খাদেমুল মোরসালিন শাকীর,নীলফামারী প্রতিনিধি\
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্ট (অনূর্ধ ১৭) খেলার ফলাফলকে কেন্দ্র করে দুই দলের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, রবিবার বিকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্ট (অনূর্ধ ১৭) খেলার সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হয় স্থানীয় ষ্টেডিয়াম মাঠে। সেই খেলায় মাগুড়া ও পুটিমারী ইউনিয়নের খেলোয়াররা অংশ গ্রহন করে। খেলার নির্ধারিত ৫০ মিনিটে কোন দল গোল করতে না পারায় খেলা পরিচালনা কমিটি ট্রাইব্রেকারের সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। খেলায় প্রধান রেফারি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন নীলফামারী রেফারী এসোসিয়েশনের সদস্য নূর আলম। সহকারী রেফারী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন এসোসিয়েশনের সদস্য সিরাজুল ইসলাম,মহিবুজ্জামান ও হাসান মিলন। ট্রাইব্রেকারে দুই দলের মধ্যে ৫জন করে খেলোয়ার অংশ নেয়। খেলার প্রথমে পুটিমারী দলের খেলোয়াররা কিক করেন। এ সময় মাগুড়া দলকে নিয়ে চেয়ারম্যান কথা বলছিল মাঠের মাঝখানে। এমতাবস্থায় তিনি জানতে পায় যে, একটি গোল হয়েছে তার বিপক্ষ দলের এ নিয়ে মাগুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হোসেন শিহাব খেলার রেফারীর কাছে আপত্তি তোলে। কিন্তু সেই আপত্তিকে অগ্রাহ্য করে পুটিমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবু সায়েম লিটন রেফারিকে খেলা পরিচালনা করার জন্য বলেন। এক পর্যায়ে পুটিমারী ইউনিয়ন ট্রাইব্রেকারে হেরে গেলে মাগুড়া ইউনিয়নের খেলোয়াররা আনন্দে উদ্দেলিত হয়ে পুটিমারীর খেলোয়ারদের ধর ধর বলে চিৎকার করলে পুটিমারী ইউপি চেয়ারম্যান তার দলের এক খেলোয়ারকে ডেকে মাগুড়ার খেলোয়ারদের দিকে তেড়ে আসেন এবং মাগুড়া ইউনিয়নের একজন খেলোয়ারকে গলা ধরে ধাক্কা দিলে মাগুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও পুটিমারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের মধ্যে ধাক্কা ধাক্কি শুরু হয়। এভাবে দুই দলের পক্ষে হাতাহাতি শুরু হলে মাঠে খেলোয়ারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে থানা পুলিশ অনেক চেষ্টা করে পরিবেশ শান্ত করেন। এ ঘটনায় পুটিমারী ইউনিয়নের একজন খেলোয়ার সুজন (১৯) আহত হয়ে পড়ে। তাকে দ্রæত কিশোরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ী পাঠানো হয়।
পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সহকারী কমশিনার (ভূমি) রাকিবুজ্জামান মাগুড়া দলের সাথে কথা বলে সোমবার বিকালে ফাইনাল খেলায় অংশ গ্রহন করার জন্য আহবান জানান এবং মাগুড়া দলকে মাঠ ত্যাগ করে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে পুটিমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু সায়েম লিটনের সাথে কথা হলে তিনি সম্পূর্ন বিষয়টি অস্বীকার করেন।
মাগুড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদুল হোসেন শিহাব বলেন, খেলোয়ারদের মধ্যে কিছু ভুল বুঝাবুঝি ছিল। আমরা দুই চেয়ারম্যান বসে তা মিমাংসা করেছি।
কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়াল বলেন,মারামারির বিষয়ে আমি কোন কিছু জানি না। আর আমি কি খেলার মাঠে উপস্থিত ছিলাম? খেলার মাঠে পুলিশের উপস্থিতিতে চেয়ারম্যানদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন এর জন্য কি আমি দায়ী ?
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা বেগম ঘটনার সত্যতা স্বীকার বলেন,ঘটনাটি শুনে তাৎক্ষণিক ভাবে সহকারী কমশিনার (ভূমি) কে পাঠিয়ে দিয়েছি। তিনি বলেন, চেয়ারম্যানদের মধ্যে যদি এমন ঘটনা ঘটে তাহলে তো সত্যি দুঃখজনক। আগামী কাল এ রকম পরিস্থিতি হবে না বলে আশা করি।
Leave a Reply