বিদূষক অরিন কবি
কলকাতা
এই কড়া শীত নামিছে পারদ
শীতবুড়া কহে-” নারদ নারদ!”
পাইয়াছি মজা মর্ত্যে গো আসি,
শীতেগো কাতর মানবেরই রাশি!
ফলটি তাহার কি বা মিলিতেছে?
দন্তে দন্তে ঠুকিয়া চলিছে!
যখন তাহারা স্মরি নারায়ণ,
উপায় করিতে, কিবা প্রয়োজন?
গোবিন্দ আজ পাঠাইলা মোরে
উপায় কহিতে, মানবের কাছে!
ঔষধও আছে উপায়ও সে আছে,
এই কবি রাজা মহর্ষি কাছে।।
স্নান সমাপন করিতে হইলে,
চারিটি প্রকার “ফলো” না করিলে,
শীতে গো কাঁপিবে স্নান সে করিয়া,
ভাবিয়া করিও, ক’রে না কাঁপিয়া!
যতই সে শীত বেড়াক দাপিয়া
পদ্ধতি কহি, ধরিলে চাপিয়া –
প্রথমটি হলো “জলবিন্দুস্নান”
ইহা সু – স্নাতের রাখিবে গো মান।
কলঘরে ঢুকে অঙ্গুলি চুবায়ে,
জলেতে তাহাই বটেক ডুবায়ে,
ছিটায়ে দিও গো গঙ্গাজলসম
হইবে শুদ্ধ পবিত্রতম,
কাঁপিতে হ’বেনা থরথর করি
স্নানটি সারিয়া স্মরিও শ্রীহরি!
দ্বিতীয়রে কহে “নলনমস্কার”
এ পদ্ধতির মহিমা অপার!
স্নানঘরে যে জলনল যায়,
ঘরে না ঢুকিয়া, দূর হতে তায়,
সূর্যসমানলে করি নমস্কার
মিলিবে শুদ্ধি, অনন্ত অপার!
তৃতীয়রে কয় “জলস্মরণম”
স্নানপদ্ধতি, অতি মনোরম!
লেপের মুড়ি সে, আদপে না ত্যাজি,
স্নানসমাপনে হইলে গো রাজি,
নিদ্রাঅন্তে লেপের প্রান্তে
টানিয়াই ফের মন প্রশান্তে
ভাবিয়া লইয়ো – “স্নান শেষ তব
শুদ্ধ চিত্তে দিন কাটাইবো”।-
তাহলেই মেনো পূণ্য সে সম,
স্নান সমাপন হইয়াছে মম!
শেষ চতুর্থ পদ্ধতিটি বটে
” স্নাতপরশন” নামেতেই রটে
স্নাত ব্যাক্তির নিকটে আসিয়া
পরশ করিয়ো মন্ত্র কহিয়া
বোলো বটে তারে, এমন মরমে-
” তব স্নান মম, মম স্নান সমে”
তাহলেই বটে হইবেক স্নান
সফল স্নানের রহিবেক মান।।
যদি না মানব ইহা তুমি মানো
নিউমোনিয়া সে ধরিবেক শুনো!
ডাক্তার বটে কহিবে যে ” নো নো!
বৈকুন্ঠদ্বার নিকটেই জানো!”
অতএব তুমি স্নানযজ্ঞেতে,
এ চারিটি ব্রত, এই পৃথিবীতে –
করিও প্রচার বরফিত শীতে
মিলিবে গো ফল, তাহা বটে ফ্রীতে,
কেউ কদাপি গো কহিবে না হেন –
“স্নান না সারিলে নৎ আহারেণ”
হোক সে গো মাতা, ভার্যা কিংবা,
আপন তনয়া, রক্তবিম্বা,
স্নানমাহাত্ম এরূপে মিলিবে,
বিচরিবে ভবে শিবরূপে জীবে!
এতেক বলিয়া করি বরণন
বিদায় লহিনু স্মরি নারায়ণ!
Leave a Reply