আবু সায়েম মোহাম্মদ সা’-আদাত উল করীম:
জামালপুর সদর সাব রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। সোমবার ১৫ মার্চ রাতে সাব রেজিস্ট্রারের এজলাসের জানালার গ্রিল কেটে ভেতরে ঢুকে চারটি কক্ষের সবগুলো আলমিরা ও টেবিলের ড্রয়ারের তালা ভেঙে বিপুল পরিমাণ দলিল নথিপত্র তছনছ করেছে। তবে কি পরিমাণ নগদ টাকা ও দলিল নথিপত্র চুরি হয়েছে তা নিশ্চিত হতে পারেননি সাব রেজিস্ট্রার।
সূত্রে জানা যায়, জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ক্যাম্পাসে তিনতলা ভবনের নিচতলায় সদর সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের কর্মচারীরা ১৬ মার্চ সকালে অফিসে এসে মেইন কেচিগেট খোলা এবং ভেতরে দলিল ও নথিপত্র তছনছ দেখতে পেয়ে সাব রেজিস্ট্রারকে খবর দেন। সাব রেজিস্ট্রার মো. মাহবুব হোসেন তার কার্যালয়ে যান। এ সময় তার এজলাসের চেয়ার সংলগ্ন জানালার গ্রিল কাটা এবং ভেতরে তার কক্ষসহ চারটি কক্ষের ১৯টি আলমিরার তালা ভাঙা এবং সবগুলো টেবিলের ড্রয়ারের তালা ভাঙা দেখতে পান। পরে গত রাতের নৈশপ্রহরী রুহুল আমীনকে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনা সম্পর্কে কিছুই বলতে পারেননি। সংবাদ পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
ঘটনাস্থলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দুর্বৃত্তরা চারটি কক্ষের ১৯টি আলমিরাসহ সবগুলো টেবিলের ড্রয়ারের তালা ভেঙে বিপুল পরিমাণ দলিল ও নথিপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে রেখে গেছে। রেকর্ড কক্ষেরও অনেক দলিল ও নথিপত্রও তছনছ করেছে দুর্বৃত্তরা। ধারণা করা হচ্ছে দুর্বৃত্তরা ট্রেবিল ও আলমিরার ড্রয়ারে থাকা বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা ও গুরুত্বপূর্ণ দলিল, নথিপত্র চুরি করে নিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে সদর থানায় মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। গুরুত্বপূর্ণ এই সরকারি দপ্তরে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনাটি অন্যান্য সরকারি দপ্তরসহ বিভিন্ন মহলে বেশ চাঞ্চল্য ও আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। এই চুরির ঘটনা জানাজানি হলে বিপুল সংখ্যক উৎসুক সাধারণ মানুষ ১৬ মার্চ সকালে সাব রেজিস্ট্রারের দপ্তরে ভিড় করেন।
সদর সাব রেজিস্ট্রার মো. মাহবুব হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ধারণা করা হচ্ছে একাধিক দুর্বৃত্ত রাতের কোন এক সময় দীর্ঘক্ষণ সময় ধরে ভেতরে অবস্থান করেছে। অফিসে খুব বেশি নগদ টাকা ছিল না। প্রতিদিনের হেবা দলিল ফি, দলিল ফেরৎ ফি ও নকলনবীশদের পারিশ্রমিক তহবিলের কিছু নগদ টাকা চুরি হয়েছে বলে ধারণা করছি। কোন গুরুত্বপূর্ণ দলিল ও নথিপত্র চুরি হয়েছে কিনা তা এখনি বলা যাচ্ছে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। নৈশপ্রহরী রুহুল আমীন আমাদের হেফাজতে আছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে মুখ খুলছে না।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে বলেন, চুরির ঘটনায় সাব রেজিস্ট্রার থানায় অভিযোগ করবেন বলে আমাকে জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে মামলা দায়ের হওয়ার পর ওই দপ্তরের নৈশপ্রহরী রুহুল আমীনকে জিজ্ঞাসাবাদসহ ঘটনার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।
Leave a Reply