তোয়াবুর রহমান, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধিঃ
দেশের নারীরা যখন সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে তখনও বাধ্য হয়ে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে বিয়ের পিড়িতে বসতে হচ্ছে অনেক কিশোরীকে। আইন রয়েছে বটে কিন্তু প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বাল্য বিবাহ পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। অভিভাবকদের অসচেতনতা, কন্যা শিশুর প্রতি অবহেলা সুলভ দৃষ্টি, দারিদ্র্য, তথাকথিত “ভালো ছেলে” পাবার লোভ, ইত্যাদি নানা কারণে এসব বিয়ে এখনও সংগঠিত হচ্ছে। জাপানভিত্তিক বেসরকারী উন্নয়ন সংগঠন হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড দীর্ঘদিন থেকে বোদা উপজেলার চন্দনবাড়ি ইউনিয়নে প্রতিবছর গড়ে ৫৫ জন মেয়েকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে তাদের লেখাপড়া অব্যাহত রাখা ও বাল্যবিবাহকে “না” বলার ভরসা জাগিয়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। সম্প্রতি এই বৃত্তি গ্রহণ অনুষ্ঠানে আসা মেয়েরা তাদের নিজেদের সমস্যা বোদা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড এর প্রোগ্রাম অফিসার মালেকা বেগম এর নেতৃত্বে ৫১ জন মেয়ের পক্ষ থেকে লিখিত চিঠিগুলো উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর কার্যালয়ে গিয়ে তাঁর হাতে তুলে দেয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া সুলতানা সাদিয়া, ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের শাম্মি আক্তার, ঠাকুরগাঁও সোশ্যাল পলিটেকনিকের সুরভী আক্তার, বোদা মহিলা মহাবিদ্যালয়ের মোনালিসা আক্তার আইরিন, রুমা বেগম এবং পাথরাজ সরকারি কলেজের প্রার্থনা ফাহমিদা ইভা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর হাতে চিঠিগুলো পড়ার অনুরোধ জানানো হয়। মেয়েদের এই অভিনব উদ্যোগকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্বাগত জানান এবং সবগুলো চিঠি পড়ে তাঁর পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সহায়তার আশ্বাস প্রদান করেন।
উল্লেখ্য যে, এই মেয়েরা তাদের চিঠিগুলোতে বাল্যবিবাহ রোধ, যাতায়াত এর জন্য সহজ শর্তে সাইকেল ঋণ প্রদান, শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন যানবাহনে হাফ ভাড়া, বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ করে পড়ালেখার সুযোগ সৃষ্টি, তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাবার পথগুলো বর্ষাকালে কর্দমাক্ত থাকায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে সেগুলোর মেরামত, গ্রামে পড়ালেখার সুবিধার্থে লাইব্রেরী ও গবেষণাগার, কারিগরি শিক্ষার জন্য হস্তশিল্প ও কম্পিউটার প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা, ইত্যাদি নিশ্চিতকরণের অনুরোধ করেন।
Leave a Reply