শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২১ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনে আইন মন্ত্রী আনিসুল হক বে-সরকারি ভাবে নির্বাচিত কসবায় ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ আহত-৪ কসবায় এলজিইডি’র শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান আগরতলায় স্রোত আয়োজিত লোকসংস্কৃতি উৎসব কসবা প্রেসক্লাব সভাপতি’র উপর হামলার প্রতিবাদে মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সভা কসবায় চকচন্দ্রপুর হাফেজিয়া মাদ্রাসার বার্ষিক ফলাফল ঘোষণা, পুরস্কার বিতরণ ও ছবক প্রদান শ্রী অরবিন্দ কলেজের প্রথম নবীনবরণ অনুষ্ঠান আজ বছরের দীর্ঘতম রাত, আকাশে থাকবে চাঁদ বিএনপি-জামাত বিদেশীদের সাথে আঁতাত করেছে-কসবায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ১৩ দিনের জন্য ভোটের মাঠে নামছে সশস্ত্র বাহিনী
বিশ্বের কাছে আমরা প্রমাণ করেছি, আমরাও পারি: প্রধানমন্ত্রী

বিশ্বের কাছে আমরা প্রমাণ করেছি, আমরাও পারি: প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক।।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি ধ্বসে পড়েনি। বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের কাছে আমরা প্রমাণ করেছি, ‘আমরাও পারি।’

তিনি বলেন, পদ্মা সেতু তাই আত্মমর্যাদা ও বাঙালির সক্ষমতা প্রমাণের সেতু শুধু নয়, পুরো জাতিকে অপমান করার প্রতিশোধও। বাংলাদেশের জনগণই আমার সাহসের ঠিকানা। আমি তাঁদের স্যালুট জানাই।

শনিবার পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে আয়োজিত উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু যমুনা বহুমুখী সেতু এবং পদ্মা সেতু নির্মাণের পেছনের কথা তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধুই যমুনা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা লাভের পর বঙ্গবন্ধু অতি স্বল্প সময়ের মধ্যে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন। তিনি যমুনা নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। ১৯৭৩ সালের অক্টোবর মাসে জাপান সফরকালে যমুনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের জন্য তিনি জাপান সরকারের সহায়তা চান। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বঙ্গবন্ধু যমুনা বহুমুখী সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয় এবং ১৯৯৮ সালের ২৩-এ জুন আমি ওই সেতুর উদ্বোধন করি।’

পদ্মা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের শুরুর দিককার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৭ সালে জাপান সফরকালে আমি পদ্মা নদী এবং রূপসা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের সহযোগিতা চাই। জাপান সরকার দুটি নদীর ওপরই সেতু নির্মাণে রাজি হয়। আমার অনুরোধে ওই মেয়াদেই রূপসা নদীর ওপর সেতু নির্মাণকাজ শুরু হয়। যেহেতু পদ্মা অনেক খরস্রোতা, বিশাল নদী, তাই পদ্মা নদীর সমীক্ষার প্রয়োজন হয়। ২০০১ সালের মাঝামাঝি পদ্মার নদীর ওপর সেতু নির্মাণের সমীক্ষার কাজ শেষ করে জাপান। স্থান নির্বাচন করে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে। এই সমীক্ষার ভিত্তিতে ২০০১ সালের ৪ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে আমি মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করি। কিন্তু ২০০১ সালের নির্বাচনে আমরা সরকারে আসতে পারিনি। ক্ষমতায় এসে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার মাওয়া প্রান্তে সেতু নির্মাণে অনীহা দেখায়। তাঁরা জাপান সরকারকে পুনরায় মানিকগঞ্জের আরিচায় পদ্মা সেতুর জন্য সমীক্ষা করতে বলে। দ্বিতীয়বার সমীক্ষার পর জাপান বর্তমান মাওয়া-জাজিরা প্রান্তকেই বাছাই করে পদ্মা সেতু নির্মাণের রিপোর্ট পেশ করে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ২০০১-২০০৬ মেয়াদে এই সেতু নির্মাণের বিষয়ে আর কোন উদ্যোগ নেয়নি। ২০০৯ সালে আবার সরকার পরিচালনার দায়িত্বে এসে আমরা পদ্মা সেতু নির্মাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার তালিকায় নিয়ে আসি। সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার ২২ দিনের মাথায় সেতুর নকশা তৈরির জন্য পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক আলাপ-আলোচনার পর বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা এই সেতু নির্মাণে অর্থায়ন করতে সম্মত হয়। কিন্তু কতিপয় ষড়যন্ত্রকারীর প্ররোচনায় ভিত্তিহীন দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক এ প্রকল্পে অর্থায়ন থেকে সরে যায়। পরবর্তীকালে অন্যান্য অংশীদারগণও বিশ্বব্যাংকের পদাঙ্ক অনুসরণ করে। তারপর পানি অনেক ঘোলা করা হয়েছে। তথাকথিত নাগরিক সমাজের এক শ্রেণির প্রতিনিধি, কতিপয় মিডিয়া, স্বঘোষিত অর্থনীতিবিদগণ সরকারের তীব্র সমালোচনায় মেতে ওঠেন। অনেকটা চিলে কান নিয়ে গেছে—প্রবাদ বাক্যের মত অবস্থা। কেউ ন্যূনতম অনুসন্ধান পর্যন্ত করলেন না যে, যে প্রকল্প একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে তাতে কীভাবে দুর্নীতি হতে পারে? দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করে জানাল যে, কোন দুর্নীতি হয়নি। কিন্তু তাঁদের কথা কেউ বিশ্বাস করলেন না। কিন্তু কানাডার আদালতে যখন পদ্মা সেতুতে কোন দুর্নীতি হয়নি বলে রায় দিল, তখন সবাই চুপ হয়ে গেলেন। কারও মুখে কোন কথা নেই। তাঁদের কারণে আমাদের কয়েকজন সহকর্মী যে মানসিক নির্যাতনের শিকার হলেন তা নিয়ে সামান্য দুঃখ পর্যন্ত প্রকাশ করলেন না। কিন্তু আমি জানতাম, পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির কোন ষড়যন্ত্র হয়নি। আর এ কারণেই এই সেতু নির্মাণে আমার জেদ চাপে।’

সকলেই যখন হতাশ, তখন আমি নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেই বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, শুধু তাই নয়, এ সেতু নির্মাণে বিদেশি কোন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্থ নেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেই। এই ঘোষণার পর আপনারা দেখেছেন, কিছু কিছু মানুষ কীভাবে নানা নৈরাশ্যবাদী এবং হতাশাব্যঞ্জক কথাবার্তা বলেছেন। নিজেদের টাকায় এই সেতু তৈরি করলে বাংলাদেশের অর্থনীতি, অগ্রগতি স্থবির হয়ে যাবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন তারা। আজকে পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি ধ্বসে পড়েনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের এই আনন্দের দিনে কারও প্রতি ঘৃণা নয়, কারও প্রতি বিদ্বেষ নয়। শুধু দেশবাসীর প্রতি আমি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। আপনারা পাশে ছিলেন বলেই আমি সাহস পেয়েছি এই অসম্ভবকে সম্ভব করতে। আর পরপার থেকে আমাকে সাহস জুগিয়েছেন এবং আশীর্বাদ করেছেন আমার বাবা, বাঙালি জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং আমার মা বেগম ফজিলাতুন নেছা রেণু। আজ আমি শুধু প্রার্থনা করব, ষড়যন্ত্রকারীদের যেন শুভবুদ্ধির উদয় হয়।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব আনোয়ারুল ইসলাম। অংশ নিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, দেশের রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি, সাংবাদিক, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিরা।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




raytahost-demo
© All rights reserved © 2019
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD