লোকমান হোসেন পলা।।
বাংলাদেশের লালন সম্রাজ্ঞী খ্যাত কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন আমাদের মাঝে নেই। শনিবার রাত ১০টা ১৫ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। তিনি চার সন্তান ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছেন ফরিদা পারভীন। কিছুদিন আগে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়ায় যে, সপ্তাহে দুই দিন তাকে ডায়ালাইসিস করাতে হতো। ২ সেপ্টেম্বর তাকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ডায়ালাইসিসের পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে আইসিইউতে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, তিনি ফুসফুস, কিডনি, থাইরয়েড এবং ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় দীর্ঘদিন ভুগছিলেন।
ফরিদা পারভীনের সংগীতজীবন শুরু হয় ১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারে নজরুলসংগীত গেয়ে। ১৯৭৩ সালে দেশাত্মবোধক গান গাইতে গিয়ে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি সাধক মোকসেদ আলী শাহের কাছে লালনসংগীতে প্রশিক্ষণ নেন এবং ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন লালনগীতির জীবন্ত কিংবদন্তি।
সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৭ সালে তিনি লাভ করেন একুশে পদক। এছাড়াও, নতুন প্রজন্মকে লালনসংগীত শেখানোর জন্য তিনি ‘অচিন পাখি স্কুল’ গড়ে তোলেন।
ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে দেশসংগীত ও সংস্কৃতিজগতে শূন্যতা সৃষ্টি হলো। তাঁর গাওয়া লালনগীতির সুর ও বার্তা আগামী প্রজন্মের হৃদয়ে চিরকাল বেঁচে থাকবে।
Leave a Reply