রশমি আফগান
একটা রাস্তা পড়ে আছে চিৎ হয়ে
কড়া রোদে পুড়ে
মেঘে মেঘে ভিজে
শিশিরে স্নান সেরে
চকচকে ঠোঁটে হেসে ওঠে খুব সকাল।
কালো পিচ-ঘামে কখনো হিঁসহিঁসিয়ে আসে অজগরের মতো
দামপাড়া “ছ-মিলের”পেরেকে আঁটা সাইনবোর্ড ঝোলানো বুকে
একটি যুবক তালগাছ হেসে ওঠে গোল গোল ঠোঁটে
রাস্তাটির নাম জানা নেই…
সবুজ শাড়ি পড়া সুস্মিতা মেয়ের মতো
নেচে নেচে এগোয় কুমড়ো লতা
ধুলিমাখা সজনে – আমড়া – বরই নাম না জানা বনফুল
এঁকে রাখে অগোছালো ছবি কোমরের ভাঁজে ভাঁজে
একটি বাড়ি – ফর্সা উঠোন
সুপারি ঘেরা চোখের আড়াল বোঝে খিদে খিদে মন
সোনালি আদর খ্যালে জং ধরা চালে
দুষ্ট বকুল দুলায় বাতাস
ধরে আনে দোয়েলের শিস
রাস্তাটি উদাস…
রুগ্ন ঝুপড়িতে ধোঁয়া ওঠে নিয়ম করে
চৈতালি বাতাস আর কুয়াশার তলে এখানে
গাঢ় হয় রাত চায়ের কাপে
টুংটাং রিক্সা, অটোগুলো জেগে থাকার মহড়া দেয় আরো কিছুক্ষণ
জোনাকি-ঝিঁঝিঁ-রুপালি মুখের মায়া অপরূপ
জেগে থাকে হুতোম-জলজ শামুক-মসজিদের টিমটিম আলো
রাস্তাটি নিশ্চুপ…
অদূরে সোমবারের খোলা হাট
ডিমপাড়া হাঁস – কাউনের চাল – পুঁইশাকের তলে খুচরো সদাই
চটের ব্যাগ ধরা হাতে অল্প কাঁপন
ভ্যানভরা পুলিশ, ভোঁ ভোঁ মাছি – অগণিত উৎসুক চোখ –
নুন – জল – ভিড় ফেলে
রাস্তাটি পড়ে আছে চিৎ হয়ে
বুকে যুবকের লাশ… অজ্ঞাত
রাস্তাটি অবিরত …
রাস্তাটি পড়ে আছে চিৎ হয়ে
বুকে যুবকের লাশ… অজ্ঞাত
রাস্তাটি অবিরত …