বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ০৮:১৭ পূর্বাহ্ন

কসবার তানভীর আহাম্মদকে দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীরা খুন করেছে

কসবার তানভীর আহাম্মদকে দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীরা খুন করেছে

নিডস নিউজ ডেক্সঃ

ব্রা‏হ্মণবাড়িয়ার (৩৮) নামের এক যুবককে গত বুধবার রাতে । বৃহস্পতিবার বিকেলে তানভীরের মৃত্যুর খবরে গ্রামের বাড়িতে চলছে মাতম। তানভীরের স্ত্রী, সন্তান ও বৃদ্ধ বাবা তানভীরকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। লাশ দেশে আনার জন্য দাবি জানাচ্ছে তানভীরের পরিবার।
তানভীর আহাম্মদ উপজেলার মেহারী ইউনিয়নের ভল্লভপুর গ্রামের নাঈমুল হক মাস্টারের ছেলে। তিন ভাই ও ছয় বোনের মধ্যে তানভীর সবার ছোট।

নিহত ব্যক্তির পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালে তানভীর দক্ষিণ আফ্রিকায় যান। সেখানে ব্যবসা করতেন। ২০১৩ সালে তানভীর ছয় মাসের ছুটিতে দেশে বেড়াতে এসে উপজেলার চারগাছ গ্রামে বিয়ে করেন। ২০১৬ সালে আবারও ছয় মাসের ছুটিতে দেশে বেড়াতে এসেছিলেন তানভীর। এটাই ছিল তাঁর দেশে আসার শেষ ছুটি। তানভীর দুই কন্যা সন্তানের জনক। বড় মেয়ে মাইশা আক্তারের বয়স সাত বছর আর ছোট মেয়ে তায়েবা আক্তারের বয়স তিন বছর।

তানভীর দক্ষিণ আফ্রিকার নর্থওয়েস্ট প্রদেশের জিরাস্টের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন এবং ওই এলাকায় ব্যবসা করতেন। সম্প্রতি লকডাউনের কারণে ব্যবসা বন্ধ থাকায় তিনি স্থানীয় একটি স্বর্ণের খনিতে খণ্ডকালীন চাকরি নেন, সঙ্গে বাসায় ব্যবসাও করতেন। গত বুধবার রাতে একদল সন্ত্রাসী তানভীরকে খুন করে তাঁর বাসায় লাশ ঝুলিয়ে রাখে সন্ত্রাসীরা। বৃহস্পতিবার সকালে সেই দেশে থাকা তানভীরের ভগ্নিপতি মো. হাসান খান বাসায় এসে তানভীরের লাশ দেখতে পান। পরে স্থানীয় ব্যক্তিদের সহযোগিতায় ওই দেশের পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার স্থানীয় মসজিদের মাঠে জানাজা শেষে হিমঘরে রাখা হয়।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মো. হাসান খান বাড়িতে মুঠোফোনে জানান, সন্ত্রাসীরা তানভীরকে খুন করেছে। এ খবর পাওয়ার পর থেকে বাড়িতে চলছে মাতম।

শুক্রবার নিহত তানভীরের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, স্ত্রী উম্মে ফারহানা স্বামীর মৃত্যুর খবর পেয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। বড় মেয়ে মাইশা আক্তার এখনো বুঝতে পারছে না তার বাবা আর দেশে ফিরে আসবে না। ছোট মেয়ে তায়েবা বাবাকে এখনো দেখেনি। বোনেরাও আসছেন ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে। বাড়িটিতে কান্নার রোল পড়ে যায়।
স্ত্রী উম্মে ফারহানা বলেন, তাঁর স্বামী মারা যাওয়ার আগের দিনও ফোন করে বলেছিল, দেশে আসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের জন্য আসতে পারিনি। করোনাভাইরাস শেষ হলে দেশে আসার কথা ছিল। কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার ছোট মেয়েটি তার বাবাকে দেখেনি। অন্তত মৃত্যুর মুখটিও যেন দেখতে পারে মেয়েটি।

তানভীরের মা নেই। বাবা অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। পুত্রকে হারিয়ে নির্বাক। তিনি বলেন, ছোট ছেলেকে দেখার খুব ইচ্ছা ছিল। কিন্তু দেখতে পাইনি। তার লাশটিও যদি দেখে যেতে পারতাম। লাশ দেশে আনার ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
তানভীরের বড় ভাই মো. ইকবাল হোসেন বলেন, আফ্রিকায় সন্ত্রাসীরা তাঁর ভাইকে খুন করেছে। সন্ত্রাসীরা তাঁর ভাইয়ের লাশ বাসায় ঝুলিয়ে রেখেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশও জানিয়েছে, তাঁকে খুন করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি তানভীরের লাশ দেশে আনার ব্যবস্থা করতে সরকারের কাছে দাবি জানান।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




raytahost-demo
© All rights reserved © 2019
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD