ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহের ত্রিশালে নিজের শিশু সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যা করে খাটের নিচে লুকিয়ে রাখেন ঘাতক মা। বিষয়টি জানাজানি হলে ঘাতক মাকে গ্রেপ্তার করে ত্রিশাল থানা পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ত্রিশাল উপজেলার বালিয়ারপাড় গ্রামের রাজিবুল ইসলাম ১২ বছর আগে মাহমুদা খাতুনকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে দুটি সন্তান জন্ম নেয়। বছর খানেক আগে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া লাগলে মাহমুদা তার বাবার বাড়ি চলে যান।
এই ফাঁকে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই কাকলী নামের এক নারীকে বিয়ে করেন রাজিবুল ইসলাম। প্রথম স্ত্রী মাহমুদা কয়েক মাস পর রাজিবের ঘরেই ফিরে আসেন। একসঙ্গে দুই স্ত্রী নিয়েই চলছিল রাজিবের সংসার জীবন। পরে সংসারে শুরু হয় অশান্তি। কাকলী বর্তমানে ৬ মাসের অন্তসত্ত্বা।
গতকাল দুপুরে সৎ মায়ের রান্না করা তাল খেতে চায় মাহমুদার শিশু সন্তান মাজহার। সৎ মা তাল দিতে আপত্তি করায় নিজের মায়ের কাছে বায়না ধরে সে। নিজের মা সন্তানকে শাসিয়ে নিভৃত করলেও অবুঝ শিশুর মন মানেনি। তাই সে তার বাবার কাছে গিয়ে তাল খেতে চেয়ে আবদার করলে সৎ মায়ের কাছ থেকে তার বাবা রান্না করা তাল খাওয়ালে শিশু মাজহার তৃপ্ত হয়। এ ঘটনায় মাহজারের মা তার স্বামীর প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে ঝগড়া করে।
এরপর বাড়িতে আসা ফেরিওয়ালার কাছ থেকে বেলুন কিনে দেওয়ার বায়না করে মাজহার। এতে তার মা মাহমুদা তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে খাটের নিচে লুকিয়ে রাখেন। সবাই যখন ছোট মাজহারের খোঁজ করছিল তখন মা নিজেও বিভিন্ন স্থানে খোঁজা শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি নিজেই বলেন, ‘মাজহার খাটের নিচে ঘুমিয়ে আছে।’এ সময় শিশু মাজহারের দাদী খাটের নিচে মাজহারের লাশ দেখতে পান।
ঘটনা জানাজানি হলে এলাকাবাসী ত্রিশাল থানা পুলিশকে খবর দিলে তারা গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। গতকাল রাতে ময়মনসিংহ ডিবি পুলিশ ও ত্রিশাল থানা পুলিশ মাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদে সন্তান হত্যার ঘটনার বিবরণ দেন মাজহারের মা মাহমুদা।
ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অফিমাহমুদুল ইসলাম এ ঘটনার সত্যতার স্বীকার করে বলেন, ‘শিশু মাজহারের মাকে গ্রেপ্তারের পর ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার ব্যাপারে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
Leave a Reply