সিয়াম মাহমুদ,
শিক্ষার্থী।
হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। বর্তমানে ফেইসবুক আসলেই অসুস্থ মস্তিষ্কের কারখানা, যা অসুস্থ মানসিকতার ভরপুর। যেখানে প্রতিনিয়ত মানসিকভাবে অসুস্থ মস্তিস্ক তথা মানুষ তৈরি হচ্ছে। এখানে, বাক স্বাধীনতার নামে চলে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ, অশ্রাব্য কটুক্তি, চরিত্র হনন, মানহানিকর কথাবার্তা, উস্কানিমূলক বক্তব্য, ধর্মের অপব্যাখা দিয়ে চলে জিহাদের ডাক।
ফেইসবুকের কমেন্ট বক্সগুলো মনে হয় যেন, ময়লার ঝুড়ি কিংবা ডাস্টবিন!
ফেইসবুক একটি সামাজিক প্লাটফর্ম , যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটি অন্যতম উদাহরণ। কিন্তু বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সুফল এর চেয়ে কুফলটাই বাংলাদেশের জনগণ ভোগ করছে।
কারণ, আজ তথ্য প্রযুক্তির সুবিধার ফলে মুহূর্তের মধ্যে বিশ্বের চারদিকে ঘটে যাওয়া ঘটনা চোখের সামনে চলে আসে।
যেখানে দেখতে পাওয়া যায়, কার শোবার ঘরে কে কি করছে?
কে কার সাথে কখন কি কথা বলেছে?
ব্যক্তিগত ভিডিও, অডিও অহরহ ফাঁস হয়েই চলেছে। আবার কারো নামে মিথ্যা ও অশ্লীল অপপ্রচার চলছে।
মিডিয়ার কারসাজির যুগে, আজ সবকিছুই সম্ভব। এখানে, বুঝা মুশকিল কোনটি সত্য ঘটনা, কোনটি গুজব কিংবা অপপ্রচার। সবকিছুই টেকনোলজির মাধ্যমে এমনভাবে সাজানো গোছানো থাকে যে, সত্যটা বুঝতে পারা দুষ্কর!
কয়েকটি ব্যাপারে অশ্লীল কথাবার্তা বেশি হয়ে থাকে-
১. রাজনৈতিক দল সম্পর্কিত নিউজ,
২. রাজনৈতিক নেতা সম্পর্কিত নিউজ,
৪. ধর্মীয় নিউজ,
৩. সেলিব্রিটি,
৫. ভারত এবং পাকিস্তান।
এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেঃ
আমরা দেখি- ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার কিংবা ধর্মীয় অবমাননার মিথ্যা ও ভুল অপপ্রচারে অন্য ধর্মের মানুষদের উপর হামলা ও নির্যাতন।
আমরা দেখি- সোশাল মিডিয়ায় স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে আবরার ফাহাদ হত্যা।
আমরা দেখি- সেলিব্রিটিদের ফেইসবুক পোস্টে তাদের মা-বাবা/পরিবারকে নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য।
আমরা দেখি- বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটুক্তি।
আমরা দেখি- মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য ও বাজে কার্টুন ভিডিও।
আমরা দেখি- মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি।
আমরা দেখি- মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের বন্ধুরাষ্ট্রদের প্রতি হিংস্রাতক মন্তব্য।
আমরা দেখি- স্কুল/কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়েদের ব্যাক্তিগত ভিডিও ফাঁস।
আমরা দেখি- টিকটক এর নামে অসামাজিক কার্যকলাপের ভিডিও।
এছাড়াও আর কতো কি……..!
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা অশালীন কথা বলার মাধ্যমে মানুষকে জ্ঞান দিতে চাই কিংবা নিজেদের পাণ্ডিত্য জাহির করতে চাই কিংবা ধর্মীয় শিক্ষা দিতে চাই, তারা কি আসলেই সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ?
-প্রশ্ন রইল আপনাদের কাছে।
কিন্তু এসবের থেকে আমরা কিভাবে আর কখন মুক্তি পাবো?
আমার ব্যাক্তিগত ডিজিটাল নিরাপত্তা কোথায়?
আমরা চাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা ফেইসবুক হোক সত্যিকারের তথ্যের ভান্ডার, মেধা বিকাশের পথ, সুস্থ ও মননশীল সুশিক্ষার ডিজিটাল চর্চার প্লাটফর্ম।
সকলেই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
Leave a Reply