হারুন অর রশিদ
আজ আবার বৃষ্টি।
তোর সাথে ভিজতে পারলে কি মজাটাই না হতো। সেই সাথে মাছ ধরা… আহা! ভাবা যায়…?
অবশ্য, গতকাল তুমুল বৃষ্টিতে তোর সাথে ভিজে আজ আমার জ্বর এসেছে, ঠান্ডা লেগেছে। তুই-ই বল? এখন কি ওসব ভালো? মানুষ কেমন বাঁকা চোখে দেখে, পর করে দেয়; জানিস তো!!
বৃষ্টিজলে কই মাছের প্রেমিক সেজে ঘুরে বেড়ানোর একটা দারুণ উচ্ছলতা আছে! সে তো তুই জানিস! কিরে, জানিস না? আচ্ছা, না বললি…
গতকাল বৃষ্টিজলে উচ্ছল কই মাছ ধরতে গিয়ে তোর সাথে ধাক্কা লেগেছিলো বলে, তোর সেকি লজ্জা! মনে আছে? আমি জানি, নতুন বউও এখন আর ওমন লজ্জা পায় না। তখন তোকে দেখে বড্ড হাসি পাচ্ছিল আমার। তুই আরো লজ্জায় ডুববি বলে অনেক কষ্টে আমার ঠোঁটে লাগাম দিয়ে হাসির পায়ে শিঁকল পড়াতে পেরেছিলাম। তুই তখনও মাথা নীচু করে দাঁড়িয়েছিলি। আর পায়ের বুড়ো আঙুলে পুকুর কাটছিলি। আহা! সেকি অপরূপ মুগ্ধতা!
তোর লজ্জায় মাছেরাও যেনো লজ্জা পেলো…
একটা মাছও আর খুঁজে পাওয়া গেলো না প্রেমিকের আচ্ছাদনে। তখন; আমি আমার দিব্য দৃষ্টিতে দেখলাম, তুই মাছের মত সাঁতার কাটছিস আমাকে ঘিরে… বৃষ্টিরা বাসর রাতের স্বামীর মত তোর লজ্জার দুয়ার খুলছে… তুই ঘামছিস ওতো ওতো বৃষ্টি উপেক্ষা করে। আমি যেনো স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম তোর অধর বেয়ে সেই ঘাম ঝরে পড়তে!
যতবার তোরে ধরতে গেছি, তুই মাছের মত সরে সরে গেছিস খুব যতনে। সাঁতরে বেড়িয়েছিস, জল থেকে জলে… এ শহর থেকে ও শহরে…! তুই নিশ্চয় বলবি, মাছেদের আবার শহর হয় নাকি? কিন্তু, আমি জানি মাছেদেরও শহর হয়, ঘর-বাড়ি হয়, সংসার হয়, প্রেম হয়, বিচ্ছেদ হয়, বন্ধু হয়—- মাছকে মাছ না ভেবে নিজেকে, তাকে, আমাকে ভাবতেই পারিস! কিন্তু, তারপরেও যদি কেউ থাকে — তাকে ভাববি না, একটুও না! যদি ভাবিস তো হিসেবটা এলোমেলো হয়ে যাবে। দস্যুর মত তছনছ করে দিয়ে চলে যাবে অন্তরালে…!
আজ তো আমিও তোকে বৃষ্টি হয়ে ছুঁয়েছিলাম… নদী হয়ে ভাসালাম ঢেউ-এ। তুই বুঝতেই পারলি না! কিন্তু তুই তো জানিস না মহারাণী! কি অবলীলায় ছুঁয়েছি তোর শিল্পীত মুখ, চোখ, ঠোঁট, ভ্রু, অলিগলি ও সুরম্য প্রাসাদ, প্রাসাদের বাগান, বাগান বিলাস!
তুই ঘোরের মধ্যে হয়তো আমার এই কথাগুলো কোন দিনও বুঝতে চাইবি না। শুধু মনে রাখিস…. ঐ বৃষ্টি, বৃষ্টি ছিলো না— ছিলো তোর বন্ধু— আর ছিলাম আমি…!
২৫/০৯/২০২০ খ্রীঃ ( বন্ধু, তোর জন্যে এই লেখা। তোকেই উৎসর্গ তাই….)
Leave a Reply