ছবিঃসংগৃহীত
নিউজ ডেস্কঃ
দীর্ঘদিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেই দুর্দান্ত সিরিজ জয় উপহার দিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। প্রথম ম্যাচের পর দ্বিতীয় ম্যাচেও বড় জয় পেয়েছে টাইগার বাহিনী। ফলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয়ের স্বাদ পেল টাইগাররা। অন্যদিকে অধিনায়ক হিসেবে প্রথম সিরিজ জয়ের স্বাদ পেলেন তামিম ইকবাল।
ক্যারিবিয়ানদের দেওয়া ১৪৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন কুমার দাস। তবে দলিয় ৩০ রানেই প্রথম ধাক্কা খায় টাইগাররা। ২২ রান করে সাজঘরে ফেরেন লিটন। বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হন তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা শান্ত। তার ব্যাট থেকে আসে ১৭ রান।
তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন অধিনায়ক তামিম। তাকে সঙ্গ দেন আরেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করার পরপরই অবশ্য ফিরে যান তামিম। তিনি থামেন ঠিক পঞ্চাশ রানে। এরপর আর কোনো উইকেট হারায়নি টাইগাররা। চতুর্থ উইকেটে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন সাকিব ও মুশফিক। সাকিব ৪৩ ও মুশফিক ৯ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে, ম্যাচের শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে টস জিতে ব্যাটিং নেওয়া উইন্ডিজ। তাদের খেলার গতির কোনোভাবেই ওয়ানডে মেজাজের ছিল না। সুনিল অ্যামব্রিসের সঙ্গে ইনিংস শুরু করেছেন অভিষিক্ত কেয়র্ন ওটলি। দুই দিক থেকে মুস্তাফিজুর রহমান আর রুবেল হোসেন তাদের চেপে ধরেন।
বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন দ্য ফিজ। ম্যাচের ৫ম ওভারে তার বলে সুনিল অ্যামব্রিসের ব্যাট ছুঁয়ে আসা বলটি দারুণ দক্ষতায় তালুবন্দি করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ১০ রানে প্রথম উইকেট হারায় উইন্ডিজ।
এরপর ইনিংসের ১৪তম ওভারের প্রথম বলে দ্বিতীয় উইকেট শিকার করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দলীয় ৩৬ রানে মিরাজের বলে এক্সট্রা কাভারে অভিষিক্ত কেয়র্ন ওটলির (২৪) ক্যাচ নিয়েছেন তামিম ইকবাল। একই ওভারের চতুর্থ বলে আবারও শিকার ধরেন মিরাজ। সরাসরি বোল্ড করে দেন ২২ বলে ৫ রান করা জসুয়া ডি সিলভাকে। ৩৭রানে তৃতীয় উইকেট হারায় উইন্ডিজ।
পরের ওভারে আবারও বিপদ। বোলার সাকিব আল হাসান। ১৫তম ওভারের শেষ বলে আন্দ্রে ম্যাককার্থিকে (৩) সরাসরি বোল্ড করে দেন স্বরূপে ফেরা বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার। ১৮তম ওভারে আবারও উইন্ডিজের বিপর্যয়। রান নেব কি নেব না করতে করতে রান-আউট হয়ে যান কাইল মেয়ার্স। মাত্র ৪১ রানে ক্যারিবীয়দের ইনিংসের অর্ধেক শেষ হয়ে যায়।
এরপর অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদ আর এনক্রুমা বনার হাল ধরার চেষ্টা করেন। দলীয় ৬৭ রানে আবারও শিকারি মেহেদী মিরাজ। তার বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েন জেসন মোহাম্মদ (১১)।
পরবর্তী শিকারি হাসান মাহমুদ। ২৫তম ওভারের চতুর্থ বলে ২৫ বলে ২০ রান করা এনক্রুমা বনারকে সরাসরি বোল্ড করে দেন এই পেসার। উইন্ডিজের এরপর কিছু আর করার ছিল না। তাদের গুটিয়ে যাওয়া ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র। ৩০তম ওভারের চতুর্থ বলে নিজের তৃতীয় শিকার ধরেন মেহেদী মিরাজ। এলবিডাব্লিউ হয়ে ফিরেন রেমন রিফার (২)। দলের রান তখন মাত্র ৮৯। অতিথিরা শেষ পর্যন্ত একশ ছুঁতে পারবে কিনা সেই শংকা পেয়ে বসে।
তবে রোভম্যান পাওয়েল আর আলজারি জোসেফের সৌজন্যে তিন অংক ছুঁয়ে ফেলে অতিথিরা। ৯ম উইকেটে দুজনে গড়েন ৩২ রানের জুটি। দলীয় ১২০ রানে আলজারি জোসেফকে (১৭) লিটন দাসের গ্লাভসবন্দি করে জুটি ভাঙেন মুস্তাফিজুর রহমান।
উইন্ডিজের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকতে খানিকটা সময় লাগছিল টাইগারদের। উইকেটে গেড়ে বসেছিলেন রোভম্যান পাওয়েল। তাকে সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন শেষ ব্যাটসম্যান আকিল হোসেন। শেষ পর্যন্ত ৬৬ বলে ৪১ রান করা পাওয়েলকে নিজের চতুর্থ শিকার পরিণত করে ক্যারিবীয়দের ইনিংসে ইতি টানেন মেহেদি মিরাজ। ৪৩.৪ ওভারে ১৪৮ রানে অল-আউট হয় উইন্ডিজ।
সিরিজের দ্বিতীয় ওয়াডেতে আজ শুক্রবার বাংলাদেশ নেমেছে অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে। অন্য দিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশে আরও একজনের অভিষেক হয়েছে। পেসার একজন কমিয়ে ব্যাটিংয়ে শক্তি বাড়িয়েছে তারা। জায়গা হারিয়েছেন পেসার শেমার হোল্ডার। তার জায়গায় সুযোগ পেয়েছেন ৩১ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান কেয়র্ন ওটলি। যাকে আজ ওপেন করতে দেখা গেছে। গত ম্যাচে উইন্ডিজের ৬ ক্রিকেটারের অভিষেক হয়েছিল।
বাংলাদেশ দল : তামিম ইকবাল, লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, সৌম্য সরকার, মেহেদী হাসান মিরাজ, রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল : জেসন মোহাম্মেদ (অধিনায়ক), সুনিল আমব্রিস, জশুয়া দা সিলভা, আন্দ্রে ম্যাককার্থি, এনক্রুমা বনার, কাইল মেয়ার্স, রভম্যান পাওয়েল, কেয়র্ন ওটলি, রেমন রিফার, আলজারি জোসেফ, আকিল হোসেন।
Leave a Reply