মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৩ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনে আইন মন্ত্রী আনিসুল হক বে-সরকারি ভাবে নির্বাচিত কসবায় ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ আহত-৪ কসবায় এলজিইডি’র শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান আগরতলায় স্রোত আয়োজিত লোকসংস্কৃতি উৎসব কসবা প্রেসক্লাব সভাপতি’র উপর হামলার প্রতিবাদে মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সভা কসবায় চকচন্দ্রপুর হাফেজিয়া মাদ্রাসার বার্ষিক ফলাফল ঘোষণা, পুরস্কার বিতরণ ও ছবক প্রদান শ্রী অরবিন্দ কলেজের প্রথম নবীনবরণ অনুষ্ঠান আজ বছরের দীর্ঘতম রাত, আকাশে থাকবে চাঁদ বিএনপি-জামাত বিদেশীদের সাথে আঁতাত করেছে-কসবায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ১৩ দিনের জন্য ভোটের মাঠে নামছে সশস্ত্র বাহিনী
পদ্মা সেতু নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসায় চীনা রাষ্ট্রদূত

পদ্মা সেতু নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসায় চীনা রাষ্ট্রদূত

নিউজ ডেস্ক।।
দেশীয় অর্থায়নে পদ্মা সেতু প্রকল্প সম্পন্ন করার সাহসের বিষয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। রাষ্ট্রদূতের ভাষ্য, কোনো সাধারণ নেতার পক্ষে এ কাজ করা সম্ভব হতো না।

রোববার (১৯ জুন) ঢাকায় চীনা দূতাবাসে কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।

সাংবাদিকের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমার সন্দেহ হয়, একটি দেশের সাধারণ কোনও নেতার পক্ষে তিনি (শেখ হাসিনা) যা করেছেন, এ ধরনের কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হতো কিনা, আমি সন্দেহ করি। সত্যিই আমি সন্দেহ করি।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‌‘বিদেশি কিছু উন্নয়ন অংশীদার বিশ্বাসই করতে পারেনি যে, বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব অর্থায়নে এ ধরনের একটি বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারবে। তবে, তিনি তাদের কারও নাম উল্লেখ করেননি।’

তিনি বলেন, ‘তার পরও প্রধানমন্ত্রী সব সন্দেহ, চাপ ও অভিযোগের মুখে নিজেকে ইস্পাত কঠিন দৃঢ় রেখে শতভাগ বাংলাদেশের অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিলেন।’

লি জিমিং বলেন, ‘এ সিদ্ধান্তের জন্য যেকোনও সরকারপ্রধানের পক্ষ থেকে দরকার ছিল অসীম সাহস এবং দৃঢ় রাজনৈতিক দায়িত্ববোধ।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই সেতু সম্পর্কে ভাবতে গেলেই তিনটি শব্দ আমার মনে ভেসে ওঠে। তা হলো, সাহস, সংকল্প ও সমৃদ্ধি।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি স্বপ্ন থেকে সেতুটি আজ দৃঢ় বাস্তবে রূপ নিয়েছে এবং এখন থেকে কেউ সন্দেহ করতে পারবে না যে বাংলাদেশ পারে না।’

একটি চীনা কোম্পানি সেতুটি নির্মাণে জড়িত হওয়ায় এ প্রকল্পে তার দেশের অংশগ্রহণে গর্ববোধ করে লি জিমিং বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সম্ভবত এটাই সবচেয়ে বড় সেতু, যা চীনা কোম্পানিগুলো এ যাবৎ চীনের বাইরে তৈরি করেছে।’

তিনি বলেন, ‘সুতরাং আমি মনে করি, চীনের পক্ষেও এ চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা একটি সাহসী পদক্ষেপ।’

বিদেশি অর্থায়ন ছাড়া এই সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশ বিশ্বকে কী বার্তা দিতে পেরেছে এ প্রশ্নের জবাবে লি বলেন, ‘এই শিক্ষাই পাওয়া গেছে যে, বাংলাদেশের জনগণের ওপর আস্থা রাখা উচিত।’

তিনি আপাতভাবে বিশ্বব্যাংকের রেফারেন্স টেনে বলেন, ‘এই শিক্ষার কারণে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের বাজারে তারা আরও ভালো পারফর্ম করতে পারবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এই প্রকল্প থেকে ঋণদাতা সংস্থাগুলোর সরে দাঁড়ানোকে তিনি কোনও ষড়যন্ত্রের ফল হিসেবে দেখতে চান না।’ বরং তিনি বলেন, ‘এটি ছিল বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আস্থার অভাব, বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আস্থার অভাব।’

তবে, পূর্বের আর্থিক কার্যক্রমের আলোকে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি বেইজিংয়ের পূর্ণ আস্থা ছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, আপনারা (বাংলাদেশ) যদি বলেন, আমরা নিজস্ব অর্থে কাজটা করবো, তবে আপনারা তা করতে পারবেন। আমরা এটা বিশ্বাস করেছি এবং আমরা সঠিক আছি। তাই না?’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘কেউ হয়তো এই সেতুতে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক অর্জন দেখতে পছন্দ নাও করতে পারে। তিনি বলেন, ‘সবাই খুশি নয়, কিন্তু, চীনা জনগণ খুশি।’

চীনা নেতৃত্বাধীন বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে বলে যে ধারণা করা হচ্ছে সে প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে বহুদেশে বিআরআই সম্পর্কে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘পদ্মা সেতু ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে ও এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কের মিসিং লিংক হিসেবে কাজ করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সেতুটি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে সমন্বিত বাংলাদেশ অবশ্যই আরও সমন্বিত ও সমৃদ্ধ দক্ষিণ এশিয়া এবং এর বাইরেও অবদান রাখবে।’

লি বলেন, ‘পদ্মা সেতু কেবল দুই খণ্ড ভূমিকেই সংযুক্ত করবে না, বরং এটি জনগণের হৃদয়কে সংযুক্ত করে অভিন্ন সমৃদ্ধি ও ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবে।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘একটি চীনা কোম্পানি সেতুটি নির্মাণ করেছে সে কারণে নয়; বরং চীন-বাংলাদেশ সহযোগিতার ক্ষেত্রে এটি একটি মাইলফলক হিসেবে থাকবে বলে আমি বিশেষভাবে গর্বিত।’

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, যাতায়াতের জন্যে সেতুটি খুলে দেওয়ার পর এটি বাংলাদেশের জনগণকে উপকৃত করবে, এটি দক্ষিণ এশিয়ার যোগাযোগের ক্ষেত্রে অবদান রাখবে এবং এটি চীন ও বাংলাদেশের ভ্রাতৃত্বের চিরবন্ধন হিসেবে কাজ করবে।’

দেশের দীর্ঘতম ৬.১৫ কিলোমিটারের এই পদ্মা সেতু সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি হয়েছে। এর জন্য কোনও ধরনের বিদেশি অনুদান কিংবা ঋণ নেওয়া হয়নি। অর্থ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষকে পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্যে ৩০ হাজার কোটি টাকা সরবরাহ করে।’

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




raytahost-demo
© All rights reserved © 2019
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD