ফাইল ছবি
খাদেমুল মোরসালিন শাকীর, নীলফামারী প্রতিনিধি\
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর ডিলার সরকারী নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে নিজের তৈরী করা নিয়মে সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে,উপজেলার ৫৩ জন ডিলারকে সুবিধাভোগীদের চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। গত রবিবার ( ১৮ এপ্রিল) প্রথমে উপজেলার চাঁদখানা ইউনিয়নের বুড়িরহাট এলাকার ডিলার খলিলুর রহমান তার বরাদ্দকৃত ১২ মেট্রিকটন চাল উত্তোলন করে বিতরণ পয়েন্টে নিয়ে যায়। সোমবার ১৯ এপ্রিল সকাল থেকে ৪শ’ জন সুবিধাভোগীর চাল তদারকি কর্মকর্তা সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোতাহার হোসেনের অনুপস্থিতিতে কোন সরকারী নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর চাল বিতরণ শুরু করে। সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ৩০ কেজি চালের মূল্য ৩ শ’ টাকা নির্ধারণ করা হলেও ডিলার খলিলুর রহমান ৩ শ’ টাকার পরিবর্তে প্রতিবার বিতরণের সাথে অতিরিক্ত ২০ টাকা করে হাতিয়ে নেন। এ বছর সরকারী ভাবে সুবিধাভোগীদের অনলাইনে তালিকা নিশ্চিত করার জন্য ডিলারদের নির্দেশ দেন খাদ্য অধিদপ্তর। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ডিলার খলিলুর রহমান প্রতি সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে আবারও ২০ টাকা করে হাতিয়ে নেন। বিষয়টি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে জানানো হলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) তৌহিদুর রহমান তাৎক্ষনিক ওই ডিলারকে অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধ করার জন্য সতর্ক করে দেন এবং কোন অনলাইন চার্জ বাবদ টাকা না নেয়ার জন্য নির্দেশ দেন। কিন্তু ডিলার খলিলুর রহমান তার নীতিতে অটল থেকে অনলাইন চার্জ বাবদ ২০ টাকা ও ৩ কেজি চালের মূল্য ৩ শ’ টাকার পরিবর্তে ৩ শ’ ২০ টাকা উত্তোলন করতে থাকেন।
উত্তর চাঁদখানা করুনা বাবুর পাড়ার সুবিধাভোগী বীরেন্দ্র নাথ রায়ের ছেলে নৃপেন রায় (৪০),কার্ড নং- ১৩৩০,একই এলাকার অশ্বনী রায়ের ছেলে হিরালাল (৫০), কার্ড নং- ১৩৩৩ ও সাড়োভাষা বর্মচর এলাকার করুনা কান্ত রায়ের ছেলে নারায়ন চন্দ্র (৫০) বলেন,প্রতিবার চাল তোলার সময় ডিলার খলিলুর রহমান লিটন ৩০ কেজি চাল ৩ শ ২০ টাকা করে নেন। ৩০ কেজি চালের মূল্য ৩ শ টাকা আপনারা ৩ শ ২০ টাকায় নেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন বস্তার জন্য ২০ টাকা করে নেন। আর এবার চাল দেয়ার ২ দিন আগে জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপির সাথে অনলাইন চার্জ বাবদ ২০ টাকা করে নিয়েছে।
একই ভাবে অভিযোগ করেছেন, উত্তর চাঁদখানা করুনা বাবুর পাড়ার সুবিধাভোগী জিতেন চন্দ্র রায়ের স্ত্রী আরতী রানী (৪৫) চাঁদখানা কলেজ গেটের ডিলার ফিকরুল ইসলাম দুলালের বিরুদ্ধে। তিনিও একই ভাবে সকল সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেছেন।
এ ব্যাপারে ডিলার খলিলুর রহমানের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি শুধু অতিরিক্ত টাকা নেই না,আমার পাশের ডিলার হাসানুজ্জামান সান্টু তো নিচ্ছেন। আর বস্তার টাকা তো সব ডিলারেই নেয়। আমার যা হবে সবারেই তা হবে।
চাঁদখানা কলেজ গেটের ডিলার ফিকরুল ইসলাম দুলাল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,আমি কোন সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেই না। কেউ অভিযোগ দিলে তা আমার করার কিছু নাই।
চাঁদখানা ইউনিয়নের খাদ্য বন্ধব কর্মসূচীর তদারকি কর্মকর্তা ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোতাহার হোসেনের সাথে কথা বলার জন্য তার মুঠো ফোন (০১৭১৯৮৫৮৯৬৬) নম্বরে চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ না করার কারণে তার মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তৌহিদুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, অনলাইন চার্জ বাবদ কোন টাকা নেয়ার নিয়ম নাই এবং ৩০ কেজি চালের মুল্য ৩ শ’ টাকার চেয়ে একটি টাকাও বেশী নেয়ার সুযোগ নেই। যিনি অতিরিক্ত টাকা নিবেন তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা বেগম বলেন,ডিলার পয়েন্টে লোক পাঠিয়েছি। অতিরিক্ত টাকা নেয়া হলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। # সাথে ভিডিও ক্লিপ
Leave a Reply