শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৪৫ অপরাহ্ন

কসবায় চকচন্দ্রপুর ইসলামিয়া হাফিজিয়া মাদরাসায় হিফজুল কোরআন বিভাগের ৪ ছাত্রের শেষ ছবক প্রদান

কসবায় চকচন্দ্রপুর ইসলামিয়া হাফিজিয়া মাদরাসায় হিফজুল কোরআন বিভাগের ৪ ছাত্রের শেষ ছবক প্রদান

কসবা প্রতিনিধি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় চকচন্দ্রপুর ইসলামিয়া হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার জেনিথ ইসলাম হিফজুল কোরআন বিভাগে ৪ জন হিফজ শিক্ষার্থীর শেষ ছবক (দাওরায়ে কোরআন) প্রদান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার দুপুরে মাদরাসা হল রুমে অনুষ্ঠিত হয় এই ছবক প্রদান অনুষ্ঠান।
শেষ ছবক প্রদান অনুষ্ঠানে মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি হাজী মো. গোলাম রব্বানীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন কসবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ছামিউল ইসলাম।
মাদরাসার কার্যকরী সদস্য ইকবাল হোসেনের সঞ্চলনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, কসবা প্রেসক্লাব সভাপতি মো. আবুল খায়ের স্বপন, উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা শিবলী নোমানী, উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সহ-সভাপতি বেনজির আহমেদ রাসু, কসবা প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন পলা, মাদ্রাসার সহ-সভাপতি গোলাম ফারুক মাস্টার, মুহতামিম মাওলানা আবদুল হালিম প্রমুখ।
এ সময় অনুষ্ঠানে শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকার ধর্মপ্রাণ মানুষজন উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে অতিথিগন হাফেজ শিক্ষার্থীদের হাতে বিশেষ সম্মাননা তুলে দেন।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মোহাম্মদ শাখাওয়াৎ হোসাইন।

এ সময় বক্তারা বলেন, শিক্ষার্থীরা ইসলামের সর্বোত্তম খেদমত করার প্রত্যয় নিয়ে হাফেজ হয়েছেন এবং আজ শেষ ছবক প্রদান করেছেন । সমাজে নৈতিকতা প্রতিষ্ঠায় হাফেজ শিক্ষার্থীদের অবদান অপরিসীম। তারা এ সাফল্যকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে দ্বীন ও দেশের কল্যাণে ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠান শেষে দেশ,জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির কামনায় দোয়া করা হয় এবং তাবারক বিতরন করা হয়। সবক গ্রহণ শেষে গুরুত্বপূর্ণ নসিহা ও দোয়া পরিচালনা করেন আড়াইবাড়ি কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস ড. ওসমান গণি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অভিভাবকদের উদ্দেশ্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ছামিউল ইসলাম বলেন, একটি সীমিত গন্ডির মধ্যে থেকে হাফেজ শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে। যারা হাফেজ হয়েছেন তারা এই শিক্ষাঙ্গনের বাইরে চলে যাবেন। তখন যেন তার এই শিক্ষার গুনাগুনটা ধরে রাখতে পারে সেই বিষয়গুলো অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে। এই হাফেজ সন্তানটা মাদরাসা ছেড়ে যাওয়ার পর কোন ধরনের ছেলেদের সাথে মিশছে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যেহেতু সীমান্তবর্তী এলাকা অভিভাবকগন খেয়াল রাখতে হবে আপনার হাফেজ সন্তান কোন নেশাখোর বা বখাটে ছেলেদের সাথে মিশছে কিনা। তাহলে আপনার সন্তান একজন হাফেজ হিসেবে যেই ইসলামিক মুল্যবোধ ও যে নৈতিকতা অর্জন করেছিলো তা ভুলে গিয়ে বিপথগামীতায় জড়িয়ে পড়বে। সুতরাং এখান থেকে বের হয়ে সারাজীবন যেন আপনার সন্তান একজন ভাল হাফেজ হিসেবে তার জীবন কাটাতে পারে সেই বিষয়ে সকল অভিভাবকগন সচেতন থাকবেন বলে আশাকরি।
পাশাপাশি এই মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষকগণ কতটুকু যত্নশীল এবং শিক্ষার্থীদের শাসনের নামে যেন অত্যাচার না করা হয় সেই দিকে অবশ্যই পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ সর্বদা খেয়াল রাখতে হবে। সন্তানকে মাদ্রাসায় পাঠান বা স্কুলে পাঠান অভিভাবকগন শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ রাখবেন। এসময় তিনি অভিভাবকদের বলেন, আপনি বা আপনারা মেয়ে সন্তানের প্রতি যত্নশীল হবেন এবং বাল্য বিয়ের ভাবনা মনে আনবেন না। বাল্য বিয়ে কখনো সুফল বয়ে আনেনা। মাদ্রাসায় পড়ুক বা স্কুলে পড়ুক সে মানুষের মতো মানুষ হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। কমপক্ষে এইচএসসি বা সমমান পর্যন্ত লেখাপড়া করাবেন। যেন সে আপনার পরিবারে বোঝা না হয়ে আপনার পাশে দাড়াতে পারে। পড়াশোনা জানা থাকলে সে নিজে টিউশনি করে বা চাকরি করে আপনাদেরও সহযোগিতা করতে পারবে এবং নিজেও প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে। তিনি মাদক ও বাল্য বিয়ে থেকে সন্তানদের নিরাপদে রাখতে সকল অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ করেন।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




raytahost-demo
© All rights reserved © 2019
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD