মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৩৮ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনে আইন মন্ত্রী আনিসুল হক বে-সরকারি ভাবে নির্বাচিত কসবায় ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ আহত-৪ কসবায় এলজিইডি’র শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান আগরতলায় স্রোত আয়োজিত লোকসংস্কৃতি উৎসব কসবা প্রেসক্লাব সভাপতি’র উপর হামলার প্রতিবাদে মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সভা কসবায় চকচন্দ্রপুর হাফেজিয়া মাদ্রাসার বার্ষিক ফলাফল ঘোষণা, পুরস্কার বিতরণ ও ছবক প্রদান শ্রী অরবিন্দ কলেজের প্রথম নবীনবরণ অনুষ্ঠান আজ বছরের দীর্ঘতম রাত, আকাশে থাকবে চাঁদ বিএনপি-জামাত বিদেশীদের সাথে আঁতাত করেছে-কসবায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ১৩ দিনের জন্য ভোটের মাঠে নামছে সশস্ত্র বাহিনী
আজ ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহাম: বড় পীর হযরত আব্দুল কাদির জিলানীর ওফাত দিবস

আজ ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহাম: বড় পীর হযরত আব্দুল কাদির জিলানীর ওফাত দিবস

আজ ১৭ নভেম্বর ২০২১খ্রিস্টাব্দ রোজ বুধবার বাংলাদেশ সহ মুসলিম বিশ্বের অনেক দেশেই পালিত হবে ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহাম।ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহাম হলো বড় পীর হযরত আবদুল কাদির জিলানী রহ. এর ওফাত দিবস। হিজরি ৫৬১ সনের ১১ রবিউস সানি তিনি ইন্তিকাল করেন।

‘ইয়াজদাহম’ ফারসি শব্দ, যার অর্থ এগারো। ফাতিহা-ই-ইয়াজদাহম বলতে এগারো তম দিনকে বোঝায়। এই ফাতিহা-ই-ইয়াজদাহম আবদুল কাদের জিলানী রহ: এর স্মরণে পালিত হয়।

ফাতেহার অর্থ মহান ওলী আউলিয়া তথা মনীষীগণের জন্য দোয়া। এদিন ওলীকুল শিরমণি তৎকালীন যুগের শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস, মুফাসসির, ফকীহ, দার্শনিক, সর্বজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক, সুবক্তা, কাদেরিয়া তরিকার প্রতিষ্ঠাত গাউসুল আজম হযরত শেখ মুহিউদ্দীন বড়পীর আবদুল কাদের জিলানীর (রহ.) ইন্তেকালবার্ষিকী। এইদিনে বিশ্বের সকল সূফীমতবাদে বিশ্বাসী মুসলমানদের নয়নমণি; কাদেরিয়া তরিকার অনুসারীদের মুকুটমণি, বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী (রহ.) তাঁর অগণিত ভক্তকুলকে শোকসাগরে ভাসিয়ে ৫৬১ হিজরি পরম প্রভু পরওয়ার দেগারের সান্নিধ্যে চলে যান। দিবসটি সেই কারণে বিশেষ তাৎপর্যমন্ডিত।এ দিবসটি সমগ্র বিশ্বে, বিশেষ করে এ উপমহাদেশের মুসলিমদের কাছে অতীব তাৎপর্যপূর্ণ। আল্লাহর রাসূলের (সা.) পর্দা করার পর সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীনে ইমামদের সোনালী যুগে কোরআন-হাদিসের আলোকে দুনিয়া ছিল ঝলমল। পরবর্তীতে ভোগবাদী স্বার্থাম্বেষী ও বিজাতীয় ষড়যন্ত্রের ফলে উম্মতের ঐক্য নষ্ট হয়ে বিভিন্ন ফেরকার সৃষ্টি হয়। যার ফলে মুসলমানদের বিজয়ের ধারা মুখ থুবড়ে পড়ে। কিন্তু মহান ওলীগণ জিহাদের ময়দান থেকে সামান্য সময়ের জন্যও পিছু হটেননি। তাঁরা শরিয়ত, তরিকত, হাক্কিকত ও মারিফাতের ঝান্ডা নিয়ে বিশ্বের আনাচে-কানাচে ছুটে চলতে শুরু করেন। প্রতিষ্ঠা করেন লাখ লাখ দ্বীনি মারকাজ, মসজিদ-মাদ্রাসা ও খানকা। এরূপ প্রতিটি খানকাই ছিল তৎকালীন জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়। অপরদিকে ছিল শাসনকার্যের দফতর এবং ক্যান্টনমেন্ট স্বরূপ। এসব খানকা থেকেই এলমি রুহানি যোগ্যতা নিয়ে বের হয়েছিলেন হাজার হাজার মর্ধে মুজাহিদ। যারা ঘর ছেড়ে দুনিয়ার আনাচে-কানাচে দ্বীনের প্রচার প্রসারে বের হয়ে কাজ সম্পন্ন করে ইন্তেকাল করে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছিলেন হযরত বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.)। বড়পীর আবদুল কাদের জিলানীর (রহ.) সাপ্তাহিক মাহফিলে তৎকালীন জামানায় ৬০-৭০ হাজার মানুষ হাজির থাকতেন। তার কণ্ঠের আওয়াজ এবং আহ্বান শুনে অনেকেই আর ঘরে ফেরেননি, ছড়িয়ে পড়েছেন বিশ্বের সর্বত্র। কোটি কোটি মানুষ তার নিকট ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে ধন্য হয়েছেন। পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের ওলীগণের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, বেশির ভাগই কাদেরিয়া, চিশতিয়া তরিকার শায়খ বা পীর। এ মহান ব্যক্তির ৫৪ জন সন্তানের পরবর্তী বংশধরগণ এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রেখে গেছেন।

হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.) ৪৭০ হিজরিতে ইরাকের জিলান নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সায়্যেদ আবু সালেহ (রহ.) একজন বিখ্যাত বুজুর্গ ছিলেন। মাতা উম্মুল খায়ের ফাতেমা (রহ.) একজন বিদুষী রমণী ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি মায়ের কাছে পবিত্র কোরআনের আঠারো পারা পর্যন্ত মুখস্থ করেন। অল্প বয়সেই সমস্ত কুরআন মুখস্থ করতে সক্ষম হন। পিতার নিকট সূফীবাদের আদর্শে অনুপ্রাণিত হন। পিতার মৃত্যুর পর ১৮ বছর বয়সে তৎকালীন মুসলিম দর্শনের বিদ্যাপীঠ মাদরাসায়ে নিজামিয়াতে ভর্তি হয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। ২৪ হতে ৯১ বছর অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্বদিন পর্যন্ত অবিরাম ইসলাম প্রচার ও প্রসারে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি কাদেরিয়া তরিকার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি ধর্মীয় সভা-সমাবেশে মানুষের আত্মশুদ্ধি ও আত্মউন্নতির জন্য উপদেশ দান করেছেন। অনেক মহামূল্যবান গ্রন্থ রচনা করে গিয়েছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য: গুনিয়াতুত ত্বলেবীন, সিররুল আসরার, আল ফাতহুর রব্বানী, ফাতহুল গুয়ুব এবং আল-কাসিদা নামে একটি কাব্যগ্রন্থ। এই সমস্ত গ্রন্থ পৃথিবীর ২৩টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহমে আমরা এই মহান সাধকের জন্য আল্লাহর দরবারে মাগফেরাত কামনা করছি।

💻লেখক: এস এম শাহনূর
কবি ও গবেষক

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




raytahost-demo
© All rights reserved © 2019
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD