আমির হোসেন, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন গাজী, দৈনিক সংগ্রামের বার্তা সম্পাদক সাদত হোসাইন, বগুড়ার সাংবাদিক আক্তারুজ্জামানসহ সকল কারাবন্দি সাংবাদিকের মুক্তি দাবি করেছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন নির্বাহী পরিষদ। একই সঙ্গে ঝালকাঠি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এবং দৈনিক যুগান্তর, চ্যানেল ২৪ ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার জেলা প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট আককাস সিকদারের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় উদ্বেগ ও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে। শনিবার (৩১ জুলাই, ২০২১) বিএফইউজে’র নির্বাহী পরিষদের সভায় এ আহবান জানানো হয়। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএফইউজে সভাপতি এম আবদুল্লাহ। সঞ্চালনা করেন মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন।
সভায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে নির্বিচারে গ্রেফতার ও হয়রানি স্বাধীন সাংবাদিকতাকে বিপন্ন করে তুলেছে বলে মত প্রকাশ করা হয়। সম্পাদক পরিষদের সংকট ও বিরোধ সংবাদমাধ্যমের জন্য উদ্বেগজনক বলেও মন্তব্য করেন বিএফইউজে নেতারা।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন(ডিইউজে)র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, বিএফইউজের সহ-সভাপতি রাশিদুল ইসলাম ও ওবায়দুর রহমান শাহীন, বিএফইউজের সহকারি মহাসচিব সহীদুল্লাহ মিয়াজী, কোষাধ্যক্ষ মুহাম্মদ খায়রুল বাশার, দফতর সম্পাদক তোফায়েল হোসেন, প্রচার সম্পাদক মাহমুদ হাসান, নির্বাহী সদস্য এইচ এম আলাউদ্দিন, জিয়াউর রহমান মধু, শামসুদ্দিন হারুন, এ কে এম মহসীন, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সরদার আবদুর রহমান, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনার সভাপতি আনিসুজ্জামান, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি এম আইউব ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান, সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজারের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন বাহারী, সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুরের সাধারণ সম্পাদক আতিউর রহমান, সাংবাদিক ইউনিয়ন ময়মনসিংহের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, কুমিল্লা জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল ভূইয়া, সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম মুকুল প্রমুখ। সভায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের শুরু থেকে সাংবাদিক সমাজ আশঙ্কার কথা প্রকাশ করে এ কালো আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু সরকার আইনটি পাশের সময় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। অথচ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যথেচ্ছভাবে এ নিপীড়নমূলক আইন ব্যবহার হচ্ছে। যার সর্বশেষ শিকার দৈনিক যুগান্তর, চ্যানেল ২৪ ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ঝালকাঠি জেলা প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট আক্কাস সিকদার। তাছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় বগুড়ায় দৈনিক বাণিজ্য প্রতিদিনের প্রতিনিধি আকতারুজ্জামানকে গত ১৭ জুলাই দিবাগত রাত ৩টায় পুলিশ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। তিনি এখনও কারান্তরীণ। এর আগে ঠাকুরগাঁও ও ফরিদপুরে পুলিশ বিভিন্ন মামলায় মধ্যরাতে বাড়িতে হানা দিয়ে সাংবাদিককে গ্রেফতার করেছে। এ ধরনের আচরণ কোন সভ্য ও গণতান্ত্রিক দেশে কল্পনা করা যায় না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যথেচ্ছ ব্যবহার স্বাধীন সাংবাদিকতাকে বিপন্ন করে তুলেছে বলে সভায় অভিমত জানানো হয়েছে। সভার আরেক প্রস্তাবে সম্পাদকদের বিরোধে উদ্বেগ জানিয়ে বলা হয়, সংবাদপত্র পরিচালনায় সম্পাদকের ভুমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই সম্পাদকদের মধ্যে বিরোধ সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠানের ওপর কালোছায়া ফেলতে পারে। এ বিষয়ে সকলকে দায়িত্বশীল ভ‚মিকা পালনের জন্য সভায় আহ্বান জানানো হয়। সভার বিএফইউজের চার যুগ পূর্তি বর্ণাঢ্য ভাবে পালনের সিদ্ধান্ত হয়। এ উপলক্ষে খ্যাতিমান সাংবাদিক ও সাবেক সাংবাদিক নেতৃবৃন্দকে সম্মাননা প্রদান, সেমিনার-সিম্পোজিয়াম আয়োজন এবং সাংবাদিকতার অতীত সোনালী ও বর্তমান অবস্থা নিয়ে তথ্যবহুল স্মারক প্রকাশের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
Leave a Reply