বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ০১:৩৪ পূর্বাহ্ন

সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানকে বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে দাফন

সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানকে বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে দাফন

আমির হোসেন,ঝালকাঠি

চোখের জলে প্রখ্যাত সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানকে চির বিদায় জানিয়েছেন দেশের অগনিত ভক্ত ও পাঠক,স্বজন ও সহকর্মীরা।
আজ ১২ জানুয়ারি মঙ্গলবার নামাজে জানাজা শেষে তাকে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবি কবর স্থানে দাফন করা হয়েছে।
হিমঘর থেকে তাকে জানাজার জন্য তাকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে । সেখানে এই সংবিধান বিশেষজ্ঞের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাকে রিপোর্টার্স ইউনিটি,জাতীয় প্রেসক্লাব ও তার দীর্ঘ সময়ের কর্মস্থল দৈনিক প্রথম আলোতে শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। বরেণ্য এই সাংবাদিকের অকাল প্রয়াণে দেশ হারালো এক আলোকিত কলম সৈনিককে। সারা দেশের মানুষের শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার উজ্জ্বল নক্ষত্রের চির বিদায়ে ছিল মানুষের ঢল।
উল্লেখ্য প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক, সংবিধান বিশেষজ্ঞ,কলাম লেখক মিজানুর রহমান খান (৫৩) গতকাল ১১ জানুয়ারি সোমবার সন্ধ্যা ০৬ টা ০৫ মিনিটে রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
গত ২ ডিসেম্বর মিজানুর রহমান খান’র করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ রিপোর্ট আসে। ৫ ডিসেম্বর তিনি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১০ ডিসেম্বর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করে নিবির পরিচর্যা কেন্দ্রে রেখে চিকিৎসা শুরু করা হয়। ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর আবার করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হলে নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর তাকে সবুজ জোনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখানে তিনি অক্সিজেন সাপোর্টে ছিলেন। ৯ জানুয়ারি থেকে তাঁর অক্সিজেনের চাহিদা বাড়তে থাকে। ওই দিন বিকেল তাঁকে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট(কৃত্রিমভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস) দেওয়া হয় এ সময় তার রক্ত চাপও কমে যেতে থাকে। সোমবার বিকাল সোয়া ৫টার দিকে হার্ট অ্যাটাক হয়। শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হলে তাঁকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। চিকিৎসকদের সকল প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে ১১ জানুয়ারি সোমবার সন্ধ্যা ০৬টা ০৫ মিনিটে এই সংবিধান বিশেষজ্ঞ পরপারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।
বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান অমিরিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সংবিধানের ওপরে জ্ঞান ও দক্ষতা ছিল অনুকরণীয়।
এই বরেণ্য সাংবাদিক ১৯৬৭ সালের ৩১ অক্টোবর ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের নলবুনিয়া গ্রামে আকবর আলী খানের প্রথম সন্তান হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন। নলছিটি শহরের রাজার বাগানে পৈতৃক বাড়িতে কেটেছে তার শৈশব,কৈশোর ও যৌবনের বেশ কিছুটা সময়।নলছিটিতে থাকার সময়ে তিনি বরিশালের আঞ্চলিক পত্রিকায় সংবাদ লেখার মাধ্যমেই শুরু করেন তার সাংবাদিকতা। বিএম কলেজ থেকে কমার্স গ্রুপে লেখাপড়া শেষ করে ঢাকায় চলে যান। এরপরই শুর হয় তার আপাদমস্তক সাংবাদিক হওয়ার সূচনা। বিনয়ী, আন্তরিক, পরোপকারী এই মানবিক মানুষটির অকাল প্রয়াণে দেশের সাংবাদিকতার জগতের এক অপুরণীয় ক্ষতি হলো।
বরেণ্য সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান’র অকাল মৃত্যুতে সরকারের মন্ত্রী, এমপি,রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, প্রথম আলো পরিবার, জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি, বরিশাল প্রেসক্লাব ও ঝালকাঠি প্রেসক্লাব, নলছিটি প্রেসক্লাবসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়ে তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেছেন। মূত্যুকালে মিজানুর রহমান খান মা,স্ত্রী,ছেলে-মেয়ে,ভাই, বোনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার ভাই মোহম্মদ সিদ্দিকুর রহমান খান দৈনিক শিক্ষা ডট কমের সম্পাদক ও ছোট ভাই মশিউর রহমান খান ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




raytahost-demo
© All rights reserved © 2019
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD