মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫৭ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনে আইন মন্ত্রী আনিসুল হক বে-সরকারি ভাবে নির্বাচিত কসবায় ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ আহত-৪ কসবায় এলজিইডি’র শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান আগরতলায় স্রোত আয়োজিত লোকসংস্কৃতি উৎসব কসবা প্রেসক্লাব সভাপতি’র উপর হামলার প্রতিবাদে মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সভা কসবায় চকচন্দ্রপুর হাফেজিয়া মাদ্রাসার বার্ষিক ফলাফল ঘোষণা, পুরস্কার বিতরণ ও ছবক প্রদান শ্রী অরবিন্দ কলেজের প্রথম নবীনবরণ অনুষ্ঠান আজ বছরের দীর্ঘতম রাত, আকাশে থাকবে চাঁদ বিএনপি-জামাত বিদেশীদের সাথে আঁতাত করেছে-কসবায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ১৩ দিনের জন্য ভোটের মাঠে নামছে সশস্ত্র বাহিনী
কবিতাবিজ্ঞান দিয়ে বিশ্বসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন হাসনাইন সাজ্জাদী

কবিতাবিজ্ঞান দিয়ে বিশ্বসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন হাসনাইন সাজ্জাদী

– এস এম শাহনূর

কবি হাসনাইন সাজ্জাদী এখন শুধু একজন কবি নন। বলা যায় বাংলা সাহিত্যে তিনি এক নতুন ধারা ও ধারণার প্রবক্তা। হাসনাইন সাজ্জাদীকে দেখার আগে তাঁর লেখার সাথে আমার পরিচয় ছিলো। প্রথম দেখা হয়,ভ্রমণ বিষয়ক গ্রন্থকার ও সাংবাদিক লোকমান হোসেন পলা প্রতিষ্ঠিত ‘বিশ্ববাঙালি সংসদ, বাংলাদেশ এর ২০১৯ সালের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে। সম্ভবত এটি ১১ই এপ্রিল। ঐ অনুষ্ঠানে দেশবরেণ্য কবি লেখকদের মিলনমেলায় আমিও ছিলাম। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী হলেওঐ মঞ্চে লোকমান হোসেন পলা’র লেখা ‘শান্তির পথে’ এবং কবি হাসনাইন সাজ্জাদী’র বিজ্ঞান বিষয়ক একটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একুশে পদক প্রাপ্ত শুদ্ধতার কবি অসীম সাহা হাসনাইন সাজ্জাদীর বিজ্ঞান কবিতা বিষয়ে ইতিবাচক ও নেতিবাচক কিছু কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “কবিতাবিজ্ঞান বিষয়টি অতি উঁচুমানের চিন্তাশীলদের সাধনার ফসল। বাংলা সাহিত্যে এর অবাধ চর্চা এখনো সহজ হয়ে উঠেনি। তবে হাসনাইন সাজ্জাদী যেহেতু শুরু করেছে আগামীতে এর প্রসার লাভ করবে।” সেদিন কবি অসীম সাহা দাদুর কথায় আমি যতটুকু বুঝতে সক্ষম হই,
কবিতাবিজ্ঞান এটি সাহিত্যের এক নতুন ধারা এবং এটি বাংলা সাহিত্যকে অন্যলোকে পৌঁছে দিবে বলেও মনে হয়েছে। সেই থেকে কবি হাসনাইন সাজ্জাদীর সাথে কথা হয়,দেখা হয়,হয় ভাব বিনিময়। একান্তই কাছে আসার পর দেখলাম ওনার মাঝে শিশু সুলভ একটা সুন্দর মন রয়েছে। শিশুরা সতত সৃষ্টিশীল হয়। কবি হাসনাইন সাজ্জাদীও সতত সৃষ্টিশীল।

হাসনাইন সাজ্জাদী’র জন্ম ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দের ১ মার্চ, মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামে।তিনি সারা জীবনই ছাত্র হিসাবে পার করে দিয়েছেন।এখনো তিনি বিশ্বসাহিত্যের ছাত্র।তাই বিজ্ঞানকাব্যতত্ত্ব, বিজ্ঞানশিল্পত্ব ও বিজ্ঞানবাদ রাষ্ট্রতত্ত্ব এবং সাবলীল ছন্দের উপস্থাপন করেছেন।
বিজ্ঞান শাখায় এইচ এস সি পাস করার পর কিছু দিন মাদ্রাসায় লেখা পড়া করেন এবং মূলধারায় ফিরে এসে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে স্নাতক,বাংলায় অনার্স-মাস্টার্স এবং সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা করেছেন। কবিতায় বিজ্ঞান চর্চার আন্দোলন শুরু করেন ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে।বিশ্বসাহিত্য নিয়ে যারা কাজ করেন এবং বাংলা সাহিত্যের খোঁজখবর যারা নিয়মিত রাখেন তারা জানেন আধুনিক সাহিত্যের পর বিজ্ঞান কবিতা ছাড়া তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো কাজ কোথাও হয়নি।না বাংলাসাহিত্যে না বিশ্বসাহিত্যের কোনো পর্যায়ে। উত্তর আধুনিকতার নামে যা বলা হয় যেমন, সবকিছু ভেঙেচুরে নতুনভাবে করতে হবে।এই নতুনটা কী তা কিন্তু উত্তর আধুনিক সাহিত্যে বলা হয়নি।বিজ্ঞানকাব্যতত্ত্বে বিজ্ঞানকবি হাসনাইন সাজ্জাদী তাই বলেছেন।তার লেখা এ বিষয়ক একাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।যেমন “বিজ্ঞান কবিতার রূপরেখা ” (প্রবন্ধ গ্রন্থ -সিটিপাবলিশিং ও উৎস প্রকাশনের ২টি সংস্করণ)”,”জাপানে বঙ্গবিদ্যা ও বাংলাদেশের বিজ্ঞান কবিতা(প্রবন্ধ গ্রন্থ পূর্বাপর) “,” হে স্বপ্ন হে বিজ্ঞান কবিতা(কবিতার বই -গতি প্রকাশনী) “,” বিজ্ঞানবাদের কাব্যতত্ত্ব (প্রবন্ধ গ্রন্থ-কবিতাচর্চা) “,” প্রেম একমুঠো নীল(কবিতার বই-পূর্বাপর)”, ” কবিতাবিজ্ঞান(প্রবন্ধ গ্রন্থ -কবিতাচর্চা) এবং ” কবিতায় বিজ্ঞান ও অ-বিজ্ঞান (প্রবন্ধ গ্রন্থ -অক্ষরবৃত্ত প্রকাশন, কলকাতা) প্রভৃতি।এ সকল গ্রন্থের মাধ্যমে তিনি কবিতার বাঁক বদলের জন্য বিজ্ঞানকাব্যতত্ত্ব ও সাবলীল ছন্দের উপস্থাপন করেছেন।একই সঙ্গে তিনি বিজ্ঞান কবিতার নমুনা উপস্থাপন করেছেন।যা বিশ্বব্যাপী উপস্থাপিত হয়ে তার অনুকরণ হচ্ছে।ভারত বর্ষে তার উপস্থাপিত কবিতার থিয়োরিতে একটি পিএইচডি ও একটি ডিলিট ডিগ্রি হচ্ছে।

জাপানের টোকিও ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্ট্যাডিজে চতুর্থ আন্তর্জাতিক বঙ্গবিদ্যা সম্মেলনে তিনি ‘বিজ্ঞান যুগে বিজ্ঞান কবিতা’র থিয়োরি ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ ডিসেম্বর উপস্থাপন করে বিশ্বব্যাপী তা ছড়িয়ে দেন।ফলে সে বছরই ডিসেম্বরে উত্তর আমেরিকার নর্থ ক্যারোলাইনা রাজ্যের ” ইভেন্ট হরাইজন” ম্যাগাজিন ৫০০ ডলারের বিজ্ঞান কবিতার প্রতিযোগিতার আহবান করে।২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ২ এপ্রিল সংখ্যা ‘নিউজ উইক ম্যাগাজিন’ তার অনলাইন সংস্করণকে আমেরিকার কবিতার মাস উপলক্ষ্যে বিজ্ঞান কবিতা সংখ্যা হিসাবে প্রকাশ করে।১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে জাতীয় কবি সংগঠন অনুপ্রাসে হাসনাইন সাজ্জাদী প্রথম ‘নতুন প্রজন্মের কবিতা’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে বিজ্ঞান কবিতার থিয়োরি উপস্থাপন করে বিজ্ঞান কবি হিসাবে দেশে-বিদেশে খ্যাত হয়ে উঠেন।

বিজ্ঞানের ৪টি শাখা হচ্ছে ; রসায়ন, জীব,পদার্থ ও জ্যোতির্বিদ্যা।কবিতার উপমা,উৎপ্রেক্ষা ও চিত্রকল্পে বিজ্ঞানের প্রয়োগ করে কবিতাকে ফলিত বিজ্ঞানে পরিনত করে কবিতাবিজ্ঞানের জন্ম দিয়েছেন হাসনাইন সাজ্জাদী। বিশ্ববাসীর কল্যাণে যার প্রয়োগ এখন অতি জরুরি।কবিতাবিজ্ঞান অনুসরণ করে বিশ্বব্যাপী তার থিয়োরিতে চলছে বিজ্ঞান কবিতার আন্দোলন।বাংলাসাহিত্যের বাঁক বদলের জন্য তাকে সাধুবাদ। আজ তাঁর ৬০তম জন্মদিন। জন্মদিনে শুভকামনা নিরন্তর।

লেখক: এস এম শাহনূর
কবি ও আঞ্চলিক ইতিহাস গবেষক

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




raytahost-demo
© All rights reserved © 2019
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD