ড.গৌরী ভট্টাচার্য্য
ছোট্ট একটি শব্দ ‘মন’, মাত্র দুটি অক্ষর নিয়ে গঠিত।
‘ম’ এবং ‘ন’ অর্থাৎ মন। যে শব্দের অর্থ বিশ্লেষণ করা দুরূহ ব্যাপার। মনের ব্যাপ্তি আকাশ তুল্য,যার কোন কিনারা খুঁজে পাওয়া যায় না। মন কি চায় আর কি না চায় তার হিসেব মেলানো খুবই কঠিন।জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মনে কতো কি ছাপ পড়েছে,মন কতো দিকে ছুটেছে, কতো কি ভুলেছে,কতো কি স্থায়ীভাবে ধরে রেখেছে তার কোন নির্দিষ্ট সীমারেখা নেই। মনের ভিতরেই উঠে ঝড়তুফান,মনের ভিতর বিরাজ করে আলো, অন্ধকার, শান্তি,অশান্তি, সুখদুঃখ সবই। মন কখনো দূঃখে,অপ্রাপ্তিতে যেমন জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যায়,তেমনই কখনো আশাতীত প্রাপ্তির আনন্দে দিশেহারা হয়ে উঠে, অহংকারী হয়ে উঠে,অশান্ত হয়,আরো অধিক পাওয়ার আশায় লোভী মানুষে পরিণত হয়,যেনতেন ভাবে সফল হতে উপায় খুঁজে। পাপের পথ অবলম্বন করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেনা। এত সবকিছুর মধ্যদিয়েই দেহ চালিত হয়ে থাকে মনের ইচ্ছে অনুযায়ী।
সত্যিকার অনুভবে মনকে বাদ্যযন্ত্রের মতোই মনে হয়। সঠিক সুরে সাধন করলে মন আলোর পথে, সত্যের পথে এগুবে,নিশ্চিত। আর ভুল সুরে কিংবা অসুরে মন সাধিত হলে অন্ধকারের পথে, পাপের পথে ঘুরতে থাকবে অনবরত।মনের জোড়েই দূঃখ সাগর পাড়ি দেওয়া যায়।সত্যজ্ঞান ও সৌন্দর্যের সুরে মনের সাধনা করতে পারলে মন পবিত্র ও সুন্দর থাকে,এবং সেই মনই মানবিক হয়। সঠিক সুরে সাধিত মনের সকল মানুষগুলির সভ্যতা,সংস্কৃতি, চরিত্র ওপরের দিকেই থাকে।আর অসুর, অর্থাৎ ভুল সুরে সাধিত মনের মানুষগুলির অন্তর থেকে নির্বাসিত হয়ে যায় মানবতা।অন্ধকারে নিমজ্জিত হয় তাদের সভ্যতা, সংস্কৃতি।
Leave a Reply