ফাইল ছবি
নিউজ ডেস্কঃ
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, সাংবাদিকতার মূল বিষয়ই হচ্ছে বস্তুনিষ্ঠতা। সমাজে যেখানে অসংগতি, দুর্নীতি ও সমস্যা আছে- সেসব জাতির সামনে সাংবাদিকদের তুলে ধরতে হবে। পাশাপাশি যত ইতিবাচক দিক আছে, যত শক্তি ও অনুপ্রেরণার উৎস আছে, সেগুলোও মানুষের সামনে উপস্থাপন করতে হবে- যাতে মানুষ উদ্বুদ্ধ হয়।
চাঁদপুর প্রেস ক্লাবের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী ভার্চুয়ালি এ উৎসবে অংশ নেন।
চাঁদপুর প্রেস ক্লাবের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সোমবার দিনব্যাপী এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। এর সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন শিক্ষামন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর মফিজুর রহমান, যুগান্তরের সম্পাদক জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ডা. জেআর ওয়াদুদ টিপু, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান জুয়েল ও ঢাকা পোস্টের সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার। চাঁদপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) গিয়াস উদ্দিন মিলনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এএইচএম আহসান উল্যাহ।
সকালে শোভাযাত্রার মাধ্যমে উৎসবের সূচনা হয়। উদ্বোধন করেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ওসমান গণি পাটোয়ারী। দিনব্যাপী আয়োজনে ছিল আলোচনা, সংবর্ধনা, নবাগত কমিটির অভিষেক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র্যাফেল ড্র। করোনাকালে অগ্রণী ভূমিকা পালন করায় চিকিৎসক, নার্স, সংগঠন ও সাংবাদিকদের সম্মাননা জানানো হয় এ উৎসবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এখন সাংবাদিকতার জগৎ অনেক বিস্তৃত। এ জায়গাটিতে আমাদের অনেক দায়িত্বশীলতার বিষয় রয়েছে। দায়বদ্ধতার জায়গা রয়েছে। সত্যকে সাহসিকতার সঙ্গে প্রকাশ করা, কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় না দেওয়ার বিষয় রয়েছে। আমি আশা করি, এসব জায়গায় সাংবাদিকরা, বিশেষ করে চাঁদপুরের সাংবাদিকরা দায়িত্বশীলতা বজায় রাখবেন।
দীপু মনি বলেন, আমি যেহেতু জনপ্রতিনিধি, আরও অনেক জনপ্রতিনিধি চাঁদপুরে আছেন এবং আমাদের সঙ্গে প্রশাসনের লোকজন কাজ করেন। আপনাদের (সাংবাদিক) দায়িত্ব হিসাবে আমাদের অসঙ্গতি ও ভুলগুলো তুলে ধরে সংশোধন হওয়ার সুযোগ দেবেন। চাঁদপুরকে আরও উন্নত করার জন্য আমরা সম্মিলিতভাবে কাজ করব। তিনি বলেন, চাঁদপুর প্রেস ক্লাবের উন্নয়নে যখন যেটা প্রয়োজন আমাদের পক্ষ থেকে করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, আমি যদি প্রতিদিন সকালে পত্রিকা নিয়ে একটি নেতিবাচক সংবাদ পড়ি, তাহলে আমার সারা দিনের কাজের মধ্যে তার প্রভাব পড়বে। ছোটো হলেও যদি একটি ভালো সংবাদ চোখে পড়ে, তাহলে সেটার কারণে আমি অনুপ্রাণিত হয়ে কাজ করতে পারব। তাই যেসব মানুষ কোনো না কোনোভাবে সমাজের মানুষের জন্য কাজ করছেন তাদেরকে তুলে ধরা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখছেন যুগান্তরের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম
যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, চাঁদপুর প্রেস ক্লাবকে আমি মনে করি চাঁদপুরের সাংবাদিকদের অহংকার। প্রেস ক্লাবটা কী? আমরা কি এটাকে শুধু ক্লাব হিসাবে চিহ্নিত করি? এটা শুধুই আনন্দ ও মিলনমেলা। এ বিষয়টাকে আমি একটু ভিন্নভাবে দেখি। আমি দুই বছর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি। এ সময় আমি দেখেছি, বাংলাদেশের মানুষ যখন নির্যাতিত ও বঞ্চিত হয়, প্রতারিত হয়, ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়, তখন মানুষ হয় সাংবাদিকের কাছে, নতুবা জাতীয় প্রেস ক্লাবে ছুটে আসে। কেন? এজন্য যে, তার বিশ্বাস ওই জায়গায় গেলে আমি আমার কথাটা বলতে পারব। আমি আমার অধিকার ফিরে পাব।
সাইফুল আলম বলেন, চাঁদপুরের অনেক সাংবাদিক রয়েছেন, যারা সারা দেশে কৃতিত্বের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। শুধু চাঁদপুরেই নয়, ঢাকা শহরের পত্রিকা, টেলিভিশন ও অন্যান্য গণমাধ্যমে চাঁদপুরের সাংবাদিকরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এটি আমাদের গর্ব। নিজেকে চাঁদপুরের সন্তান পরিচয় দিয়ে তিনি বলেন, আমি ঢাকায় থাকলেও চাঁদপুরকে অনুভব করি, ভাবি আমার শেকড়টা কোথায় গাঁথা। যখনই আমি চাঁদপুরে আসি, চাঁদপুরের বাতাস আমাকে অন্যরকমভাবে শিহরিত করে।
নারীরা এখন পুরুষের সমানে মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান সাইফুল আলম। তিনি বলেন, করোনার এ সময়ে অনেক মানুষকেই দেখতে পারি না। পরিচিত কাউকে দেখলেই আমার কেন যেন ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করে। মূলত করোনাকালে আমাদের যে মনের ভাব ও ভালোবাসা সেটি অনেক বেশি জাগ্রত হয়েছে।
Leave a Reply