নিউজ ডেস্ক।।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নাম ও মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করতেন আবু হানিফ তুষার ওরফে হানিফ মিয়া (৩৯)। যাদের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ তাদের টার্গেট করতেন। পরে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর নিকটাত্মীয় পরিচয় দিয়ে ৫০ থেকে ৩০০ কোটি টাকা দাবি করতো।
সাক্ষাৎ করতে যাওয়ার সময় দামি হোটেলে যেতেন দামি গাড়ি নিয়ে। ইতোমধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাশী ১০ থেকে ১২ জনের সঙ্গে এই ব্যক্তির যোগাযোগের প্রমাণ পাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, অভিযুক্ত আবু হানিফ দীর্ঘদিন প্রধানমন্ত্রীর নিকটাত্মীয় পরিচয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন সংসদীয় আসনে মনোনয়ন প্রাপ্তির মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে অনেকের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ দাবি করেন। এছাড়া চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন। আর এসব কাজে বিভিন্ন সময় নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করতেন হানিফ।
তিনি বলেন, হানিফ দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন মোবাইল নম্বর প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের নামে সেইভ করতেন। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন অ্যাপস থেকে প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্য সেজে নিজ চক্রের সদস্যদের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করতেন। বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিজের ছবি এডিট করে বসাতেন। বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবিও তুলতেন হানিফ। সেগুলো দেখিয়েও প্রতারণা করতেন।
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, এইচএসসি পাস হলেও আবু হানিফ একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন বলে মিথ্যা পরিচয় দিতেন। ২০০৮ সালে মোটরপার্টসের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পরিবহন খাতে দেশের বিভিন্ন রুটে তুষার এন্টারপ্রাইজ পরিবহন নামে তার বেশ কয়েকটি বাস ও নিজের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য প্রাইভেটকার রয়েছে। তিনি ঢাকার নাখালপাড়া এবং ধানমন্ডি এলাকায় দলীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন বলে মিথ্যা প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন।
র্যাবের পরিচালক বলেন, ২০১৪ সালে সুপরিচিত একজন রাজনীতিবিদের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে পরিচয়ে তার প্রতারণার শুরু। তখন থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কৌশলে রাজনৈতিক, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির কাছে যাওয়া শুরু করেন, তাদের সঙ্গে ছবি তুলতে থাকেন। প্রতারণার কাজে এসব ছবি ব্যবহার করতেন। ২০১৫ সালে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে সেসব ছবি আপলোড শুরু করে নিজের গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানোর চেষ্টা করতে থাকেন হানিফ।
তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায়। এই এলাকা থেকে সে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলো বলেও জানায় র্যাব।
Leave a Reply