শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনে আইন মন্ত্রী আনিসুল হক বে-সরকারি ভাবে নির্বাচিত কসবায় ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ আহত-৪ কসবায় এলজিইডি’র শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান আগরতলায় স্রোত আয়োজিত লোকসংস্কৃতি উৎসব কসবা প্রেসক্লাব সভাপতি’র উপর হামলার প্রতিবাদে মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সভা কসবায় চকচন্দ্রপুর হাফেজিয়া মাদ্রাসার বার্ষিক ফলাফল ঘোষণা, পুরস্কার বিতরণ ও ছবক প্রদান শ্রী অরবিন্দ কলেজের প্রথম নবীনবরণ অনুষ্ঠান আজ বছরের দীর্ঘতম রাত, আকাশে থাকবে চাঁদ বিএনপি-জামাত বিদেশীদের সাথে আঁতাত করেছে-কসবায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ১৩ দিনের জন্য ভোটের মাঠে নামছে সশস্ত্র বাহিনী
মাঠের খেলাধুলার আগ্রহ হারিয়ে মোবাইল গেইমে আসক্ত হচ্ছে শিশু-কিশোররা

মাঠের খেলাধুলার আগ্রহ হারিয়ে মোবাইল গেইমে আসক্ত হচ্ছে শিশু-কিশোররা

আমির হোসেন, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ

দুপুর গড়িয়ে বিকাল এসেছে, স্কুল-কলেজে বেজেছে ছুটির ঘণ্টা। এরপর বাড়ি ফিরে তাড়াহুড়ো করে পোশাক বদলে কিছু খেয়েই দে দৌড় মাঠে। সূর্য ডোবার আগ পর্যন্ত ফুটবল-ক্রিকেটসহ বিভিন্ন রকম খেলায় মগ্ন থাকার দিন ফুরিয়ে এসেছে এই করোনাকালে। এখন এন্ড্রয়েড মোবাইলে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস গেইমে আসক্তি বাড়ছে শিশু-কিশোরদের।

গ্রামাঞ্চলের মাঠগুলো এখন গবাদি পশুর চারণভূমি! মাঠে নয়, কিশোর-তরুণদের এখন রাস্তার মোড়ের চায়ের দোকানে কিংবা কোনো নির্জন স্থানে বসে সময় কাটাতেই বেশি দেখা যায়। অনেকে সঙ্গদোষে তলিয়ে যাচ্ছে মাদকের দুনিয়ায়। এতে বাড়ছে অপরাধপ্রবণতা। তবে মাদকাসক্তির থেকেও স্মার্টফোনে আসক্তি বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে উঠছে তরুণদের মনের বিকাশ গঠনে, চরিত্র গঠনে। প্রায় সবার হাতে শোভা পাচ্ছে স্মার্টফোন।

আগের মতো এখন আর গ্রামীণ টুর্নামেন্ট দেখা যায় না, যে টুর্নামেন্টগুলোতে নিজ গ্রামের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করত তরুণরা। শক্তি বাড়াতে জেলা, বিভাগ কিংবা রাজধানী শহরের নামি ক্লাব আর একাডেমি থেকে দুয়েকজন খেলোয়াড় ভাড়া করে নেওয়া হতো। এখন চিত্রটা পুরোপুরি উল্টো। যাও দুয়েকটি টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়, সেখানে অংশ নেওয়া দলগুলো ভাড়ার খেলোয়াড় দিয়েই একাদশ সাজায়। নিজ গ্রাম কিংবা মহল্লার খেলোয়াড় থাকে দুয়েকজন। এর কারণ একটাই, মাঠের খেলায় এখন আর তেমন আগ্রহ নেই।

ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আল মামুন খান ধলু বলেন, সাংগঠনিক কর্মকান্ড আগের মতো নেই। মাঠ পর্যায়ে তেমন সংগঠকতো এখন আর সেভাবে দেখা যায় না। পৃষ্ঠপোষকতাও মিলছে না সেভাবে। খেলাধুলায় শিশু-কিশোরদের বিকাশে এটা বিরাট অন্তরায়। দায় পরিবারেরও আছে। সন্তানের হাতে যদি ফুটবল তুলে দেওয়া না হয়, ব্যাট তুলে দেওয়া না হয়, মাঠে পাঠানোর তাগিদ যদি অভিভাবকের মধ্যে না থাকে, তা হলে তারা তো ঘরে বসে বিভিন্ন ডিভাইস নিয়েই সময় কাটাবে।

এতে শিশু-কিশোরদের স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। শিশু-কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. অসীম কুমার সাহা বলেন, ব্রেইনের যে অংশটা যে দিকে খাটাবে, ওই অংশটাই কেবল বিকশিত হবে। বাকি অংশগুলো কিন্তু আর বিকশিত হয় না। এই শিশু-কিশোরদের ক্ষেত্রেও এমনটি হচ্ছে। এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে যেমন লক্ষণ থাকে, ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসে আসক্তিদের ক্ষেত্রেও সেরকম দেখা যাচ্ছে। তাদের ব্রেইনের বিকাশ ঠিকভাবে হচ্ছে না। স্বাভাবিক জীবনযাপনে এটা বড় অন্তরায়।

তিনি আরো বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। ছেলেমেয়েরা দীর্ঘদিন ধরে আবদ্ধ অবস্থায় আছে। বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস দখল করে নিয়েছে খেলাধুলার স্থান। আগে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক খেলাধুলার আয়োজন করা হতো, এখন এগুলো বন্ধ রয়েছে। শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধিতে খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা নতুন করে বলার কিছু নেই। তাই সবারই এদিকটাকে বিশেষ নজর দেওয়া দরকার।

আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, খেলাধুলা না করা বিভিন্ন বয়সি ছেলেমেয়ের মধ্যে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যহানির শঙ্কা বাড়ছে। কয়েক বছর ধরে অনলাইননির্ভরতা বাড়ছে। করোনার সময় আরও বেড়েছে। খেলাধুলার মতো সুস্থ বিনোদনে বঞ্চিতরা প্রযুক্তিনির্ভরতায় তাদের কল্পনায় একটি কৃত্রিম জগৎ তৈরি করছে। হতাশা ধীরে ধীরে গ্রাস করছে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের। কোভিড বাস্তবতায় অভিভাবকরা সন্তানদের মাসের পর মাস চার দেয়ালের মধ্যে আবদ্ধ করে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। এ অবস্থা দীর্ঘদিন অব্যাহত থাকলে বড় ধরনের সামাজিক বিপর্যয় এড়ানো কঠিন হবে।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




raytahost-demo
© All rights reserved © 2019
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD