ছবি; সংগৃহীত
নিউজ ডেস্কঃ
সম্পদ দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহারের মাধ্যমে বৈশ্বিক টেকসই প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচকে ভারতকে ছাড়িয়ে গেল বাংলাদেশ। চলতি বছর এই সূচকে বাংলাদেশ ১৭ ধাপ এগিয়েছে, আর ভারত মাত্র তিন ধাপ। ২০২০ সালে ১৮০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৫তম। অপরদিকে ভারতের অবস্থান ১২৭তম।
‘বৈশ্বিক টেকসই প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচক বা গ্লোবাল সাসটেইনেবল কম্পিটিটিভনেস ইনডেস্ক (জিএসসিআই)-২০২০’ সূচকে এই তথ্য উঠে এসেছে।
বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘ, আইএমএফ, ওইসিডি, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করে এটি তৈরি করে সুইজারল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়া যৌথ উদ্যোগ ‘সলএবিলিটি’ এবং থিঙ্কট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান সাসটেইনেবল ইন্টিলিজেন্স। ২০১২ সাল থেকে প্রতি বছর এই সূচক প্রকাশ করে আসছে সংস্থাটি।
জিএসসিআই-২০২০ এ বাংলাদেশের স্কোর ৪৩ দশমিক ৩ পয়েন্ট। গত বছরের তুলনায় স্কোর ৪ দশমিক ২ পয়েন্ট বেড়েছে। অপরদিকে ভারতের স্কোর ৪২ দশমিক ৪ পয়েন্ট। বাংলাদেশের চেয়ে দশমিক ৯ শতাংশ পযেন্ট কম। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত জিএসসিআইয়ের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৩২তম। আর ভারত ছিল ১৩০তম অবস্থানে। ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশ এই সূচকে ধারাবাহিকভাবে উন্নতি করছে।
এবারের সূচকে ভারত ছাড়াও বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের চেয়ে ওপরে অবস্থান করছে। তবে প্রতিবেশী নেপাল, ভুটান ও মালদ্বীপ এখনও বাংলাদেশ থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় নেপাল (৫৩তম) জিএসসিআই সূচকে শীর্ষে রয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভুটান (৫৫তম), এরপর মালদ্বীপ (৬৫তম) এবং শ্রীলংকা (৮৬তম)। ভারতকে (১২৭তম) পেছনে ফেলে এ অঞ্চলে পঞ্চম হয়েছে বাংলাদেশ। তালিকায় পাকিস্তানের অবস্থা ১৭৪তম এবং আফগানিস্তানের ১৮৮তম। বৈশ্বিক এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে সুইডেন। এরপর আইসল্যান্ড, ডেনমার্ক এবং ফিনল্যান্ড।
জিএসসিআই তৈরিতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে প্রাপ্ত ১২৭টি পরিমাণগত সূচক ব্যবহার করে প্রাকৃতিক সম্পদ, সামাজিক সম্পদ ব্যবহারের দক্ষতা, বুদ্ধিভিত্তিক ও উদ্ভাবনী সম্পদ, সামাজিক সুসঙ্গতি ও শাসনসহ বেশ কিছু বিষয় মূল্যায়ন করা হয়েছে। টেকসই প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হল- একটি দেশের বর্তমান সম্পদ ধরে রাখা বা বাড়ানোর ভবিষ্যৎ সক্ষমতা নিয়ে আপস না করেই অন্তর্ভুক্তিমূলক সম্পদ উৎপাদন ও তা বজায় রাখার ক্ষমতা।
সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং প্রাকৃতিক সম্পদের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখিয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্কোর ২০১৯ সালের ৪৮ দশমিক ৭ থেকে বেড়ে চলতি বছর ৬০ দশমিক ৮২ পয়েন্ট হয়েছে। যার অর্থ চলতি বছর বাংলাদেশ সম্পদকে আরও দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করেছে।
এছাড়া প্রাকৃতিক মূলধনে ২০১৯ সালের স্কোর ৩০ দশমিক ৮ পয়েন্ট থেকে বেড়ে ৪০ দশমিক ১৪ পয়েন্ট হয়েছে। এই স্তরটিতে প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাপ্যতা নির্দেশ করে।
যদিও জিএসসিআইতে সামাজিক সম্পদ ও শাসন ব্যবস্থায় বাংলাদেশে আগের বছরের তুলনায় স্কোর কমেছে। সামাজিক সম্পদে ৪১ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট অর্জন করেছে, যা আগের বছর ছিল ৪২ দশমিক ১ পয়েন্ট। চলতি বছর শাসন ব্যবস্থায় ৫৪ দশমিক ২০ পয়েন্ট পেয়েছে, যা আগের বছর ছিল ৫৫ দশমিক ৫ পয়েন্ট। উদ্ভাবনে গত বছরের স্কোর ১৮ দশমিক ৫ পয়েন্ট থেকে সামান্য বেড়ে ১৯ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ মাথাপিছু মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ভিত্তিতে ভারতকে ছাড়িয়ে যাবে।
Leave a Reply