নিউজ ডেস্কঃ
মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর এক ও দুই নম্বর পিয়ারে ৩৮তম স্প্যান ‘ওয়ান-এ’ বসানোর প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং কারিগরি সমস্যা দেখা না দিলে আজ শনিবার স্প্যানটি বসানো হবে। এতে সেতুর পাঁচ হাজার সাত মিটার দৃশ্যমান হবে। তবে কোনো জটিলতা দেখা দিলে একদিন পিছিয়ে আগামীকাল রোববার স্প্যানটি বসানো হবে। পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় এই তথ্য জানান।
প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের জানান, স্প্যানটি ১৬ নভেম্বর বসানোর কথা ছিল। তবে নির্ধারিত পিয়ার দুটির একটি ডাঙায় অপরটি নদীতে থাকায় ড্রেজিং করে পিয়ার দুটির মাঝের স্থানটি স্প্যানবাহী ভাসমান ক্রেনের চলাচলের উপযোগী করতে হয়। এরপর কারিগরি অন্যান্য বিষয় প্রস্তুত করতে আরো কয়েকদিন সময় লেগে যায়। এখন স্প্যানটি বসানোর জন্য প্রস্তুত। আজ শনিবার সকাল ৯টায় কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ভাসমান ক্রেন তিয়াইন-ই ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৩৮তম স্প্যানটি নিয়ে নির্ধারিত পিয়ারের উদ্দেশে রওনা হবে। পরবর্তী প্রক্রিয়ায় কারিগরি সমস্যা না দেখা দিলে, আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এদিনই স্প্যানটি বসিয়ে দেওয়া হবে।
স্প্যানটি বসানো হলে চলতি মাসে মোট তিনটি স্প্যান বসানো সম্ভব হবে। আর বর্তমান মাসেই ১০ ও ১১ নম্বর পিয়ারে ৩৯তম স্প্যান ‘২-ডি’ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। ডিসেম্বরে ১১ ও ১২ নম্বর পিয়ারে ৪০তম স্প্যান ‘২-ই’ ও ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারে ৪১তম স্প্যান স্প্যান ‘২-এফ’ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হলো ৩৭টি স্প্যান। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর পাঁচ হাজার ৫৫০ মিটার অংশ। ৪২টি পিলারে দেড়শ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে সব কটি পিয়ার এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।
ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর আগামী বছর খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
Leave a Reply