শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:০৫ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনে আইন মন্ত্রী আনিসুল হক বে-সরকারি ভাবে নির্বাচিত কসবায় ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ আহত-৪ কসবায় এলজিইডি’র শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান আগরতলায় স্রোত আয়োজিত লোকসংস্কৃতি উৎসব কসবা প্রেসক্লাব সভাপতি’র উপর হামলার প্রতিবাদে মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সভা কসবায় চকচন্দ্রপুর হাফেজিয়া মাদ্রাসার বার্ষিক ফলাফল ঘোষণা, পুরস্কার বিতরণ ও ছবক প্রদান শ্রী অরবিন্দ কলেজের প্রথম নবীনবরণ অনুষ্ঠান আজ বছরের দীর্ঘতম রাত, আকাশে থাকবে চাঁদ বিএনপি-জামাত বিদেশীদের সাথে আঁতাত করেছে-কসবায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ১৩ দিনের জন্য ভোটের মাঠে নামছে সশস্ত্র বাহিনী
তীব্র গরমে করণীয়

তীব্র গরমে করণীয়

ডাঃ প্রফেসর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল(অব)
নাজমা বেগম নাজু।।

তাপমাত্রার তীব্রতা এমনই এক পর্যায়ে এখন, খরদহে অতীষ্ট জনজীবন যেন স্বাভাবিক কর্মক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছে। জীবনকে তো আর থামিয়ে রাখা যাবে না, এই বিপন্ন অবস্হাতেও স্বাভাবিক রাখতে হবে রোজকার অগ্রযাত্রা, প্রতিটি পদক্ষেপের এগিয়ে চলা। তাই সময় এবং অবস্হার দাবী মেনে নিজেকে সুস্হ এবং স্বাভাবিক রাখার জন্য করণীয় যা কিছু সবই করতে হবে এবং মেনে চলতে হবে। হিমশীতল বা লু-হাওয়া – যাই হোক না কেন মানব শরীর তার নিজস্ব নিয়মে আভ্যন্তরীন তাপমাত্রা ৩৭.৫ ডিগ্রি সেন্ট্রিগ্রেড রাখতে চায়। তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে মূল তাপমাত্রা নির্দিষ্ট একটি মাত্রায় রাখার জন্য শরীরকে বাড়তি কিছু কাজ করতে হয়।তীব্র তাপদহে ত্বকের নিচের ধমনীগুলো যখন খুলে যেতে থাকে তখন রক্তচাপ কমে যায় এবং হৃদপিণ্ডের কাজ বেড়ে যায়।সারাদেহে রক্ত পৌঁছে দিতে হৃদপিন্ডকে তখন দ্রুত পাম্প করতে হয়। অনেক সময়ই রক্তচাপ কমে যায়। অতিরিক্ত ঘামের ফলে শরীর পানিশূন্য হয়ে যায়। রক্তচাপ বেশি কমে গেলে হার্ট এ্যাটাক পর্যম্ত হতে পারে। পানিশূন্যতার কারণে মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে পড়া, ক্লান্তি, অবসাদ, মাংসপেশিতে খিচ ধরা ইত্যাদি ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত গরমে শিশু,বৃদ্ধ এবং অসুস্হ ব্যক্তিরাই অধিক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকে। হার্ট এ্যাটাক বা হিট স্ট্রোক ছাড়াও আরো অনেক রকমের স্বাস্থ্যগত জটিলতায় আক্রাম্ত হন তারা।ঘামের সাথে পানি ছাড়াও অনেক গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদান শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।এর ফলে শরীর মারাত্মক রকমের জটিলতায় আক্রান্ত হতে পারে। অতিরিক্ত গরমে কেউ অসুস্হ হয়ে পড়লে অতি দ্রুত তাকে শীতল স্হানে স্থানান্তর করতে হবে। শুইয়ে দিতে হবে, পরিধেয় শক্ত বা টাইট কিছু থাকলে তা খুলে দিতে হবে। প্রচুর পানি বা পানীয় পান করাতে হবে। কাপড় ভিজিয়ে ( বরফ পানিতে নয়) সারা শরীর বারবার মুছে দিতে হবে। রোগীকে ফ্যানের নীচে বা সম্ভব হলে এসি রুমে রাখতে হবে। হিট স্ট্রোক একটি মারাত্মক অবস্থা। রোগীর ঘাম সম্পূর্ণরুপে বন্ধ হয়ে এবং সারা শরীর শুকনো হয়ে যায়।রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে কালক্ষেপন না করে রোগীকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।বাচ্চারা গরমের তীব্র কষ্টের মাঝেও তাদের কষ্টের কথা বুঝিয়ে বলতে পারেনা অনেকসময়ই।এ ক্ষেত্রে তাদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার প্রস্তুতি রাখতে হবে। কোন অবস্হাতেই শরীরকে পানিশূন্য হতে দেয়া যাবে না।
প্রখর সূর্যের নীচে অধিক সময় অবস্থান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। তীব্র গরমে মাত্রাধিক পরিশ্রমও শরীরের জন্য ক্ষতিকর। শুধু শারিরীক নয় তাপদাহ মামুষকে মানসিক ভাবেও দূর্বল করে ফেলে। সবাইকে সচেতন এবং নিজেদের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল থাকতে হবে। পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও আত্মিক বন্ধন জোরদার করতে হবে। প্রচুর পরিমানে পানি এবং ফল- মূল গ্রহন করতে হবে। কড়া রোদ এড়িয়ে চলতে হবে। শিশু ও বৃদ্ধদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে।বেশি গরমের সময় ব্যয়াম বা অধিক কায়িক পরিশ্রম করা যাবেনা।সূতি এবং৷ হাল্কা বঙের পোশাক পরতে হবে। অতিরিক্ত গরমে ঘামের সাথে শরীরের লবনও বেরিয়ে যায়। দূর্বল লাগলে স্যালাইন খেতে হবে। ভাজা পোড়া এবং অতিরিক্ত তেল – মশলাযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।বাইরে বেরুনোর সময় ছাতা ব্যবহার করতে হবে।সম্ভব হলে সানগ্লাসও।গরমে ডায়ারিয়া, সর্দিজ্বর, ছত্রাক সংক্রমন ইত্যাদির প্রকোপ বাড়ে।সচেতন থাকতে হবে এবং রোগ প্রতিরোধে করণীয় যা কিছু সবই করতে হবে।প্রয়োজনে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
গীষ্মকাল আমাদের বছর শুরুর কল্যাণময় সূচনার বার্তাবাহক। এর সাথে মিশে আছে আমাদের ঐতিহ্য, শিল্প -সংস্কৃতি, সাহিত্য এবং কালজয়ী ইতিহাস। এই তাপদাহ মংগলময় বর্ষা মেঘের ইংগিতও বটে।আমরা সাহসী এবং সংগ্রামী জাতি। খরা- বন্যা, মনন্তর, মহামারি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারেনি পারবে না। এই তাপদাহ সাময়িক। দুঃসময় চলে যাবে। জয় আমাদেরই হবে। তাই নিজেকে সুস্হ রেখে আগামীর সুশীতল ছায়া ঘেরা দিনকে কাছে পেতে হবে। আসন্ন আষাঢ় মেঘে তারই ডম্বরু বাজে।

লেখক ডাঃ প্রফেসর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ( অবঃ) নাজমা বেগম নাজু
কলামিস্ট, কথাশিল্পী, গবেষক, আবৃত্তিকার, গিটারিস্ট ও চিকিৎসক।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




raytahost-demo
© All rights reserved © 2019
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD