স্বপন কুমার রায়।।
রহস্যজনক নিখোঁজের ২৯ দিন পর জীবিত উদ্ধার করা রহিমা বেগম কোনো কথাই বলছেন না। এখন পর্যন্ত ৫৫ বছরের এক নারী শুধু পুলিশকে একটি কথাই বলেছেন, ছেলে-মেয়ে ও স্বামীর কাছে ফিরে যেতে চান না তিনি। এর বাইরে এখন পর্যন্ত আর কোনো কথা বলেননি রহিমা।
ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুস মোল্লার বাড়ি থেকে শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ১১টার দিকে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করে খুলনা মহানগর মেট্রোপলিটন পুলিশ। এরপর রাত দুইটার দিকে তাকে নিয়ে আসা হয় খুলনার দৌলতপুর থানায়।
উদ্ধারের পর থেকে রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল পর্যন্ত চুপচাপ রয়েছেন রহিমা বেগম। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে নানা কৌশল ব্যবহার করলেও তিনি একটি কথাও বলেননি। এমনকি তার সন্তানদের সাথেও কথা বলছেন না। পুলিশের অনুরোধে সন্তানদের দেখা দিলেও কথা বলেননি তিনি।
আত্মগোপনে থাকা সম্পর্কেও রহিমা বেগম পুলিশকে এখনো কোনো তথ্য দেয়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রহিমা বেগমকে যে বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, সেখানের বাসিন্দা জানিয়েছেন গেলো ১৭ সেপ্টেম্বর তিনি সেখানে আসেন।
রহিমাকে তারা আগে থেকে চিনতেন। প্রায় ২৮ বছর আগে বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুস মোল্লা এ সময় রহিমার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তবে মাঝখানে কোনো যোগাযোগ ছিলো না। ১৭ সেপ্টেম্বর হঠাৎ এসে হাজির হবার পর রহিমা বেগমকে আশ্রয় দেয়া হয়।
পুলিশ বলছে, ফরিদপুরের ওই বাড়িতে গিয়ে তারা দেখেন, রহিমা বেগম দুই নারীর সঙ্গে কথা বলছেন। তাদেরকে দেখার পর থেকেই তিনি কথা বলা বন্ধ করে দেন। পুলিশ সদস্যরা তার কাছে বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো জবাব দেননি।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, এখনো পর্যন্ত রহিমা বেগম কোনো কথা বলেননি। এমনকি তিনি কোনো খাবারও খেতে চাচ্ছেন না। পুলিশের ধারণা কথা বললেই বেরিয়ে আসল রহস্য আসতে পারে, এমন আশঙ্কা থেকেই কোনো কথা বলছেন না রহিমা বেগম।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপির) উপ-কমিশনার (উত্তর) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, যে বাড়িতে রহিমা বেগম অবস্থান করছিলেন সেই বাড়ির কুদ্দুসের স্ত্রী, ছেলে ও কুদ্দুসের ভাইয়ের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে।
তারা জানিয়েছেন, গত ১৭ সেপ্টেম্বর রহিমা বেগম তাদের বাড়িতে যায়। তখন তার একটি ব্যাগে দুই প্যাকেট বিস্কুট, কিছু কাগজপত্র ও পরনের কয়েকটি কাপড় ছিল। প্রথমে চিনতে কষ্ট হয়। এক সময় কুদ্দুস খুলনার সোনালি জুট মিলে কাজ করার সময় রহিমার বাড়ির ভাড়াটিয়া ছিলেন।
রহিমা বেগম ওই পরিবারের সদস্যদের জানান, ১৭ সেপ্টেম্বরের আগে চট্টগ্রাম ও মোকছেদপুরে কোনো বাড়িতে ছিলেন। মামলাটি যেহেতু পিবিআইতে হস্তান্তর হয়েছে, তারা বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখবেন। রহিমাকে পিবিআই-এর কাছে বুঝিয়ে দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
Leave a Reply