শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৫:২৮ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনে আইন মন্ত্রী আনিসুল হক বে-সরকারি ভাবে নির্বাচিত কসবায় ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ আহত-৪ কসবায় এলজিইডি’র শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান আগরতলায় স্রোত আয়োজিত লোকসংস্কৃতি উৎসব কসবা প্রেসক্লাব সভাপতি’র উপর হামলার প্রতিবাদে মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সভা কসবায় চকচন্দ্রপুর হাফেজিয়া মাদ্রাসার বার্ষিক ফলাফল ঘোষণা, পুরস্কার বিতরণ ও ছবক প্রদান শ্রী অরবিন্দ কলেজের প্রথম নবীনবরণ অনুষ্ঠান আজ বছরের দীর্ঘতম রাত, আকাশে থাকবে চাঁদ বিএনপি-জামাত বিদেশীদের সাথে আঁতাত করেছে-কসবায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ১৩ দিনের জন্য ভোটের মাঠে নামছে সশস্ত্র বাহিনী

আজ অমর একুশে

ছবি: সংগৃহীত
নিউজ ডেস্কঃ

অমর একুশে আজ। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। আজ আমাদের ভাষা আন্দোলনের ৬৯ বছর পূর্ণ হলো। ১৯৫২ সালের আজকের দিনে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবিতে তরুণ ছাত্র-যুবকের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ঢাকার রাজপথ। তাদের সেই সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগ জাতি হিসেবে আমাদেরকে আজ পৃথিবীর ইতিহাসে অবিস্মরণীয় করেছে।

বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে ২০০০ সাল থেকে প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে সারা বিশ্বে। আমাদের দেশে এটি ভাষাশহীদ দিবস হিসেবেও পরিচিত।

বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে আজ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হবে ভাষা আন্দোলনে শহীদ সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউরদের। শ্রদ্ধা জানানো হবে ভাষা আন্দোলনের উৎসপুরুষ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, সংগঠক প্রফেসর আবুল কাসেম থেকে শুরু করে ভাষাসৈনিক মোহাম্মদ তোয়াহা, আব্দুল মতিন, গাজিউল হক, অলি আহাদ, শামসুল আলম, গোলাম মওলা, আব্দুল গফুর, আনোয়ারুল হক খান, আলী আজমল, ইব্রাহিম তাহাসহ ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী জানা-অজানা সবাইকে।

আজ দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, প্রতিটি শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হবে। প্রতিটি শহীদ মিনার ভরে উঠবে ফুলে ফুলে। মানুষের ঢল নামবে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। ঢাকার সব অলিগলি রাজপথ থেকে খালি পায়ে ফুল হাতে মানুষের মিছিল আজ ছুটবে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ-সংলগ্ন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে। তাদের কণ্ঠে ধ্বনিত হবে ভাষাশহীদদের স্মরণে লেখা গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি’।

রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি হরতালের ডাক দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। আলাদা কর্মসূচি গ্রহণ করে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদও। হরতাল প্রতিহত করতে সরকার ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে এক মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে।

১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা হবে কিনা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ২০ ফেব্রুয়ারি বৈঠকে বসেন ভাষা আন্দোলনকারী নেতৃবৃন্দ। বৈঠকে নেতৃবৃন্দের মধ্যে বিভক্তি দেখা দেয়। ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমতলায় ছাত্রসমাবেশের কর্মসূচি ছিল। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা নিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে ছাত্রনেতাদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দেয়ায় শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয় পরের দিন অর্থাৎ ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাবি আমতলার সমাবেশে এ বিষয়ে উপস্থিত ছাত্রদের মতামত নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে রাতেই অনেক ছাত্রনেতা পরের দিন ১৪৪ ধারা ভাঙ্গার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রস্তুতি নিয়ে রাখেন।

২১ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকেই ছাত্ররা আসতে থাকে আমতলায় (বর্তমান ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ইমার্জেন্সি বিভাগের সামনের মাঠ)। বেলা ১১টায় বিস্ফোরণোন্মুখ ছাত্র-যুবকদের সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বক্তব্য রাখেন শামসুল হক, মোহাম্মদ তোয়াহা, কাজী গোলাম মাহবুব, খালেক নওয়াজ চৌধুরী, শাহাবুদ্দীন আহমদ খালেদ, আব্দুল মতিন। ঘণ্টাখানেক সভার কাজ চলার পর সভাপতির বক্তব্যে গাজিউল হক ১৪৪ ধারা ভাঙ্গার পক্ষে মত দেন। এতে সম্মতি দেয় উপস্থিত সব ছাত্র-জনতা।

পাঁচজন করে ছাত্র বের হলে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ হয়। ১০ জনের প্রথম গ্রুপের নেতৃত্ব দেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র আলী আজমল। তাকে প্রথম গ্রেফতার করা হয়। এভাবে দ্বিতীয় ১০ জনের গ্রুপটির নেতৃত্ব দেন ইসলামী ভ্রাতৃসংঘের নেতা ইব্রাহিম তাহা ও আব্দুস সামাদ, তৃতীয় দলের নেতৃত্ব দেন আনোয়ারুল হক ও আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ। তাদের সবাইকে গ্রেফতার করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ছাত্রদের পুলিশ ঘেরাও করে রাখে।

বেলা সাড়ে ৩টার দিকে মেডিক্যাল কলেজ এলাকায় প্রথম ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে পুলিশ। এতে ছাত্ররা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। বিকেল ৪টায় মেডিক্যাল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে নিহত হন রফিকউদ্দিন আহমদ (তার নাম মুহম্মদ সালাহুদ্দীন নিয়ে বিভ্রান্তি আছে)। রাত ৮টার পরে আহতদের মধ্যে মারা যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবুল বরকত এবং গফরগাঁওয়ের আব্দুল জব্বার। সাংবাদিক মোদাব্বের সে সময় ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং একুশের ঘটনা জানতে পারেন। একুশের রাতে তিনি পুলিশের গাড়িতে ৯টি লাশ তুলতে দেখেন। ভাষা আন্দোলনের মুখপত্র সাপ্তাহিক সৈনিক পত্রিকায়‘ আটজন নিহত হওয়ার খবর প্রকাশিত হয় ২৩ ফেব্রুয়ারি। তবে পরবর্তী সময়ে ইতিহাস অন্বেষণে ছয়জন শহীদের প্রকৃত নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




raytahost-demo
© All rights reserved © 2019
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD