রহিদুল ইসলাম রাইপ
নওগাঁ প্রতিনিধিঃ
সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে প্রতিবন্ধী ভাতা পেলেন প্রায় দুই যুগ ঘরবন্দি এবং পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে শিকলবন্দি জীবন কাটানো মানসিক ভারসাম্যহীন নিপেন চন্দ্র পাল।
নিপেনের গ্রামের বাড়ি নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কালীগ্রাম ইউনিয়নের ভান্ডারা গ্রামে। নিপেনকে প্রায় ৩০বছর যাবত ঘরে বন্দি করে রেখেছে তার পরিবার। তার পাগলামি আচরণ দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রায় ৫বছর ধরে দুই পায়ে লোহার শিকলে একটি মাটির অন্ধকার ঘরে বন্দি করে রাখা হয়েছে।
সম্প্রতি এই বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে তা উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে। এরপর নিপেনের বাড়িতে গিয়ে সার্বিক খোঁজ-খবর নেয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আল মামুন। এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিপেনের স্ত্রী শিখা রানীর হাতে নিপেনের প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড ও ৯ হাজার টাকা হস্তান্তর করা হয়।
নিপেনের স্ত্রী শিখা রানী বলেন, আমাদের পাশে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ। পাশাপাশি স্বামীর উন্নত চিকিৎসার জন্য সহায়তা দেয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আল মামুন বলেন, প্রাথমিক ভাবে নিপেনের জন্য আমাদের হাতে যে সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার মতো ছিলো তা প্রদান করেছি। পরবর্তিতে বড় ধরনের কোন সুযোগ-সুবিধা এলে অবশ্যই নিপেনের চিকিৎসার জন্য তা বরাদ্দ দেওয়ার চেষ্টা করবো।
উল্লেখ্য, উপজেলার ভান্ডারা গ্রামের মৃত-নরেশ চন্দ্র পালের ২য় সন্তান নিপেন। বর্তমান তার বয়স ৪২বছর। ছোটবেলা থেকেই অন্য আর শিশুদের মত নিপেনও সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিলেন। মেধাবী নিপেন ছিলেন পড়াশোনায় খুবই ভালো। স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ার সময় হঠাৎ করে নিপেনের মাঝে অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ্য করে তার পরিবার। এক পর্যায়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন নিপেন। গ্রামের অনেকে বলেছে বিয়ে দিলে হয়তো নিপেন ভালো হতে পারে এমন ধারনা থেকে প্রায় ১৮ বছর আগে নিপেনকে বিয়ে দেয় তার পরিবার। বর্তমানে নিপেনের ঘরে ৭বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।
Leave a Reply