খাদেমুল মোরসালিন শাকীর,নীলফামারী প্রতিনিধি \
মাদরাসার কমিটিতে নাম না রাখায় সুপারের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে চেয়ারম্যানের ছেলে হাসানুর রহমান সান্টু (৩৮)। দিতে না চাওয়ায় মাদরাসা সুপারকে লাঞ্চিত করা হয়। সুপারের পক্ষে প্রতিবাদ করায় ইফতেদায়ী শাখার প্রধান শিক্ষক আবু মুসা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন কে মারপিট করেছে সান্টু গ্যাংরা। তাকে কিশোরগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকালে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাঁদখানা বুড়ির হাট এ ইউ দাখিল মাদরাসায়।
অভিযোগ ও সরেজমিন পরিদর্শনে জানা গেছে, চাঁদখানা বুড়ির হাট এ ইউ দাখিল মাদরাসায় একটি নিয়মিত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে নাম না রাখায় চাঁদখানা ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে সান্টুগ্যাংরা মাদ্রাসা সুপার আবু বক্কর সিদ্দিকের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। দাবিকৃত টাকা দিতে না চাওয়ায় তাঁর উপর অতর্কিত হামলা করে লাঞ্চিত করে। এ ঘটনায় ওই দিনই মাদরাসা সুপার সান্টুসহ ৮ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি চাঁদাবাজির অভিযোগ দায়ের করে। ইবতেদায়ী শাখা প্রধান আবু মুসা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে মাদরাসা এসে অফিসরুমে বসেছিলাম। এমন সময় হাসানুর রহমান সান্টুর সাথে ৯ থেকে ১০ জন লোক এসে অফিসরুমে সুপারের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। আমি এর প্রতিবাদ করায় তাঁরা আমাকে অফিস রুম থেকে ডেঁকে নিয়ে পাঞ্জাবীর কলার ধরে টানাহেঁচড়া করে মাদরাসা মাঠ থেকে বের করার চেষ্টা করে। এতে আমার সহকর্মীরা বাঁধা দিলে সান্টু গ্যাংরা অন্যান্য শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের সামনে গাছের ডাল দিয়ে আমার মাথায় সজোরে আঘাত করে। এসময় আমার চোখ অন্ধকার হয়ে আসে। আমার সহকর্মীরা তাদের কবল থেকে আমাকে উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। মাদরাসা সুপার আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, সান্টুগ্যাংয়ের পরিবার ১৯৮১ সালে মাদরাসা এমপিওভুক্ত হওয়ার পর থেকে ধারাবাহিক ভাবে কমিটিতে ছিলেন। এবার মাদরাসা কমিটিতে অভিভাবকরা নতুনত্ব নিয়ে এসেছে। এ কারনে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদাদাবি করে তারা। এসময় জোর করে আমার পকেট থেকে দুই হাজার টাকা বের করে নেয়।
এ ব্যাপারে প্রধান অভিযুক্ত হাসানুর রহমান সান্টুর সাথে কথা বললে তিনি চাঁদাদাবির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই শিক্ষকের সাথে শুধু কথা কাঁটাকাঁটি হয়েছে । অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই আক্কেল আলী বলেন, ঘটনাটি মুলত কমিটি নিয়ে তবে শিক্ষককে মারপিটের ঘটনা দুঃখজনক। এ ঘটনায় আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
মাদরাসার নিয়মিত কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, চেয়ারম্যানের ছেলে সান্টু বৃহস্পতিবার মাদরাসার ক্লাস চলাকালিন সময়ে ইবতেদায়ি শিক্ষককে মাঠের মাঝখানে নিয়ে মারধর করেছে। এর আগে গত মঙ্গলবার চাঁদাদাবি করে না পেয়ে মাদরাসা সুপারকেও লাঞ্চিত করে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-ই আলম সিদ্দিকীর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয়ও ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Leave a Reply