আওয়াজ করতে।জানলাম আজ থেকে বিশ পঁচিশ বছর আগে ওদের বাপ,ঠাকুর্দারা এখানে ইয়াক শিকার করতে এলে এসব বিচিত্র ধ্বনি দিয়ে ওরা ওদের পরস্পরের এবং শিকারের লক্ষ্য এবং অবস্থান নির্ধারণ করত। আর হ্যাঁ! আজ এখান থেকে হিমালয় দর্শণ করে নেই প্রাণ ভরে। দোচুলা পাসে অভিমানী হিমালয় যেন চেলে লা পাসে সম্পূর্ণ বিপরীত মুডে দেখা দিল। চুপচাপ অপলক তাকিয়ে রই হিমালয় শৃঙ্গ পানে। এই বার পিছু হঠি। আবার ফিরে আসি পারো- তে। আর এখানেই কবি নীরব। নেমে আসার এই সময়ের মাঝেই প্রচন্ড জ্বরে কাবু হয়ে পড়ি আমি।যা হোক, আমাদের “ইয়াং কি”রিসোর্টে ব্যবস্থা হবার কথা থাকলেও পরে কোন অন্য এক হোটেলে (নাম মনে নেই) তবেএই টুকু মনে আছে টাইগার নেস্টের কাছাকাছি, সেখানে উঠে যাই। তখন জ্বর আমাকে বেশ ধরাসায়ী করে ফেলেছে। কোনরকমে নামাজ আর লান্চ শেষ করে টাইগার নেস্টের জন্য তৈরী হই।
টাইগার নেস্ট:
টাইগার নেস্টকে বলা হয় এশিয়ার সুইজারল্যান্ড। স্থানীয় নাম তাক্তসাং। সবার থেকে শুনেছি এটি না দেখলে নাকি ভুটানই দেখা হয় না। এ পাহাড় চূড়া যেন চূড়ান্ত এক বিস্ময়ের নাম। পারো শহর থেকে প্রায় ৯০০ মিটার উঁচু। মজার ব্যাপার হলো, নামের সাথে বাঘ কথাটা থাকলেও আসলে এখানে কোন বাঘের দেখা মিলবে না, এই তথ্য আমার বড় কণ্যার মন খুব খারাপ করে দিয়েছিল।এটি মূলত একটি মনেস্ট্রী। প্রায় তিন ঘন্টা পায়ে হাঁটা পথে ট্রেকিং করতে হয়। একদম ওপরে পাহাড়ের কোলে আশ্রিত সেই মনেস্টরীর দেখা মিলবে। সবুজ আর মেঘের শুভ্রতার অপূর্ব মিলন মেলার দেখা মিলে এখানে। দুর্ভাগ্য সেই সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য যে ট্রেকিং করা দরকার তা করার মত শক্তি আমার তখন ছিল না। তাছাড়া বাচ্চাদের নিয়ে তা রীতিমত অসম্ভব বিধায় যতটুকু পায়ে হেঁটে দেখতে পেলাম তাতেই সন্তুষ্ট হতে হল। সামনে বাজার থেকে অবশেষে কিছু শপিং করে নিলাম। থিম্পু থেকে এখানে অনেক সস্তা।
এখানে বলে নেই যারা শপিং করবেন থিম্পুতে না করে পারো-তে উডেন ব্রীজের আশেপাশের ক্র্যাফট শপ গুলি থেকে করবেন। দামে সস্তা পাবেন।
আমার তখন শরীর খুব খারাপ হতে শুরু করল।তাই কোনমতে উডেন ব্রীজ কভার করে নিয়ে সোজা চলে যাই পারো জেনারেল হসপিটালের এমার্জেন্সি ওয়ার্ডে। হাসি মুখের একজন ডাক্তার চেক আপ শেষে অষুধ প্রেসক্রাইবড করলে তা নিতে যেয়ে দেখি ওদের ডিসপেনসারিতে আমাদের এস.এম.সি র ঔরস্যালাইন।আরও জানিয়ে দেই ভুটানে ডাক্তারি চেক আপ,মেডিসিন, এমনকি অপারেশনও সরকার বিনামূল্যে দেয়। দর্জি বেশ অবাক হল এটা শুনে যে আমরা আমাদের দেশে চিকিৎসা সেবা মূল্যের বিনিময়ে নেই। বিস্মিত ভাবে সে বলল
: ইন ঢাকা, ইউ পে?
উত্তরে মৃদু হাসি দিয়ে মাথা সামান্য কাত করে হাঁ সূচক ভঙ্গি করি। পাহাড়ের কোলে দাঁড়ানো এই ছিমছাম হাসপাতালটা কেন যেন সমরেশ মজুমদারের “উত্তরাধিকার”বইয়ের নামটি হঠাৎ মনে করিয়ে দিল জানি না। এবার আর কোথাও না সোজা হোটেলে যাই। অনিচ্ছা সত্ত্বেও ডিনার খেয়ে অষুধ নেই। রাতে আমার জ্বর থার্মোমিটারের পারদ নিয়ে থামাল ১০৩ এ। কোনমতে রাত কাটে। সকালে ব্রেকফাস্ট নিয়ে সোজা এয়ারপোর্টের পথে।
এয়ারপোর্টে পৌঁছুই বেশ তাড়াতাড়ি। দর্জি আমাদের বিদায় জানায়। আমার হঠাৎ এমন অসুস্থতায় বেচারাও বেশ বিব্রত হচ্ছিল। বিদায় শেষে এয়ারপোর্টে ঢুকি। ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে ভেতরের ক্যাফে তে বসে ক্যাপাচিনোর মগে চুমুক দিয়ে একটু আরাম পেলাম। এরপর দু নম্বর গেটের কাছে অপেক্ষা আর অবশেষে বিদায় ক্ষণের ঘন্টা।
রাজকীয় ড্রুক যখন রানওয়ে দিয়ে ছুটছে এ কতদিনের ভুটান ভ্রমণ নিয়ে ভাবছিলাম। যখন আকাশে নিজেকে ভাসিয়েছি ততক্ষণে প্রিয় ভুটানের কথা খুব মনকে আন্দোলিত করছিল। হাল্কা স্ন্যাকসের আপ্যায়ন নিচ্ছিলাম চোখ পড়ল আবার হিমালয়ে। আজ যেন হিমালয়ের মনটাও খারাপ। চোখ জ্বালা করছিল জ্বরের তীব্রতায় দৃষ্টি ঝাপসা অনুভূত হতে লাগল এক সময়। পাশে বসে থাকা প্রিয় মানুষটার বুকে মাথা রেখে চোখ বুঁজি। আর এক সময় স্পর্শ করি স্বদেশভূমির মাটি। পেছনে পড়ে রইল সৌন্দর্য রাণী, মনোহরী রূপের ভুটানের কলতানপূর্ণ নদী আর তারুণ্যদীপ্ত পাহাড়ের অটল অমোঘ তারুণ্য। স্মৃতির অমূল্য মণিকোঠায় গেঁথে গেল এই চার চারটি দিন। সেই সাথে শেষ হলো আমাদের বর্ণাঢ্য ভূটান ভ্রমণ। আর এই ছিল আমার ভূটান কথন।
(সমাপ্ত)…
Leave a Reply