নিউজ ডেস্ক।।
নির্মান কাজ শেষ করে অবশেষে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে পটুয়াখালী বরিশাল মহাসড়কের ফোরলেনের পায়রা সেতু।
আগামীকাল ২৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালে উদ্বোধন করবেন দীর্ঘ কাঙ্খিত লেবুখালী নদীর উপর নির্মিত পায়রা সেতুটি। সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত পায়রা ফোরলেনের সেতুটির দ্বার উম্মুক্ত হলে সারা দেশের সাথে স্থাপিত হবে পটুয়াখালী জেলার নিরবিচ্ছিন্ন সড়ক নেটওয়ার্ক। কুয়াকাটা সহ পুরো দক্ষিন উপকূলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আরেক ধাপ অবদান রেখে এগিয়ে যাবে যোগাযোগ বান্ধব পায়রা সেতু। আর প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ায় চুক্তি মূল্য থেকে কমেছে ব্রিজের নির্মান ব্যয়।
পায়রা সেতু নির্মান প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল হালিম জানান, বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের লেবুখালী নদীর উপর নির্মিত ফোরলেনের ‘পায়রা সেতু অবশেষে ডানা মেলেছে। ১ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে পায়রা সেতু প্রকল্পটির কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ২৪ জুলাই। কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভলপমেন্ট এবং এ্যাপেক ফান্ড এ প্রকল্পের ৮২ ভাগ অর্থ বহন করেছে। ১ হাজার ৪৭০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৯ দশমিক ৭৬ মিটার প্রস্থের সেতুর নির্মান কাজ শেষে সেতুর উভয় পাড়ে প্রায় সাত কিলোমিটার এ্যাপ্রোচ সড়ক, প্রবেশ পথের টোল সেড প্রস্তুত। আর নদী শাসনের কাজও চলছে দ্রুত গতিতে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুস সবুর জানান, এ সেতুটি খুলে দেয়া হলে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সাথে নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগের দ্বার উন্মোচিত হবে। চট্টগ্রামের কর্নফুলী ব্রীজের আদলে নির্মিত এই ব্রীজটি ক্যাবল দিয়ে দুই পাশে সংযুক্ত করা হয়েছে। ফলে নদীর মাঝ খানে একটি মাত্র পিলার ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া খরশ্রোতা পায়রা নদীর তীর সংরক্ষনেও প্রকল্প থেকে কাজ চলমান রয়েছে। প্রথমবারের মত বসানো হয়েছে ‘ব্রীজ স্ট্রাকচার হেলথ মনিটরিং সহ প্রাকৃতিক যেকোন ক্ষতির তাৎক্ষনিক নিরুপনকরণ যন্ত্র। দেশের দীর্ঘতম দুইশ’ মিটারের স্প্যান ও একশ’ ৩০ মিটার গভীর পাইলও বসানো হয়েছে, যা পদ্মা সেতুতে ব্যবহৃত স্প্যানের চেয়েও ৫০মিটার বড়। পদ্মার পর কুয়াকাটার সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ ফেরী বিহীন নির্বিঘেœ চলাচল করা যাবে।
সেতুটি খুলে দেয়ার খবরে বেজায় খুশি যাত্রী ও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। পায়রা সমুদ্র বন্দর, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা সহ পটুয়াখালী ও বরগুনার মানুষ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সহ দেশের অর্থনীতিতে সেতুটি ব্যপক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্স এ- ইন্ডাষ্ট্রি সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, পদ্মা ও পায়রা সেতু উন্মুক্ত হয়ে গেলে দক্ষিনাঞ্চল শিল্প-বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক কর্মকা-ে এগিয়ে যাবে। অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে দক্ষিণাঞ্চল পিছিয়ে থাকার জন্য অবকাঠামোর দুর্বলতাই প্রধানত দায়ী। তিনি বলেন, পদ্মা ও পায়রা সেতু চালু হলে এই দুর্বলতা ঘুচে যাবে। পায়রা বন্দর এক অনন্য অর্থনৈতিক সম্ভাবনা সূচনা করবে। পায়রা বন্দর শুধু দক্ষিণাঞ্চল কিংবা দেশের নয়, দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে। ট্রানজিট সুবিধার আওতায় প্রতিবেশী দেশ পায়রা বন্দর ব্যবহার করতে পারবে।
২০১৩ সালের ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লেবুখালী সেতুর ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন। সেতুটি নির্মানের মধ্য দিয়ে উন্নয়ন ও অগ্রগতির দ্বার উম্মুক্ত হবে সর্ব দক্ষিনের জনপদে।
Leave a Reply