রিটন মোস্তফা।।
লক্ষ লক্ষ অথবা কোটি কোটি নক্ষত্র, গ্রহ এবং উপগ্রহের মধ্যে আমাদের পৃথিবীই একমাত্র গ্রহ, যেখানে একমাত্র জীবনের অস্তিত্ব রয়েছে। যেহেতু অন্য কোথাও বিজ্ঞান এখনও জীবনের সন্ধান পায়নি তাই এটা বলতেই পারি যে এই সুন্দর পৃথিবীতেই শুধুমাত্র জীবনের অস্তিত্ব বিরাজমান। এবং এই পৃথিবী জুড়ে রয়েছে বিচিত্র সব জীবন, যেটা একটি সুনির্দিষ্ট চক্র অনুসরণ করে চলেছে। আর জীবদের মধ্যে আমরা সেই প্রাণী যারা আর সব প্রাণীদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা, এবং সব থেকে বুদ্ধিমান প্রাণী, সব থেকে সামগ্রিক, সব থেকে অনুভূতি প্রবণ, এবং সব থেকে আবেগী প্রাণী।
আমাদের মতো এরকম বৈশিষ্ট্য নিয়ে আর কোন প্রাণী এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে আসেনি, আসবেও না হাজার বছরেও। আসলেও ততদিনে আমরা আরও গুণাবলী, আরও আধুনিক, আরও বৈচিত্র্য ধারণ করতে সক্ষম হয়ে যাব।
বলছিলাম মানুষের কথা। সমস্ত পৃথিবীতে নানা বর্ণের, নানান চেহারার, নানান ভাষার মানুষ থাকলেও বৈশিষ্ট্য গত দিক থেকে আমরা এক এবং আর সব প্রাণীদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এবং একই মানসিকতার এক সম্পূর্ণ প্রাণী। আমরা সামাজিক, আমরা বিভিন্ন সমাজে বাস করলেও আমদের সামাজিক বৈশিষ্ট্য আমাদেরকে সব স্থানেই একত্রিত করে রাখে। আমরা একে অপরের উপর যেমন নির্ভরশীল, তেমনি একে অপরের আবেগীয় সম্পর্কের বন্ধনে আবদ্ধ। আমাদের মধ্যে মানবিক গুণাবলী পশুদের থেকে আলাদা করেছে, করেছে মর্যাদাশালী এবং সম্মানিত।
আমাদের আবেগীয় অনুভূতির অন্যতম একটি দিক ভালোবাসা। এই ইমোশনের অন্তর্ভুক্ত হয়ে আমরা একে অপরের সাথে এমন ভাবে জড়িত যে, অন্য সব ব্যাপার গুলো এই অনুভূতির কারণে আলোড়িত হয়।
হ্যাঁ, হয়তো এই অনুভূতির ছিটে ফোটা অন্য প্রাণীদের মধ্যেও আছে, কিন্ত মানুষের মত এতোটা অবশ্যই নয়। আমরা অনুভূতির এই দিকটার কারণে সুখ অনুভব করি যেমন, কষ্টও পাই তেমন। অনুপ্রাণিত হই যেমন তেমন এই অনুভূতির বিপর্যয়ের কারণে আমরা কেউ কেও ধ্বংসের কারণও হয়ে যাই।
এই ভালোবাসার সম্পর্ক মানুষদের মধ্যে এক নিবিড় সম্পর্ক তৈরী করে। বাবার সাথে সন্তানের, সন্তানের সাথে ভাই বোনের, স্বামীর সাথে স্ত্রীর, এভাবে পরিবারের একে অন্যের সাথে, সমাজের এবং রাষ্ট্রীয় ভাবেও আমদের রয়েছে ভালোবাসার সম্পর্ক। রয়েছে বন্ধন।
এই বন্ধন যেখানে মজবুত, সেখানেই তৈরী হয়েছে ভালো কিছু, পবিত্র কিছু , অনুকরণ যোগ্য কিছু।
কিন্ত এই সম্পর্ক যেখানে দুর্বল, সেখানে? সেখানেই ঠিক এর বিপরীত।
আর এজন্যই আজকে আমার এই আলোচনা। এখানেই আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের একে অপরের সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক হওয়া চাই মজবুত, বাবার সাথে সন্তানের, সন্তানের সাথে পিতা মাতার, স্বামীর সাথে স্রীর। ভাই এর সাথে বোনের, পারাপর্শির সাথে অন্য সকলের, সমাজের সাথে সমাজে বসবাস রত অন্য সকল সদস্যদের এবং রাষ্ট্রের সাথে তার প্রতিটি অধিবাসীদের। মোট কথা মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ক হওয়া উচিত সম্পর্কের বিভিন্ন পরিচয়ে আবেগের পজেটিভ সম্পর্ক। তাহলেই আমাদের এই পৃথিবী এখনই যত সুন্দর, এর থেকেও হাজার গুণ সুন্দর হবে। মানুষের পরিচয়, রঙ, আচার সংস্কৃতি যাই হোক না কেন, মানুষের সাথে মানুষের সবার আগে “ভালোবাসার সম্পর্ক নিশ্চিত করতে হবে” ব্যক্তিগত ভাবে শুরু করে সব দিক থেকেই।
আমাদের মানবিক গুণাবলীর সম্পূর্ণ প্রয়োগ থাকতে হবে সব মানুষের প্রতি তো অবশ্যই, পাশাপাশি অন্য জীবদের প্রতিও। আমাদের ভালোবাসার এক পরিপূর্ণ জগৎ রয়েছে, সেখানে ঠাঁই দিতে হবে সকলকেই। সে যে জাতির হোক, যে গোত্রের হোক, এবং যে ধর্মেরই হোক। মানুষের পাশাপাশি সেই জগতে টেনে নিতে হবে অন্য সব জীবগুলোকেও। যাদেরকে নিয়ে তৈরী হয়েছে আমাদের অনিবার্য জীবন চক্র। সুতরাং আমাদের ভালোবাসার সম্পর্কই পারে একমাত্র আমাদেরকে একটি আরও সুন্দর পৃথিবী উপহার দিতে। যার কোনই বিকল্প নেই।
Sent from my Galaxy
Leave a Reply